বিজ্ঞপ্তিঃ আমি পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) , মোঃ মনজুর কাদের ভূঁইয়া, ওসি হাটহাজারী থানা, চট্টগ্রাম দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার ২৫/১০/২০২৫ইং তারিখ শনিবার অনলাইনে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রতিবাদে জানাচ্ছি যে, উক্ত সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
প্রকাশিত সংবাদটি মিথ্যা, অপপ্রচার, মানহানিকর এবং অতিরঞ্জিত। সংবাদে প্রকাশ করা হয়েছে যে, “এবার আসামীর ছবি তোলার কারণে কয়েকটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসালেন তিনি খুনের শিকার হওয়া স্কুল ছাত্রের ভাইকে” প্রকৃত তথ্য হচ্ছে স্কুল ছাত্র তানভির হত্যাকান্ডের ৬ ঘন্টার মধ্যে হাটহাজারী থানা পুলিশ ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ৩জন কিশোরকে আটক করে। তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৬/১৭ বছর। শিশু আইন অনুযায়ী বয়স ১৮ বছরের নিচে প্রত্যেকেই শিশু। কোন অপরাধের সাথে শিশু জড়িত থাকলে তাদেরকে আসামী বলা যাবে না, তাদের নাম ঠিকানা, ছবি সর্বসাধারনের নিকট প্রকাশ করা যাবে না। তাদেরকে পৃথক শিশু আদালতে বিচারের জন্য সোপর্দ্য করতে হয়। অপরাধের সাথে জড়িত শিশুদেরকে হাতকড়া পরানো যায় না।
আটক শিশুদেরকে পরেদিন কোর্টে প্রেরনের সময় রায়হান নামের জনৈক যুবক থানার ভিতর ডুকে শিশুদের ছবি ও ভিডিও ধারন করতে থাকে। দায়িত্বরত পুলিশ তাকে নিষেধ করলে সে বেপরোয়ারা হয়ে পুলিশের উপর চড়াও হয়, কর্তব্যরত পুলিশের কলার ধরে টানাটানি করে, ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়, আসামীদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
উল্লেখ্য যে উক্ত যুবক আগের দিন রাতেও উপস্থিত অনেক সাধারন জনগনের সামনে হাটহাজারী থানায় প্রবেশ করে পুলিশের সাথে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কিতে লিপ্ত হয়। হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য অভিযানে আমি সহ আভিযানিক দল ব্যস্ত থাকায় উক্ত যুবককে বুঝিয়ে থানা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। থানার অভ্যন্তরে পুলিশের কাজে বাধা ও আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে আহত করায় তাকে আইনানুগভাবে আটক করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। পরবর্তীতে জানা যায় যে, ১৫/১০/২০২৫ইং তারিখ চাকসু নিবার্চনের দিন রাতে বেলা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১নং গেইটে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী তারেক আজিজ মহোদয়কে ইট মেরে মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা আছে। উক্ত যুবককে যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ায় আদালতে প্রেরন করা হয়। অথচ প্রতিবেদনে এএসব উল্লেখ না করে মিথ্যা মামলায় উক্ত যুবককে ফাঁসানোর কথা বলা হয়েছে। যা পাঠকপ্রিয় জাতীয় দৈনিক মানবজমিনের সাংবাদিকের প্রতিবেদনের নিরপেক্ষতা ক্ষুন্ন হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে মনজুর কাদের ভূঁইয়ার রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অথচ প্রকৃত তথ্য হচ্ছে হত্যাকান্ডের ৬ ঘন্টার মধ্যে জড়িত ৩জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হওয়ায় হাটহাজারী থানা পুলিশের প্রতি স্থানীয় মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে জনৈক রিপোর্টার মনসুর আলম মুন্নাকে ওসি মনজুরের ঘুষ বানিজ্য ও অনিয়মের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে অপহরণ করে চকরিয়া থানা হেফাজতে আটক করে নির্যাতন করে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে উক্ত মনসুর আলম মুন্না একজন পেশাদার চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী। সে বহুবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছে। যা জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় তার মাদক সহ ছবি ও আটকের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গত ৪/১০/২০২৫ইং তারিখ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন খবর নামক পত্রিকায় উক্ত মনসুর আলম মুন্নার বিষয়ে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদের https://www.facebook.com/share/17GzvYG9wp/
