মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অতঃপর জুলাই গণ-অভ্যুত্থান

0
78
সৈয়দ রনো, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে শক্তি দাবিদার আওয়ামীলীগ, বিএনপি এবং জামাতকে বিপক্ষের শক্তি তকমা দিয়ে বিগত ১৬ বছর নির্বিচারে পাখির মতো গু/লি করে হ/ত্যা করেছে শেখ হাসিনা সরকার। সরকারি বাহিনী গু/ম খু/ন এবং বিনাবিচারে মানুষ হ/ত্যাই ছিল আওয়ামী সরকারের অ/বৈধ ভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার অন্যতম কৌশল। এতে করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনেকাংশে ভূলুণ্ঠিত করবার চেষ্টা করেছে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট অ/বৈধ সরকার।
উন্নয়নের নামে গণতান্ত্রিক ব্যবস্হা ধ্বং/স করেছিল আওয়ামীলীগ। তাঁরা একটি বিষয় ব্যপকভাবে মার্কেটিং করার চেষ্টা করেছেন, “বেশি উন্নয়ন, কম গণতন্ত্র “। এসব জিকির তুলে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা প্রা/চার করেছে ততকালীন অবৈধ আওয়ামীলীগ।
আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করে জনগণকে বোকা ভেবে ধোঁ/কা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের ভ্রান্ত ধারণা জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়ে কেড়ে নিয়েছিল ভোটাধিকার। মুক্তিযুদ্ধের মুল চেতনা ছিল প্রকৃত গণতন্ত্র। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের যে পতন এটা ছিল বাংলাদেশ রক্ষার জন্য জন্য এক অনিবার্য বিষয়। বিএনপি জামাত এবং তাদের সমমনা দল যারা শেখ হাসিনা সরকারের পতনের জন্য দির্ঘ ১৬ বছর সাধ্য অনুযায়ী জেল-জু/লুম উপেক্ষা করে রাজপথে লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন। তাঁর প্রতিফলন ঘটেছে ছাত্র জনতার র/ক্তাক্ত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে, শেখ হাসিনার পতনের মধ্যে দিয়ে।
আওয়ামীলীগ তাদের রাজনৈতিক নেতা কর্মী থেকে এহন সেক্টর নেই যেখানে দলীয়করণ, আত্মীয় করণের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার বন্দবস্তের জন্য অতিরিক্ত কিংবা অনৈতিক সুযোগ সুবিধা দেয়নি। প্রশাসন ছিল আওয়ামীলীগের আজ্ঞাবাহ। ভারত হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য উলঙ্গ ভাবে সমর্থন জানিয়েছে। জাতীয় পার্টি আওয়ামীলীগের গৃহপালিত দল হিসেবে অবৈধ শাষণ নামক শোষণকে বৈধতা দিয়েছে নিশ্চিত ভাবে। এসব বিষয় বাংলাদেশের স্ব চেতন মহলের সবাই জানেন।
২০২৪ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি কয়েক ভাবে বিভক্ত হয়েছে, যা এখন আর কারো আজানা বিষয় নয়। মুক্তিযুদ্ধকে শেখ হাসিনা যেমন পৈতৃক সম্প্রতি বানাতে চেয়েছিলেন, তদ্রূপ আমরা কেউ কেউ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে নিজস্ব অর্জন বলে চালিয়ে দেবার প্রচেষ্টার বিরোধিতা করছি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে দলীয় বা পৈতৃক সম্প্রতি ভাবলে কেউ মেনে নিবে না। শুধু ছাত্রদের অর্জন বলবেও সঠিক মুল্যায়ন করা হবে না বলে আমার বিশ্বাস। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত ছাত্ররা এনসিপি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, আমি শুরুতে অভিনন্দন জানিয়েছি, আজ আবার নতুন করে অভিনন্দন জানাচ্ছি। জনাব নাহিদ ইসলাম, মাননীয় উপদেষ্টা ছিলেন, তিনি উপদেষ্টা থেকে পদত্যাগ করে রাজনৈতিক দলের কান্ডারী হওয়াটাই প্রমান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যাঁরা আজীবন ক্ষমতায় রাখার জন্য (ফেসবুকে) বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ন্যারেটিভ তৈরি করছেন? তাঁরা কি একবারও ভেবেছেন শেখ হাসিনার মতো দেশের জনগণের ভোটাধিকার হরণ করতে চাইছেন। শেখ হাসিনা উন্নয়নের জিকির তুলে গণতন্ত্র হরণ করেছেন, আপনারা অনেকেই সংস্কার এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বীর শহীদদের বিচারকে গণতন্ত্রের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছেন।
বিএনপি চাঁ/দাবাজি, দখলবাজী করছে, বলে যে সকল পোস্ট ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে তা কিয়দংশে সত্য। কিছুটা সত্য না হলে বিএনপি দেদারসে তাদের নেতাকর্মীদের বহিষ্কারই বা কেন করবে। বহিষ্কার থেকে প্রমান হয়, বিএনপি কিছুটা দায়ী। প্রশ্ন হলো : এসব চাঁদাবাজ ও দখল বাজদের আইনের আওতায় আনা কার দায়িত্ব? সরকার যেহেতু গ্রেফতার করছে না কাজেই এটা বর্তমান সরকার ব্যর্থতা নয়কি?
তবে বিএনপির চরিত্র হননের জন্য তিলকে তাল বানিয়ে পোস্ট করা হচ্ছে। ফেসবুক এখন প্রপাগাণ্ডা ছড়ানোর মেশিনে রূপান্তরিত হয়েছে। যতোদিন পর্যন্ত বিনা ভোটে ৫ বছর, দশবছর, আজীবন ড. প্রফেসর ইউনুস মহোদয় ক্ষমতায় থাকুন এই পোস্ট গুলো প্রমান করে, ভোট দিলে এখনো বিজয়ী হবেন।
আমাদের মনে রাখা খুব জরুরি এই সরকারের সকল উপদেষ্টাদের আজীবন ক্ষমতায় বসিয়ে বিনা ভোটের রাজত্ব কায়েম করা কিন্তু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ছিলো না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাহাড় সমান গাফিলতি থাকবে সরকার সফল হবে এরূপ ভাবার কোনো কারণ নেই। সরকারের ৮ মাস দেখেছি সংস্কার কতোটুকু হয়েছে ভাবুন, কতোটুকু হওয়া যৌক্তিক সেটাও ভাবুন? দেশটা আমাদের সবার, কাজেই দেশের সার্থে, জনগণের সার্থ আগে বিবেচনা করতে হবে। তবে পারভেজ হ/ত্যাকারীরা গ্রেফতার হবে না এটা যেমন আমরা প্রত্যাশা করি না। ভারতের দালালরা এখনো সরকারের বিভিন্ন মহলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে এটাও কাম্য নয়। সংস্কার নামে আওয়ামীলীগকে পুর্নবাসনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে কি না, সেটা ভেবে দেখা উচিত নয় কি?……… ( চলবে)
আলোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here