::ডেস্ক প্রতিদিন::
করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে চীনের তদন্তে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। চীনের চলমান তদন্তে তাদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাবে বলে শুক্রবার আশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে পাঠানো এক ইমেইলে একথা জানিয়েছেন সংস্থাটির মুখপাত্র তারিক জাসারেভিক।
বিশ্ব জুড়ে মহামারির আকার নেওয়া করোনাভাইরাস গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগ উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলোজি থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবিষয়ে কোনও প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানালেও বৃহস্পতিবার ট্রাম্প দাবি করেছেন এই সংক্রান্ত প্রমাণ তিনি দেখেছেন। তবে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করে থাকেন ভাইরাসটি উহানের একটি বণ্যপ্রাণী বিক্রি হওয়া বাজার থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ভাইরাসটির উৎপত্তি নিয়ে আরও ভালো বোঝাপড়ার জন্য চীনে বেশ কয়েকটি তদন্ত চলছে বলে বুঝতে পেরেছে তারা। বর্তমানে এসব তদন্তের সঙ্গে ডব্লিউএইচও’র কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে শুক্রবার এএফপিকে পাঠানো ইমেইলে সংস্থাটির মুখপাত্র তারিক জাসারেভিক বলেন, ‘পশু থেকে ভাইরাসটির উৎপত্তি নিয়ে চীন সরকারের তদন্তে অংশ নেওয়ার আহ্বানে সাড়া দিতে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ডব্লিউএইচও।’
করোনাভাইরাসের মহামারি নিয়ে চীন সরকারের পাশাপাশি ডব্লিউএইচও’র কঠোর সমালোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভাইরাসটির তীব্রতা অগ্রাহ্য করা এবং চীনের বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠার অভিযোগে সম্প্রতি ডব্লিউএইচও’তে তহবিল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে জানুয়ারির শেষ দিকে চীন সফরে যান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসিস। ভাইরাস মোকাবিলায় চীন সরকারের ভূমিকা বুঝতে ওই সফরে তিনি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এই সপ্তাহে গেব্রিয়াসিস জানিয়েছেন, ওই সফরের জের ধরে ফেব্রুয়ারিতে চীনের পরিস্থিতি তদন্তে যায় আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। এতে চীন, জার্মানি, জাপান, কোরিয়া, নাইজেরিয়া, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরাও ছিলেন। তবে বর্তমানে চীনে ভাইরাসটির উৎপত্তি নিয়ে তদন্ত নতুন করে গতি পেয়েছে। তবে ডব্লিউএইচও এর অংশ নয়। সংস্থাটির মুখপাত্র তারিক জাসারেভিক বলেন ধারনা করা হচ্ছে এই তদন্তে ২০১৯ সালের শেষ দিকে উহানের আশেপাশে আক্রান্ত মানুষের লক্ষণ, ভাইরাসটি প্রথম যেখানে মানুষকে আক্রান্ত করেছিল সেখানকার পরিবেশগত নমুনায়ন এবং ওই বাজারে যেসব বণ্য ও চাষ করা প্রাণী বিক্রি হয় তার বিস্তারিত রেকর্ড সংগ্রহ করে দেখা। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে গবেষণায় অগ্রাধিকার হিসেবে ডব্লিউএইচও প্রাণী ও মানুষের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন দেশের সরকার এবং সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয় অব্যাহত রেখেছে। এসব গবেষণার মধ্যে ভাইরাসটির উৎপত্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।