:: নিজস্ব প্রতিবেদক::
বাজেট অধিবেশনের আগে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী-এসএসএফের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, কোভিড-১৯ পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ ফল এলেও সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিবেশনের পুরো সময়টা কোয়ারেন্টিনে রাখা হতে পারে, যাতে তারা আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে আসতে না পারে।সংসদ সচিবালয়ের ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে তাদের; তবে কোথায় রাখা হবে সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
১০ জুন থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বাজেট অধিবেশন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরত্ব বজায় রেখে যাতে বসতে পারে, সেজন্য ৮০-৯০ জন এমপি নিয়ে প্রতিদিন অধিবেশন চালানো হবে।
সংসদ অধিবেশনের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে হুইপ ইকবালুর রহিম বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। এসএসএফ থেকে কিছু সুপারিশ এসেছে। আমরা তা বিবেচনায় নিয়েছি।”
দায়িত্ব পালনকারীদের কোয়ারেন্টিনে রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।”
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা এবং ‘নেগেটিভ’ হওয়া ব্যক্তিদেরও সংসদ চলাকালে কোয়ারান্টাইনে রাখাসহ ১২ দফা সুপারিশ করে এসএসএফ।এসব সুপারিশ এবং সংসদ সচিবালয় তাদের নিজস্ব কিছু ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে বাজেট অধিবেশনকালে যথাসম্ভব সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সুরক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। এসএসএফের সুপারিশভুক্ত ভিভিআইপি সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ছাড়াও সংসদ সচিবালয় সংসদ কক্ষে দায়িত্ব পালনকারী সব কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অধিবেশনে অত্যাবশ্যকীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনাভাইরাস পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত দুই দিনে ৯৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এদের মধ্যে চারজনের কোভিড-১৯ ‘পজিটিভ’ এসেছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে বাকিদেরও সংসদ ভবনের মেডিকেল সেন্টারের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করেই পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ইকবালুর রহিম বলেন, অধিবেশন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা শুরু হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে এটি সম্পন্ন হবে। সংসদ সদস্যদের পরীক্ষার বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তিনি জানান।
সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, যে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসায় কোয়ারেন্টিনের পরিবেশ রয়েছে, তারা সেখানেই থাকবেন। আর অন্যদের সংসদ সচিবালয় থেকে একটি ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে করোনাভাইরাস সঙ্কটকালে অনুষ্ঠেয় এ বাজেট অধিবেশনে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আরও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সংসদ সচিবালয়। এক্ষেত্রে শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং বয়স্ক এমপিদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। সংসদ সচিবালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, অধিবেশন চলাকালে কক্ষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায়ও বড় ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সাময়িকভাবে আসন বিন্যাসেও পরিবর্তন আনা হবে। প্রধানমন্ত্রীর আশপাশের বেশ কয়েকটি আসন ফাঁকা রাখা হবে।
এক্ষেত্রে সংসদের প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীকে আরও এক সারি পেছনে এবং প্রধানমন্ত্রীর ডান পাশের আসনের সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরীসহ অন্যদের আরও কয়েক আসন দূরে বসানোর ব্যবস্থা করা হবে। আসন বিন্যাস এবং তালিকা করে সংসদ সদস্যদের উপস্থিতির বিষয়ে প্রধান হুইপের নেতৃত্বে হুইপরা একদফা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে কোন দিন কোন কোন সদস্যরা অংশ নেবেন তার তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়।
ইকবালুর রহিম বলেন, ইতোমধ্যে তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ওই তালিকা অনুযায়ী কে কোন দিন অংশ নেবেন, সেটা হুইপদের পক্ষ থেকে আগেই তাদেরকে মোবাইলে জানিয়ে দেওয়া হবে।