সংবাদ অনুসারে উক্ত মনসুর আলম মুন্না বিভিন্ন থানার অফিসার ইনচার্জ সহ অফিসারদেরকে টার্গেট করে মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেইল করে। গত ২৪/০২/২০২২ইং তারিখ পর্নোগ্রাফি মামলায় গ্রেফতার হয়। ২৩/০৪/২০২২ইং তারিখ চাঁদাবাজী অভিযোগে র্যার্ব কর্তৃক গ্রেফতার করা হয়। এর আগে প্রথমবার কক্সবাজার মডেল থানায় ভূয়া সাংবাদিক ও চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার হয়। কিছুদিন পূর্বে সে কক্সবাজার আদালত ভবনে গণধোলাইয়ের শিকার হয়, তারপরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে গণধোলাইয়ের শিকার হয় মর্মে জানা যায়। চকরিয়া এলাকায় তার চাঁদাবাজীতে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারন মানুষ তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে। বর্তমানে সে গণপিটুনির ভয়ে এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না। কিছুদিন পূর্বে চাঁদাবাজীর অভিযোগে তাকে কক্সবাজারের স্থানীয় গণসংযোগ পত্রিকা থেকে বহিষ্কার করেছে। আমি কক্সবাজার চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ থাকাকালীন সময় উক্ত মনসুর আলম মুন্না মিথ্যা মানহানিকর একটি সংবাদ প্রস্তুত করে প্রকাশের ভয় দেখিয়ে আমার নিকট টাকা দাবী করে। আমি একজন পেশাদার এবং সৎ পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় তার এই মিথ্যা সংবাদের বিষয়কে গুরুত্ব না দিয়ে তৎক্ষনিকভাবে আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তার প্রেরিত সংবাদের স্ক্রীনশট পাঠিয়ে অবহিত করি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি নিজে বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করি। মামলার প্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরন করে। মামলাটি বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে।
উক্ত মনসুর আলম মুন্না জামিনে এসে তার পূর্বের চরিত্রে আবার ফিরে যায়। সে বিভিন্ন লোকজনকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা কক্সবাজার আদালতে দায়ের করে। তাকে গ্রেফতার করেছে তদন্তকারী কর্মকর্তা । গ্রেফতার অভিযানে আমি না থাকা সত্বেও আমাকে অভিযুক্ত করে অপহরণ সহ আরো অন্যান্য মামলা দায়ের করে। অথচ প্রতিবেদনে এই সমস্ত তথ্য উপস্থাপন না করে একপেশে রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ১৭ইং ফেব্রুয়ারীতে তার দেবরকে আটক করে জামিনযোগ্য ধারায় চালান দেওয়ার কথা বলে ১০ লক্ষ টাকা দাবী করে। টাকা না দেওয়ায় গভীর রাতে বসত ঘরে ঢুকে যৌন হয়রানী ও শ্লীলতাহানী করেন ওসি। অথচ প্রকৃত তথ্য হচ্ছে দক্ষিন চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় গরু চোর সিন্ডিকেটের প্রধান ৩২ মামলার আসামী নবী হোসেনকে গ্রেফতার করে তার স্বীকারোক্তি মতে তার নিয়ন্ত্রনাধীন বাড়ি থেকে রাতের বেলায় বিপুল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন আভিযানিক দলে থেকে সম্পূর্ন অভিযান ভিডিও ধারন করেন। অভিযানে আমি না থাকা সত্বেও উক্ত মনসুর আলম মুন্না আমাকে অভিযুক্ত করে জনৈক মহিলা দিয়ে আদালতে যৌন নির্যাতনের মামলা দায়ের করে যা বিচার বিভাগীয় তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
২০১৩ সালে আমি কক্সবাজারের ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ থাকাকালীন মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মামলার রায় ঘোষনার পরে সারা বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে পড়ে। একই দিনে কক্সাবাজার সদর হাসেমীয়া মাদ্রাসার সামনে পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে ৭ জনের মতো মানুষ নিহত হয়। ইদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রে জেলা পুলিশ লাইন্স থেকে ওসি ডিবির নেতেৃত্বে একদল পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। মারমুখী একদল লোক ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রে আগুন ধরাতে আসলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত হয়। উক্ত ঘটনায় মামলা রুজু হয়ে বিচারকাজও শেষ হয়। বর্নিত মনসুর আলম মুন্না মৃতের আত্মীয়কে ভূলবুঝিয়ে জোর করে আমাকে সহ আসামী করে কোর্টে মামলা রুজু করে। সে বিভিন্ন জায়গায় এই মামলা সমূহের কথা উল্লেখ করে আমাকে আমার সম্মানহানী করে আসছে। অথচ প্রতিবেদনে এই ধরনের কোন তথ্য উল্লেখ না করে আমার কোন বক্তব্য না নিয়ে একতরফা ভাবে মনসুর আলম মুন্নার লিখিত কথা অনলাইনে প্রকাশ করেছে। হুবহু একইভাবে অন্যান্য পত্রিকায়ও পরিকল্পিতভাবে একই সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
মানবজমিনের মতো পাঠক নন্দিত জাতীয় দৈনিকে এই ধরনের মিথ্যা অতিরঞ্জিত সংবাদ কপি করে প্রচার করা পত্রিকার নিয়মনীতিতে সমর্থন করা কথা নয়। সংবাদপত্র জাতির দর্পন, মানুষ পত্রিকায় যা পড়ে তা বিশ্বাস করে। ভূল ও মানহানিকর তথ্য প্রচার পেলে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিদারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ বিষয়ে ভবিষ্যতে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হল এবং প্রকৃত তথ্য যথাযথ প্রকাশ করবে এই প্রত্যশা করি।


