::নিজস্ব প্রতিবেদক::
বিভিন্ন সময়ে মামলার আসামী চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীন নাজিরহাট বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নতুন করে নানা অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষাজীবনে এসএসসি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনে হাতেনাতে যাকে বহিষ্কারও হতে হয়েছিল এক সময়। আবার নানা কারণে অভিযুক্ত হয়ে তাকে উঠতেও হয়েছে স্থানীয় শালিশীর কাঠগড়ায়। যদিও ‘এ সবই মিথ্যে হওয়ায় কোন অভিযোগই টেকেনি’ বলে জানান অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম। আর অভিযোগসূত্রে জানা যায়, ‘টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করেই সব অপকর্ম ঢেকে দিয়ে দাপটের সঙ্গে চলেন’ তিনি। এমন একজন ব্যক্তির কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অনেকেই ‘ভয়ে ওই স্কুলে মেয়েকে দিতে চান না’ বলেও করেছেন মন্তব্য। শিক্ষাঙ্গনকে আতঙ্কমুক্ত করতে সব কিছু খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন তারা।
অভিযোগে বলা হয়, মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম ১৯৯২ সালে কুমিল্লা বোর্ডের নজিরহাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার সময় নকল করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ায় বহিষ্কার হন। পরে বহিষ্কারকরী এসি ল্যান্ডের সামনে প্রবেশপত্র ছেঁড়া ও শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। তবে পরের বছরই দাঁদ মারা (নারায়ণ হাট) উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিশেষ উপায়ে এসএসসিতে অংশ নেন এবং উত্তীর্ণ হন। এরপর এইচএসসি পাসও করেন। পরে তিনি আজীম নগর রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা পেশায় যোগ দেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, শিক্ষক তৌহিদুল আলমের নামে একাধিক মামলাও রয়েছে। এছাড়া আজীমনগর রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষাকতায় থাকাকালীন অশালীন আচরণ ও বাসায় ছাত্রী ডেকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বহিষ্কারও হন। পরে নিকট আত্মীয়ের প্রভাব খাটিয়ে নজির হাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। সেখানেও এমন কর্মকাণ্ড চালালে বহুবার শালিশী হয়। তবে প্রভাবশালী এই শিক্ষক বিশেষ প্রক্রিয়ায় সবাইকে ম্যানেজ করে মুক্ত হয়ে যান। তার নামে ফটিকছড়ি থানায় জিআর মামলা ৪৮/৯৫, নন জিআর মামলা- ৩৯/৩৫ ছাড়াও রয়েছে একাধিক জিডি।
নকল করতে গিয়ে বহিষ্কার প্রসঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম বলেন, ‘সে সময় নকলের হিড়িক চলতো। আমি ক্লাসের সেকেন্ড বয় ছিলাম। কিন্তু পরীক্ষার সময় কেউ নকল আমার পায়ের কাছে ফেলে রাখে। ম্যাজিস্ট্রেট পেছন থেকে এসে আমার খাতা নিয়ে নেন এবং আমার পায়ের কাছ থেকে নকল তুলে সেটাসহ বহিস্কার করেন। অথচ আমি নকল করিনি।’ শিক্ষাকতা পেশায় থাকাকালে নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি সুনামের সঙ্গে দীর্ঘ সাড়ে ২১ বছর ধরে শিক্ষাকতা করছি। আমার নামে খারাপ কিছু থাকলে একটি স্কুলের পর আরেকটি স্কুলে চাকরি পেতাম না। অন্যদিকে আমার বাড়ির খুব কাছাকাছি স্কুলটিতে নিশ্চয় আমাকে না জেনে, না বুঝে নিয়োগ দিত না।’ মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পারিবারিক শত্রুতার জেরে আমার পড়ালেখায় ক্ষতি করার জন্য এইচএসসি শিক্ষার্থী থাকাকালীন আমার চাচাতো ভাই একটি মামলা করেন। কিন্তু সত্যতা না থাকায় আমাকে প্রথমে জামিন এবং পরে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর ২০০১ সালে জোড়া খুনের একটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। কোন ভিত্তি না থাকায় আটকের পরপরই আমাদের মুক্তি দেওয়া হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সুনাম নষ্ট করার জন্য পুরাতন সেই সব শত্রুরাই এই ধরণের অভিযোগ করে থাকতে পারেন।’
মোহাম্মদ তৌহিদুল আলমের বিষয়ে নাজিরহাট বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘স্কুলে কোন অভিযোগ আসেনি বা আগেও কোন অভিযোগ পাইনি। আসলে তখন তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।’
বিভিন্ন সময়ে মামলার আসামী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শিক্ষাঙ্গনকে আতঙ্কমুক্ত করার দবি
-Advertisement-
- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -