এমএইচ চৌধুরী
তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার মুন্সী মোখলেছুর রহমান’কে ম্যানেজ করতে পারলেই সবকিছু জায়েজ হয় দূর্নীতিবাজদের এমন ঘটনা এখন নামের চেয়েও বাস্তবতায়। এমনই একজন দুর্নীতির বরপুত্র ওমেদার রানা। কত শত দূর্নীতি করলে তাকে দূর্নীতিবাজ বলতে হয় তা বাংলাদেশের কোন পুস্তকে উল্লেখ না থাকলেও দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও তাকে কর্মস্থলে জামাই আদরে বহাল রাখা হয় এটায় প্রমাণ করলো রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্স ঢাকা। গত ১লা আগষ্ট ২০২৫ ইং ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন (তালাশ টিম) কর্তৃক প্রকাশিত ঢাকায় টাকা উড়ে, ঝাড়ুদার থেকে পিয়ন, ওমেদার থেকে নকল নবিশ নিউজে হাতেনাতে অভিযোগ প্রমানিত হলে ধানমন্ডি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের পিয়ন মুসবিহা’কে পাবনা এবং পল্লবী অফিসের পিয়ন পারভীন’কে আইজিআর অফিসে বদলি করা হয়। কিন্তু দূর্নীতির বরপুত্র ওমেদার “রানা, সাদ্দাম এবং আশিক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’কে ম্যানেজ করে রয়েছেন বহাল তবিয়তে। রেজিস্ট্রি অফিসে ওমেদার পদবি মানে ৬০/- টাকার দৈনিক কামলা মাসে ১৩২০/-টাকা কিন্তু সেই দৈনিক কামলায় রাখেন সাপ্তাহিক দুই হাজার টাকা মাসে ৮ হাজার টাকা বেতনের আরেক কামলা। আচার্য্যজনক হলেও সত্যি তেজগাঁও রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সের ১১টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রয়েছে এমন এগারো জন সহকারী কামলা। ওমেদার রানা’র গাড়ি,বাড়ি সান শওকতের পরে রয়েছে অত্র অফিসে নিজস্ব রক্ষিতা। নামে যাই হোক আষার শ্রাবণ ভাদ্র আশ্বিন তবে তার একাউন্টে রয়েছে ওমেদার রানা’র অবৈধ আয়ের বেশকিছু টাকা। ২০১৬ সালে সাবেক আইন মন্ত্রী আনিসুল হকের নির্দেশে সাবেক ডিআর আব্দুল জলিল ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে ওমেদার রানা’কে নিয়োগ দেন। ওমেদার রানা খান পিতা মৃতঃ সামছুল হক খান, সাং নন্দিরগাঁও, পোষ্ট রাজাপুর, থানা দাগনভূঁইয়া,জেলা ফেনী। বংশগত ভাবে পৈতৃক নামের পিছনে খান থাকলেও তার পড়াশোনা ২য় শ্রেণী পর্যন্ত হওয়ার কারণে অন্যের রানা চৌধুরী সার্টিফিকেট ব্যবহার করে এখন তিনি বনে গেছেন চৌধুরী।
অর্থ বিপত্তি সম্পত্তি কি নেই এই রানা’র অবৈধ আয়ে গড়ে তুলেছেন ডেভলপার কোম্পানি ভাইকে দিয়ে কিনেছেন জমি,প্লট, ফ্ল্যাট, গাড়ি গড়েছেন নতুন বাড়ি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধানমন্ডি সাবরেজিস্টার অফিসের সিনিয়রকর্তা বলেন, একই অফিসের তিন বন্ধু সরকারি বন্ধ পেলেই উড়াল দিয়ে চলে যান মালোশিয়া, নেপান,থাইল্যান্ড, হংকং,ব্যাংকক,পাতাইয়া বীচে। ঢাকা রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে রয়েছে দূর্নীতির একটি সুবিশাল নেটওয়ার্ক, তাদের কাজ ঘুষ ও জালিয়াতির মাধ্যমে রেজিস্ট্রারের পাতা ছেড়া,জমির শ্রেণী পরিবর্তন,জমির পরিমাণে কমবেশি করা সহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি। যা উমেদার, দলিল লেখক, নকলনবিশ এবং কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে গড়ে উঠা বিশাল সিন্ডিকেট। এই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন ধানমন্ডি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের উমেদার রানা, সাদ্দাম এবং আশিক এর হাত ধরে। তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে জেলা ধানমন্ডি রেজিস্ট্রার অফিস, রেকর্ডরুম ছাড়াও রয়েছে ১১টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। এসব অফিসে রয়েছে বিশাল দালাল চক্রের নেটওয়ার্ক। অসাধু কর্মকতা-কর্মচারীদেরও একাধিক শক্তিশালী চক্র প্রতিনিয়ত কাজ করে এই অফিস গুলোতে। ধানমন্ডি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের উমেদার রানা’র নেতৃত্বাধীন দালাল সিন্ডিকেট এবং অফিসের অসাধু কর্মকতা-কর্মচারীদের যোগসাজশে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি ও নাজেহাল হতে হয় সেবা প্রার্থীদের। তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি এবং প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের বিভিন্ন অভিযোগ আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে জেলা রেজিস্ট্রার মুন্সী মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে। বিশ্বস্ত সূত্রে ভিডিও রেকর্ড অনুসারে জানা যায়, তালাশ টিম নিউজ প্রকাশের পর মুষ্টিমেয় ২জন’কে বদলি ও অপর দু’জনকে সাসপেন্ড করে বাকি দূর্নীতিবাজদের থেকে ৩ লাখ টাকা করে উৎকোচ নিয়ে এখনো বহাল রেখেছেন জেলা রেজিস্ট্রার মুন্সী মোখলেছুর রহমান। সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার কথা বলে টাকা নেওয়ার সময় তিনি অতি গোপনীয়তা বজায় রেখে লেনদেন করেন। ডিআর এর বক্তব্য নেওয়ার জন্য সরকারি নাম্বারে একাধিক বার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেনি। দীর্ঘ ১ মাসের মধ্যে ভুলবশত ফোন রিসিভ করলেও সাংবাদিক বা পত্রিকা অফিস থেকে বললেই তিনি ফোন রেখে দেন। একাধিক বার অফিসে গিয়েও সাক্ষাৎকার নিতে চাইলে তিনি সাক্ষাৎকার দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
আলোকিত প্রতিদিন/২৬ অক্টোবর ২০২৫/মওম


