নিজস্ব প্রতিবেদক,
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হামলা-সংঘর্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে ১ হাজার ১১৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে তিন পুলিশ সদস্যের। গুরুতর আহত ২৭৭ জনকে আনা হয়েছিল রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালেও। তাদের মধ্যে যে ৮৩ জনকে ভর্তি করে নেওয়া হয়েছিল, তাদের অধিকাংশই মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত ছিল। কারও মাথায় ৬০ থেকে ৩০টি পর্যন্ত সেলাই লেগেছে। কারও খুলিতে দেখা দিয়েছে ইনফেকশন। কারও ভেঙেছে হাত, কারও পুরো শরীরজুড়েই ক্ষতচিহ্ন। চিকিৎসকরা প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের সুস্থ করতে। গতকাল পর্যন্ত ভর্তি ছিলেন ৪১ জন। ৫ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে।
১৮ জুলাই সকাল থেকেই রামপুরা এলাকাজুড়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা চলছিল তখন। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত ফোর্স হিসেবে খিলগাঁও থানা থেকে আমিনুলসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে আনা হয় রামপুরায় টিভি সেন্টারে। টিভি সেন্টারের কাছে ডিউটি ছিল তাদের। আনুমানিক দুপুর ২টার দিকে বাড্ডা, বনশ্রী ও ওয়াপদা রোডসহ তিন দিক থেকে ইট, ক্রিকেট ব্যাট-স্টাম্প, রড ও লাঠি নিয়ে তাদের ঘেরাও করে বেধড়ক পোটাতে থাকে আন্দোলনকারীরা আমাদের।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা সেফ সাইডে চলে গেলেও আমিনুল ইসলাম ও তার এক সহকর্মী পড়ে যান সেখানে। ওই অবস্থাতেই তাদের ওপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। মাথা টার্গেট করে ইট, পাথর নিক্ষেপ করা ছাড়াও হেলমেট, রড ও লাঠি দিয়ে অনবরত তাদের পোটানো হয়। একপর্যায়ে মৃত ভেবে দুজনকেই রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা।
সংজ্ঞা ফিরে পেলে বুঝতে পারেন হাতিরঝিল এলাকার একটি ভবনের গ্যারেজে আছেন তিনি। জানতে পারেন, পথচারীরা তাকে এখানে ফেলে রেখে গেছেন। এভাবে ৩ ঘণ্টার মতো ওই ভবনে পড়ে ছিলেন তিনি। বিকালে খিলগাঁও থানা থেকে পাঠানো এক সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তাকে আনা হয় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে। চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের পর তার মাথায় ৬০টি সেলাই দিয়েছেন তখন। ভেঙেছে হাত; পুরো শরীর থেঁতলানো। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন আমিনুল ইসলাম।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি