আজ সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ১ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ খুনের ঘটনায় তার ছাত্রী আ*টক!

-Advertisement-

আরো খবর

- Advertisement -
- Advertisement -

বিশেষ প্রতিনিধি, পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় টিউশনিতে এসে ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসেন। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন দুই খুনিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে জুবায়েদ হোসেনের ছাত্রী বর্ষাকে।

জোবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। রাতে কর্মসূচিতে যোগ দেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।

এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসেন পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় ওই বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, ক্যামেস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। এদিন সন্ধ্যায় বর্ষাকে পড়াতে গিয়ে খুন হন জুবায়েদ হোসেন। অন্যদিনের মতো গতকাল সন্ধ্যায় জুবায়েদ পড়াতে যান। পরে স্থানীয় লোকজন ছয়তলাবিশিষ্ট ওই বাসার তৃতীয় তলার সিঁড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও সেখানে উপস্থিত হন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বাসাটি ঘিরে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে জুবায়েদের মরদেহ উদ্ধার করে। বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ফরেনসিক টিম আসার পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে দুজনকে শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। বিল্ডিংয়ের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। ঘটনার পর ওই ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসা করে ওই ছাত্রীকে। পরে রাত ১১টার দিকে তাকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।

- Advertisement -

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কালো টি-শার্ট ও কালো ব্যাগ পিঠে দুই যুবক দৌড়ে বংশাল রোডের দিকে যাচ্ছেন। পুলিশের ধারণা, এরা হত্যাকা-ে জড়িত হতে পারে। তবে তাদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি।

এদিন পুলিশ আসার আগে ওই ছাত্রী বর্ষার সঙ্গে কথা বলেন শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র নেতারা। এ সময় ওই মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন মুন্না। তিনি বলেন, আমি ওই মেয়ের সঙ্গে কথা বলি। যা জেনেছি তা হলোÑ বিকালে ওই ছাত্রী জুবায়েদকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে, স্যার আজ পড়াতে আসবেন? জুবায়েদ বলে হ্যাঁ, আসতেছি। মেয়ে জিজ্ঞেস করেছে স্যার, কোথায় আছেন? জুবায়েদ বললÑ নূর বক্স লেনে ঢুকেছি। কল কেটে দিয়ে ছাত্রী জুবায়েদের লোকেশন চেক করে কনফার্ম হয় জুবায়েদ নূর বক্স লেনে প্রবেশ করেছে। এরপরই তো ঘটনাটা ঘটে। তিনি বলেন, মেয়ের বাসা পাঁচতলায়, রক্ত নিচতলা থেকে তৃতীয়তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। অথচ এই বিল্ডিংয়ের কেউ নাকি কিছুই জানে না।

এদিকে ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনের খুনিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ শিবির, বাগছাস, ছাত্রফ্রন্টসহ তার সহপাঠীরা রাত ১০টার পর বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে তারা তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, আমরা আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি। প্রশাসনের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছি আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য। আমরা শোকাহত।

ঢাবি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জুবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদল। রাত ৯টা ৩০ মিনিটে মিছিলটি টিএসসি থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর, হলপাড়া ঘুরে আবার টিএসসিতে যায়।

কবি জসীমউদদীন হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ তানভীর বারী হামিম বলেন, কয়েক দিন আগে এই ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আমাদের সহকর্মী সাম্যকে হত্যাকা-ের শিকার হতে হলো। এর পর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা পারভেজকে হত্যার শিকার হতে হলো, আর আজকে জুবায়েদকেও হত্যাকা-ের শিকার হতে হলো। এই ব্যর্থতার দায় ইন্টেরিম গভর্নমেন্টকেই নিতে হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/এপি

- Advertisement -
- Advertisement -