এম এইচ চৌধুরী:
২০০৯ সাল থেকে প্রস্তাবিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ২০১৮ সালে থেকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হাতিয়ে নেওয়া কোটি কোটি টাকায় আলিশান জীবন যাপনে ব্যস্ত স্ব ঘোষিত অধ্যক্ষ তৌফিকুর রহমান চৌধুরী প্রাইজ ও তার সহধর্মিণী (নকল সার্টিফিকেটধারী) প্রাইমারি শাখার প্রধান শিক্ষিকা ফারজানা আক্তার রঞ্জু। সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ শিরোনামে দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনে নিউজ প্রকাশিত হলে প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বহু ভুক্তভোগী। তাদের দেওয়া তথ্য মতে, মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ,(পরবর্তী নাম পরিবর্তন করে) মুক্তিযোদ্ধা কলেজে পাঠদানের অনুমতি পত্র দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে নভোটাচ হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড এর নির্মাণধীন রাজ প্যালেসের বহুতল ভবনের ২য় ফ্লোরে ১টি ফ্ল্যাট,এবং ৩য় ফ্লোরে ১টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন যার আনুমানিক মূল্য ৭০ লক্ষ্য টাকা। ফ্ল্যাট সংক্রান্ত বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানের একজন পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অকপটে স্বীকার করে বলেন তিনি শুধু ফ্ল্যাটের মালিক নন রাজ প্যালেসে যারা ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। তৌফিকুর রহমান চৌধুরী,স্ত্রী ফারজানা আক্তার রঞ্জু ও মেয়ের নামে রয়েছে বেশ কয়েকটি এফডিআর। শহরের সোনারপট্রি এলাকায় প্রচলিত রয়েছে রাণী ফারজানা আক্তার রঞ্জু নামে, সোনারপট্রি লাইনে নামকরা বেশ কয়েকজন দোকানদার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ টি দোকান থেকে বেশকিছু স্বর্ণ ক্রয় করেছেন তিনি। স্কুল অ্যান্ড কলেজ করার কথা বলে নগদ টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়া আগ্রহী শিক্ষকদের কাছ থেকে জমি লিখে নিয়েছেন স্ত্রী ফারজানা আক্তার রঞ্জুর নামে। এতে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সাং কোটালপুর পোস্ট পন্ডিতপুর- গোবিন্দগঞ্জ – গাইবান্ধা। জয়পুরহাট সদরের করই মৌজায় ১৯ শতক,হিচমী মৌজায় ৪২ শতক ও ১২ শতক, জয়পুর মৌজায় ০৬ শতকসহ মোট ৭৯শতক জায়গা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক তানজিনা আক্তারের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৪২ শতক জমি বাজার মুল্য কোটি টাকারউর্ধ্বে নিজ ও তার স্বামী মোস্তাসিন বারী চাকরির জন্য ৪৬ লক্ষ্য টাকায় বিক্রির কথা হলেও বায়না নামা করেন ৪২ লক্ষ্য টাকায়। তরিকুল ইসলাম বাঁধনের পৈতৃক সম্পত্তি ১২ শতকের বাজার মুল্য ১৮ লক্ষ্য টাকা হলেও বায়না নামায় ২ লক্ষ্য টাকা দেখিয়ে কাগজ পত্র তৈরি করেন তৌফিক ও ফারজানা। ফাইনাল ভাবে রেজিস্ট্রিরির সময় বাঁধন এবং তানজিনা’কে নাম মাত্র কিছু টাকা দিলেও অদ্যাবধি বাকি টাকা এবং চাকরি কোনটায় দেয়নি তথাকথিত অধ্যক্ষ গ্রহিতা তৌফিকুর রহমান চৌধুরী প্রাইজ এর স্ত্রী ফারজানা আক্তার রঞ্জু। অথচ সাধারণ মানুষ’কে ঠকিয়ে প্রতারণার টাকায় গড়ে তুলেছেন,বিশাল সিন্ডিকেট। তানজিনা আক্তার (প্রভাষক বাংলা) মোস্তাসিন বারী (প্রভাষক ব্যবস্থাপনা)কে মুক্তিযোদ্ধা স্কয়ার প্রকল্প ২০০৯ বগুড়ার ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ১০ লক্ষ্য টাকা হাতিয়ে নেন তৌফিকুর রহমান চৌধুরী প্রাইজ। গত ২২/০৮/২৩ইং তারিখে অর্থ আত্মসাৎ এর নিউজ প্রকাশিত হলে ২৪/০৮/২৩ইং দুপুর বেলা ভুক্তভোগী কহিনুর আক্তারের বড় ভাই মোঃ হামিদুল ইসলাম (শিক্ষক শিবগঞ্জ সরকারি এমএইচ কলেজ)এর জয়পুরহাট পৌরসভাস্থ শ্বশুরালয়ে স্বদল বলে হামলা চালায়। এতে নেতৃত্ব দেন, তৌফিকুর রহমান চৌধুরী প্রাইজ,তার স্ত্রী ফারজানা আক্তার রঞ্জু, মোঃ রেজওয়ান শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পৌরসভার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মোঃ আবু নাহিদ (নাহিদ হোসেন) সহ প্রায়ই ১০/১৫ জন লোক। ভুক্তভোগী শিক্ষকদের মধ্যে কয়েকজনকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক সাদা কাগজে সাক্ষর নিয়ে পরবর্তী তাদের থানায় অভিযোগ করান প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে। টাকা দিয়ে হয়রানির শিকার হওয়া আব্দুর রহমান বলেন,গত কয়েকদিন আগে চাকরি বাবদ পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে আমাকে বাসায় ডেকে নিয়ে গিয়ে তৌফিক, তার স্ত্রী ফারজানা আক্তার, মাদক ব্যবসায়ী নাহিদ সহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা দিয়ে জেল পাঠানোর হুমকি দেয়। তরিকুল ইসলাম বাঁধন বলেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে পৈতৃক সম্পত্তি লিখে নিয়েছে প্রতারক তৌফিক তার স্ত্রীর নামে, তাদের বিরুদ্ধে নিউজ প্রকাশিত হলে আমার পরিবার’কে উকিল নোটিশ দিয়েছেন তাদেরকে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য, আমার পাওনা টাকা ও চাকরি তো বুঝিয়ে দিতে পারেনি তাহলে কিসের জন্য উকিল নোটিশ পাঠালো। এখন চাকরিও হয়নি টাকাও পাচ্ছি না,টাকা চাইতে গেলে নারী নির্যাতনের মামলার হুমকি দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। হয়রানির শিকার হয়ে প্রতারকের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ পাঠানো হলে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় দূর্নীতির নিউজ প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় ১/ মোঃ আব্দুর রহমান,২/ তরিকুল ইসলাম বাঁধন, ৩/মোঃ হামিদুল ইসলাম,৪/ কহিনুর আক্তার, ৫/কামরুন্নাহার সহ বেশ কয়েকজন’কে বিবাদী করে সাধারণ ডায়রী করেন তৌফিকুর রহমান চৌধুরী প্রাইজ। অপর দিকে ভুক্তভোগীরা গত২৪/০৮/২০২৩ইং তারিখে সভাপতি জিতেন্দ্র নাথ মন্ডল সহ জেলা পুলিশ সুপার জয়পুরহাট বরাবর অভিযোগ করার জন্য লিখিত অভিযোগ পত্র নিয়ে পুলিশ সুপার জয়পুরহাট এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ডিবির ওসিকে সিন করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠান। তৎমধ্যে তদন্ত চলাকালীন অবস্থায় গত ২৪/০৮/২৩ইং তারিখে সদর থানার ওসি তদন্ত প্রতারকের পক্ষে গিয়ে ভুক্তভোগী ৫ জনের বিরুদ্ধে জিডি নেন। পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা থানায় গিয়ে সরাসরি তদন্ত ওসির সাথে কথা বলে ৩জন জিডি করতে চাইলে তিনি ১জনের জিডি গ্রহণ করে বাকি ২জনের জিডি একই দিনে একই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে নেওয়া যাবেনা বলে থানা থেকে বাহির হয়ে যেতে বলেন। পরবর্তী সময়ে ওসি তদন্ত গোলাম সারোওয়ার হোসেন ভুক্তভোগী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর সভাপতি জিতেন্দ্র নাথ মন্ডল’কে তৌফিক ও তার স্ত্রী ফারজানা আক্তারের মাধ্যমে জয়পুরহাট সদর থানায় নিয়ে এসে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ৩০০/- টাকার নন জুডিশিয়াল খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে অধ্যক্ষ তৌফিকুর রহমানের হাতে তুলে দিলে চতুর অধ্যক্ষ তার সকল অপকর্ম আর্থিক লেনদেন, হিসাব নিকাশ, নিয়োগ বাণিজ্য সবকিছু সভাপতির উপর চাপিয়ে ষ্ট্যাম্পে লিখে পূনরায় তদন্ত ওসি’র হাতে দিলে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত কোহিনূর আক্তারের বড় ভাই মোঃ হামিদুল ইসলাম’কে ফোন করে মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে হুমকি দিয়ে বলেন, আপনারা সবাই অধ্যক্ষ তৌফিকুর রহমান চৌধুরী প্রাইজ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছেন। সভাপতি থানায় এসে সবকিছু নিজ দায়িত্ব নিয়ে ষ্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে গেছে, আপনি এসে তাদের জিডি ও ষ্ট্যাম্পের ফটোকপি নিয়ে যান। ওসি তদন্ত গোলাম সরওয়ার হোসেন এর সাথে কথা না বাড়িয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা জিতেন্দ্র নাথ মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছিলাম নরপশুদের হাত থেকে বাঁচতে, এখন নিজই পড়েছি সেই প্রতারক নরপশুর হাতে। যাদের হাতে মুক্তিযোদ্ধারা সবচেয়ে বেশি সন্মান পাওয়ার কথা তাদের হাতেই লাঞ্ছিত হচ্ছি পদে পদে। একজন পুলিশ কর্মকর্তা যদি প্রতারকের পক্ষে গিয়ে কাজ করে তাহলে সাধারণ মানুষের আস্তা কোথায় বলে আক্ষেপের সুরে জানান। জয়পুরহাট সদর থানার ওসি তদন্ত গোলাম সরওয়ারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমি আমার অবস্থান থেকে চেষ্টা করেছি উভয় পক্ষ’কে নিয়ে বসার জন্য। সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিতেন্দ্র নাথ মন্ডল কে থানায় নিয়ে এসে তিনশত টাকার নন জুডিশিয়াল খালি ষ্ট্যাম্পে সাক্ষর নেওয়ার বিষয় তিনি অস্বীকার করে বলেন যারা আপনাকে(সাংবাদিক)”কে তথ্য দিয়েছে তাদের কাছে জানুন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরক্ষণে এটিএন বাংলার জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি’কে দিয়ে নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করেন। জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে ভুক্তভোগীরা আমার কাছে লিখিত ভাবে কোন অভিযোগ করেনি, যদি একজন ভুক্তভোগীও আমার কাছে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসে অপরাধী যেই হোক সাথে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন।
আলোকিত প্রতিদিন/০২ সেপ্টেম্বর ২৩/মওম
- Advertisement -