নজিমুদ্দিন সারা বিশ্বের জন্য মহৎ দৃষ্টান্ত বললেন প্রধানমন্ত্রী, নেতিবাচক মনোভাবের বিত্তবানদের সমালোচনা

0
468

::নিজস্ব প্রতিবেদক::

করোনাভাইরাস মহামারীতে কর্মহীন মানুষের সহায়তায় ভিক্ষার জমানো ১০ হাজার টাকা দান করে আলোচিত শেরপুরের সেই বৃদ্ধ নজিমুদ্দিনকে ‘বিশ্বের জন্য মহৎ দৃষ্টান্ত’ হিসেবে তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে মহামারী পরিস্থিতি নিয়ে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এই প্রসঙ্গ টানেন। এ সময় তিনি নেতিবাচক মনোভাবের বিত্তবানদের সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘অনেক সময় দেখি অনেক বিত্তশালীরা হা-হুতাশ করেই বেড়ায়। কিন্তু তাদের নাই নাই অভ্যাসটা যায় না। তাদের ওই চাই চাই ভাবটাই সব সময় থেকে যায়।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের ইয়ার আলীর ছেলে নজিমুদ্দিন (৮০) ভিক্ষা করে সংসার চালান। বসতঘর মেরামত করার জন্য দুই বছর ধরে ভিক্ষা করে তিনি জমিয়েছিলেন ১০ হাজার টাকা। ওই টাকা তিনি মহামারীতে ঘরবন্দি কর্মহীন মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে দান করেন। ভিক্ষুক নজিমুদ্দিনের দানের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে তাকে ভিটেমাটি ও পাকা বাড়ি করে দেওয়ার নির্দেশ আসে। তাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়।

নাজিমুদ্দিনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, আপনারা দেখেছেন। একজন ফকির, ভিক্ষা করে খায়, একটা সাধারণ মানুষ। এক সময় কৃষিকাজ করতো। এক্সিডেন্ট করে তার পা ভেঙে যায়। তারপরে আর কাজ করতে পারেনি, ভিক্ষা করে এবং এই ভিক্ষা করে করে মাত্র ১০ হাজার টাকা জমা করেছিল। তার থাকার ঘরটা ঠিক করবে বলে। তার মাত্র একটা ছেড়া কাপড় গায়ে। তার খাবারও ঘরে ঠিকমতো নেই। কিন্তু তারপরও সেই মানুষটা সেই জমানো ১০ হাজার টাকা সে তুলে দিয়েছে করোনা ভাইরাসে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের সাহায্যের জন্য। আমি মনে করি, সারাবিশ্বে একটা মহৎ দৃষ্টান্ত তিনি সৃষ্টি করেছেন। এতবড় মানবিক গুণ আমাদের অনেক বিত্তশালীর মাঝেও দেখা যায় না। কিন্তু একজন নিঃস্ব মানুষ যার কাছে এই টাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে ওই টাকা দিয়ে আরো দুইটা জামা কিনতে পারতো,ঘরে আরো খাবার নিতে পারতো বা এই করোনাভাইরাসের জন্য তার যে অসুবিধা তার জন্য অনেক কিছু করতে পারতো, সে চিন্তা করতে পারতো। কোনো চিন্তা সে করেনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, এই অবস্থায় ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করাও যেখানে মুশকিল সেখানে তিনি নিজের চিন্তা না করে শেষ সম্বলটুকু দান করে দিয়েছেন। এই যে একটা মহৎ উদারতা দেখালেন..বাংলাদেশের মানুষের মাঝে কিন্তু এখনো এই মানববিকবোধটা আছে। কিন্তু সেটা আমরা পাই কাদের কাছে? যারা নিঃস্ব তাদের কাছেই।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here