সংবাদদাতা, গাইবান্ধাঃ গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। ফলে বন্যা কবলিত মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। বানভাসি মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার নৌকা নিয়ে উচু স্থান থেকে সংগ্রহ করছে। দফায় দফায় নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে বানভাসি মানুষ পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে। মানুষ ও পশু একই সাথে রাত কাটাচ্ছে। বন্যায় পানিতে মানুষের ঘরবাড়ী দীর্ঘদিন ডুবে থাকার কারণে আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচতে হচ্ছে বন্যা কবলিতদের। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার ফলে নতুন করে আরও তিন উপজেলায় বন্যার পানি আঘাত হানতে শুরু করেছে। সাদুল্লাপুরের ঘাঘট নদী, পলাশবাড়ীর বাঙ্গালী নদী ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন এসব উপজেলার ঘরবাড়ি ও ফসলী জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। গোবিন্দগঞ্জের করতোয়া নদীর পানির চাপে বালুয়া ও বিষপুকুর বাঁধ দুটি হুমকির মুখে পড়েছে। গাইবান্ধার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতির হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন বলেন, বন্যার্ত মানুষদের দুর্ভোগ মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যসেবায় মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে। গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার শৌচাগার পানিতে ডুবে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকায় পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। নৌকা বা কলার ভেলার উপর থেকে উন্মুক্ত পরিবেশে প্রাকৃতিক কাজ সারতে হচ্ছে। গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রেজওয়ান হোসাইন বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) পর্যন্ত চার উপজেলায় ৮৩টি পায়খানা নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো বাঁধ ও উঁচু জায়গায় বসানো হয়। গাইবান্ধার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দুর্বল হয়ে পড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে মানুষ। সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলায় বাঁধের একাধিক স্থানে বালির বস্তা ও মাটি ফেলে কোনরকমে তা রক্ষা করা হয়। গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা তীরের ৭৮ কিলোমিটার বাঁধসহ ২৪০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে। নিয়মিত সংস্কারের অভাবে সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ি ও সাদুল্লাপুর উপজেলার বাঁধগুলো বেহাল অবস্থা।
আলোকিত প্রতিদিন/২৪ জুলাই’২০/এসএএইচ