সবুজ সরকারঃ
দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে অবিচল লক্ষ্য, অদম্য মনোবল, প্রবল ইচ্ছা ও দৃঢ়সংকল্পকে সঙ্গী করে কৃষ্ণা রানী সরকার পারি দিয়েছে স্বপ্নপূরণের পথ। হয়ে উঠেন ফুটবলার। কিন্তু পেরিয়ে আসতে হয়েছে সমাজের নানা প্রতিকূলতা এবং প্রতিবন্ধকতা। এসব জয় করে যে তার কাছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার প্রত্যাশা তো থাকবেই।
এক মময় যারা তার ফুটবল খেলাকে সমালোচনা করতো, তারাই এখন প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আর গোপালপুর উপজেলা প্রশাসন দিবে সংবর্ধনা তার মাকে দেয়া হবে রত্নগর্ভার সম্মান।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথমবার শিরোপা জিতল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। সোমবার নেপালের কাঠমুন্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে জোড়া গোল করা বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামের বাসুদেব চন্দ্র সরকার ও নমিতা রানী সরকার দম্পত্তির মেয়ে।
কৃষ্ণার গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় জয়োল্লাস। ছোট-বড় সবার মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার। নিভৃত পল্লী গ্রামের সাধারণ মানুষের মুখে মুখে শুধু ফুটবল খেলার খবর। সবাই গর্ব করে বলে বেড়াচ্ছেন, তিন গোলের মধ্যে ২ গোলই করেছে আমাদের কৃষ্ণা।
তবে বাড়িতে লোডশেডিং থাকায় তার মা নমিতা রানী সরকার মেয়ের খেলা দেখতে পারেননি। বাবা খেলা দেখেছেন অন্য গ্রামে গিয়ে।
বোনের ভালো খেলার জন্য ভাই পলাশ সারা দিন উপবাস ছিলেন। কৃষ্ণার মা নমিতা রানী সরকার জানান, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় খেলা দেখতে পারিনি। খেলা শেষে ছেলের মোবাইল ফোনে জয়ের কথা জেনে খুবই আনন্দিত হয়েছি। আমার মেয়ের ফুটবল খেলা নিয়ে যারা একসময় কটাক্ষ করত, তারাই এখন অভিনন্দন জানাচ্ছে। এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ’
কৃষ্ণার বাবা বাসুদেব সরকার জানান, ‘বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় পাশের গ্রামে গিয়ে খেলা দেখে দারুণ খুশি হয়েছি। এলাকার মানুষ খেলা উপভোগ করেছে। অনেকেই আনন্দে শুভেচ্ছা জানাতে আসছে। ’
গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ মল্লিক জানান ‘কৃষ্ণা এখন বাংলাদেশের গর্ব। বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমে তার উত্থান শুরু। দেশে ফেরার পর আমরা তাকে সংবর্ধনা দেব। কৃষ্ণার মাকে রত্মগর্ভা সম্মাননা দিয়েছি। ’
- Advertisement -