মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম:
৫ আগস্ট স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়ন করার পর থেকে তথাকথিত বন্ধু রাষ্ট্র ভারত, বাংলাদেশ নিয়ে একের পর এক ভুয়া খবর ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশের ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পরে ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে এক ধরনের “যুদ্ধং দেহি” মনোভাব দেখা দিয়েছে। তাদের এই যুদ্ধং দেহি মনোভাব যতটা না চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জন্য তার থেকে কয়েকগুণ বেশি স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার জন্য।
ভারতীয় মিডিয়া প্রচার করে বেড়াচ্ছে “হাজার হাজার হিন্দুকে বাংলাদেশে হত্যা করা হচ্ছে, হিন্দু নারীদের হত্যা করা হচ্ছে।” প্রকৃতপক্ষে এমন কিছুই বাংলাদেশে হয়নি বলে সাক্ষ্য দিচ্ছে এদেশের সাধারণ হিন্দুরা।
এক সময় ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ আর ভারতের সুসম্পর্ক নিয়ে অনেক খবর প্রকাশিত হত। কিন্তু ৫ই আগস্টের পর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং সরকার বাংলাদেশ নিয়ে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করেছে। ভারতের এমন পল্টিবাজ আচরণ সম্পর্কে বিবিসি নিউজ থেকে জানতে পারি, পুণের এমআইটি এডিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্চিত পাল বলেছেন, ” ভারতের মিডিয়া এর আগে যেভাবে ভারত বন্ধু শেখ হাসিনার প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন দেখিয়েছে, ঠিক সেই পথেই অধিকাংশ মিডিয়া হাসিনা সরকারের পতনে মুহাম্মদ ইউনুস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সবর হয়েছে। কারণ তারা মনে করছে, বাংলাদেশের এই সরকার ভারতের বর্তমান শাসকদলের বিরোধী।
তিনি আরও বলেন, “২০২১ সালে বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর আক্রমণ নিয়ে ভারতের মিডিয়া এতটা উচ্চগ্রামে খবর করেনি। কারণ তখন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ছিলেন। আর হাসিনা ছিলেন মোদী ঘনিষ্ঠ। এখন পরিবর্তন পরিস্থিতিতে ভারতের সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা বদলিয়েছে।
বিবিসি’র এই নিউজে আরও উল্লেখ করা হয়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পরে গত দেড় সপ্তাহ ধরে পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরায় যতগুলো বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে, সেখানে হিন্দুত্ববাদী নেতা-নেত্রীদের মুখে একটা কথা বারবার শোনা গেছে যে, হিন্দুরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হন, তাহলে ভারতেও একই পরিস্থিতি হবে।”
প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, “ভারতের ৪৯ গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া খবর ছড়িয়েছে। প্রথম আলোর তথ্য অনুযায়ী, ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যমে অন্তত ১৩টি ভুয়া খবর প্রচারিত হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলা সর্বাধিক ৫টি গুজব প্রচার করেছে বলে জানিয়েছে রিউমার স্ক্যানার। এরপর রয়েছে হিন্দুস্থান টাইম, জি নিউজ ও লাইভ মিন্ট যারা প্রত্যেকে অন্তত ৩টি করে গুজব প্রকাশ করেছে।
এ ছাড়া রিপাবলিক, ইন্ডিয়া টুডে, এবিপি আনন্দ ও আজতক অন্তত দুটি করে গুজব প্রচার করেছে।
প্রথম আলোর তথ্য অনুযায়ী ভারতীয় মিডিয়ার ভুয়া খবর ও গুজবের মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তার নানে ভুয়া খোলাচিঠি, মুসলিম ব্যক্তির নিখোঁজ পুত্রের সন্ধানে মানববন্ধন করার ভিডিওকে হিন্দু ব্যক্তির দাবিতে মিথ্যা প্রচার, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুসের আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার ভুয়া খবর। বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভিত্তিহীন দাবি এবং ট্রাম্পের বিজয়ের পর ড. ইউনুসের ফ্রান্সে পালিয়ে যাওয়ার ভুয়া দাবি। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া ভুয়া খবর ও গুজবের মধ্যে আরও রয়েছে পাকিস্তানি জাহাজের মাধ্যমে অস্ত্র আনার মিথ্যা দাবি। চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে চিন্ময় দাসের আইনজীবী হিসেবে প্রচার, বাংলাদেশ ভ্রমণ নিয়ে যুক্তরাজ্যের জারি করা একটি ভ্রমণ সতর্কতা নিয়ে বিভ্রান্তিকর খবর প্রকাশ। ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে বিমানবাহিনী চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় চিকেন নেকের কাছে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানঘাঁটি নির্মাণ করবে। ভারতের প্রতিমা বিসর্জনের ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে বাংলাদেশের মুসলিমদের হামলায় হিন্দু মন্দিরে প্রতিম ভাঙচুর করা হয়েছে।
আমরা যদি বাংলাদেশের কথা বাদ দেই, তাহলেও ভারত হচ্ছে ভুয়া তথ্য প্রচার করা তথ্যের মধ্যে প্রথম। এ বছরের মার্চ মাসে GLOBAL RISK REPORT 2024 অনুযায়ী ভারত হচ্ছে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো দেশের মধ্যে শীর্ষে।
যে দেশ পৃথিবীর মধ্যে মিথ্যা ও ভুল তথ্য ছড়ানোর মধ্যে প্রথম, সেই দেশের কাছ থেকে আসলে আমরা সত্য প্রকাশের আশা করতেও পারি না। কারণ তাদের ভিত্তিই টিকে আছে সম্পূর্ণ মিথ্যার উপর।
ভারতীয় মিডিয়া প্রচার করে বেড়াচ্ছে “হাজার হাজার হিন্দুকে বাংলাদেশে হত্যা করা হচ্ছে, হিন্দু নারীদের হত্যা করা হচ্ছে।” প্রকৃতপক্ষে এমন কিছুই বাংলাদেশে হয়নি বলে সাক্ষ্য দিচ্ছে এদেশের সাধারণ হিন্দুরা।
এক সময় ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ আর ভারতের সুসম্পর্ক নিয়ে অনেক খবর প্রকাশিত হত। কিন্তু ৫ই আগস্টের পর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং সরকার বাংলাদেশ নিয়ে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করেছে। ভারতের এমন পল্টিবাজ আচরণ সম্পর্কে বিবিসি নিউজ থেকে জানতে পারি, পুণের এমআইটি এডিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্চিত পাল বলেছেন, ” ভারতের মিডিয়া এর আগে যেভাবে ভারত বন্ধু শেখ হাসিনার প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন দেখিয়েছে, ঠিক সেই পথেই অধিকাংশ মিডিয়া হাসিনা সরকারের পতনে মুহাম্মদ ইউনুস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সবর হয়েছে। কারণ তারা মনে করছে, বাংলাদেশের এই সরকার ভারতের বর্তমান শাসকদলের বিরোধী।
তিনি আরও বলেন, “২০২১ সালে বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর আক্রমণ নিয়ে ভারতের মিডিয়া এতটা উচ্চগ্রামে খবর করেনি। কারণ তখন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ছিলেন। আর হাসিনা ছিলেন মোদী ঘনিষ্ঠ। এখন পরিবর্তন পরিস্থিতিতে ভারতের সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা বদলিয়েছে।
বিবিসি’র এই নিউজে আরও উল্লেখ করা হয়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পরে গত দেড় সপ্তাহ ধরে পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরায় যতগুলো বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে, সেখানে হিন্দুত্ববাদী নেতা-নেত্রীদের মুখে একটা কথা বারবার শোনা গেছে যে, হিন্দুরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হন, তাহলে ভারতেও একই পরিস্থিতি হবে।”
প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, “ভারতের ৪৯ গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া খবর ছড়িয়েছে। প্রথম আলোর তথ্য অনুযায়ী, ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যমে অন্তত ১৩টি ভুয়া খবর প্রচারিত হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলা সর্বাধিক ৫টি গুজব প্রচার করেছে বলে জানিয়েছে রিউমার স্ক্যানার। এরপর রয়েছে হিন্দুস্থান টাইম, জি নিউজ ও লাইভ মিন্ট যারা প্রত্যেকে অন্তত ৩টি করে গুজব প্রকাশ করেছে।
এ ছাড়া রিপাবলিক, ইন্ডিয়া টুডে, এবিপি আনন্দ ও আজতক অন্তত দুটি করে গুজব প্রচার করেছে।
প্রথম আলোর তথ্য অনুযায়ী ভারতীয় মিডিয়ার ভুয়া খবর ও গুজবের মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তার নানে ভুয়া খোলাচিঠি, মুসলিম ব্যক্তির নিখোঁজ পুত্রের সন্ধানে মানববন্ধন করার ভিডিওকে হিন্দু ব্যক্তির দাবিতে মিথ্যা প্রচার, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুসের আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার ভুয়া খবর। বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভিত্তিহীন দাবি এবং ট্রাম্পের বিজয়ের পর ড. ইউনুসের ফ্রান্সে পালিয়ে যাওয়ার ভুয়া দাবি। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া ভুয়া খবর ও গুজবের মধ্যে আরও রয়েছে পাকিস্তানি জাহাজের মাধ্যমে অস্ত্র আনার মিথ্যা দাবি। চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে চিন্ময় দাসের আইনজীবী হিসেবে প্রচার, বাংলাদেশ ভ্রমণ নিয়ে যুক্তরাজ্যের জারি করা একটি ভ্রমণ সতর্কতা নিয়ে বিভ্রান্তিকর খবর প্রকাশ। ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে বিমানবাহিনী চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় চিকেন নেকের কাছে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানঘাঁটি নির্মাণ করবে। ভারতের প্রতিমা বিসর্জনের ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে বাংলাদেশের মুসলিমদের হামলায় হিন্দু মন্দিরে প্রতিম ভাঙচুর করা হয়েছে।
আমরা যদি বাংলাদেশের কথা বাদ দেই, তাহলেও ভারত হচ্ছে ভুয়া তথ্য প্রচার করা তথ্যের মধ্যে প্রথম। এ বছরের মার্চ মাসে GLOBAL RISK REPORT 2024 অনুযায়ী ভারত হচ্ছে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো দেশের মধ্যে শীর্ষে।
যে দেশ পৃথিবীর মধ্যে মিথ্যা ও ভুল তথ্য ছড়ানোর মধ্যে প্রথম, সেই দেশের কাছ থেকে আসলে আমরা সত্য প্রকাশের আশা করতেও পারি না। কারণ তাদের ভিত্তিই টিকে আছে সম্পূর্ণ মিথ্যার উপর।
আলোকিত প্রতিদিন/০৮ ডিসেম্বর-২৪/মওম