রাঙ্গুনিয়ায় শ্বাসকষ্টে শিক্ষকের মৃত্যু: লাশ দাফনে এলাকাবাসীর বাধা,প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দাফন

0
394

সংবাদদাতা,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া সৈয়দা সেলিমা কাদের চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলামের লাশ তার নিজ গ্রাম রাউজানে দাফন করতে নিয়ে যাওয়া হলে গ্রামবাসী তার লাশ দাফন করতে দেয়নি। এমনকি শিক্ষকের স্বজনরাও তার লাশ গ্রহণ করেনি। পরে ওই শিক্ষকের লাশ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর কর্মস্থল রাঙ্গুনিয়ায়। সেখানেও লাশ দাফন বাধা দেওয়া হয়। পরে কোনো উপায় না দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অসহায় পরিবারটির সদস্যরা। খবর পেয়ে গভীর রাতে ফোর্স নিয়ে ছুটে আসেন রাঙ্গুনিয়া থানার এস আই ইসমাঈল হোসেন জুয়েল ও গাউছিয়া কমিটির একটি টীম। তাদের উদ্যোগে ভোর ৪ টায় ওই শিক্ষকের লাশ দাফন করা হয়।
আজ শুক্রবার (১২ জুন) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলামের (৫৯) বাড়ি রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় হলেও তিনি কর্মসূত্রে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দবাড়ি গ্রামে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) রাত ৮ টার দিকে তিনি শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যান। তিনি ওই কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সন্ধ্যায় হঠাৎ তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় গুরুতর অবস্থায় তাকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন বলে তার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। এরপরও ৯ জুন তার করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রদান করা হয়েছে।ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি। এদিকে বৃহস্পতিবার (১১ জুন) রাত ৮ টায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কলেজ শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলামের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ারপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় নিজ উপজেলা রাউজানের নোয়াপাড়ায়। কিন্তু সেখানে তার স্বজনদের কেউই তাঁর লাশ গ্রহণ করেনি। এমনকি প্রতিবেশীরাও এ সময় খারাপ আচরণ করেন। লাশ দাফনে এমন অভাবনীয় বাধা পেয়ে ওই শিক্ষকের পরিবার লাশ নিয়ে আবার রাঙ্গুনিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।শুক্রবার (১২ জুন) দিবাগত রাত ১ টায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি রাঙ্গুনিয়ার মরিয়মনগর ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দবাড়ি গ্রামে ফেরত আসে। যেখানে তিনি ভাড়া থাকতেন। কিন্তু সেখানেও লাশ দাফনে বাধা দেওয়া হয়। কোনো উপায় না দেখে মরিয়ম নগরের পাগলা মামার মাজার এলাকায় লাশ নিয়ে অসহায় পরিবারটির সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
খবর পেয়ে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ ও গাউছিয়া কমিটির সদস্যরা এগিয়ে আসে। এলাকার উদ্যমী তরুণদের সঙ্গে নিয়েই খোঁড়া হয় কবর। সব রীতি মেনে সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। রাঙ্গুনিয়া থানার এসআই ইসমাঈল হোসেন জুয়েল জানান, ‘এই শিক্ষকের লাশ রাউজানের তার নিজ গ্রাম থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে খবর পাওয়ার পর রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ দাফনের দায়িত্ব নেয়। এলাকার তরুণদের সাথে নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।’ এই শিক্ষকের মৃত্যুর খবরে এলাকায় ছাত্র-ছাত্রী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

আলোকিত প্রতিদিন/১২ জুন ‘২০/এসএএইচ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here