আজ রবিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ১২ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ফুটপাত দখলদারদের দৌরাত্ম্যে নাজেহাল বগুড়া শহরবাসী; দেখার কেউ নেই

-Advertisement-

আরো খবর

- Advertisement -
- Advertisement -

মাজেদুর রহমানঃ

ব্যস্ত শহর বগুড়ার ফুটপাত দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে। দখলদারদের সার্বক্ষণিক অপতৎপরতায় পথচারীদের বিরম্বনা চরমে।প্রতিবাদ করলেও লাঞ্চণার শিকার হন পথচারীরা।ফলশ্রুতিতে  বিশৃঙ্খলার নগরীতে পরিণত হয়েছে বগুড়া শহর।শহরের প্রধান প্রধান সড়কে বিদ্যমান ফুটপাত  পথচারীদের ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করলেও তা এখন পুরোপুরি দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে। যথাযথ তদারকি না করায় হকার, দোকানি, ঠেলাগাড়ি ও পণ্যের স্তূপে পরিণত হয়েছে বগুড়া শহরের ফুটপাত।এতে হাঁটার জায়গা হারিয়ে রাস্তায় নেমে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।ফলে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও জনদুর্ভোগ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সাতমাথা থেকে তিনমাথা রোড, শহীদ খোকন পার্ক, গালাপট্টি মোড়, ফতেহ আলী বাজার, চেলোপাড়া, কাঠালতলা, রাজা বাজার ও বড়গোলা পর্যন্ত ফুটপাতের ওপর গড়ে উঠেছে অস্থায়ী দোকান, ফলমূলের ঠেলাগাড়ি, শরবতের স্টল, পোশাক বিক্রেতা, এমনকি জুতা, টুপি, মোজা ও গৃহস্থালির পণ্য বিক্রেতাদের সারি।
শহরের অভিজাত জলেশ্বরীতলা ও আদালত পাড়া এলাকায় সন্ধ্যা নামলেই বসে যায় স্ট্রিট ফুডের সাম্রাজ্য—প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২৫টি দোকান চলে গভীর রাত পর্যন্ত। একই চিত্র সাতমাথার পার্টি অফিস এলাকা এবং জিলা স্কুলের সামনেও।

ফুটপাত দখলে শিক্ষার্থী, নারী ও বয়স্ক পথচারীরা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমে হাঁটার সময় প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

- Advertisement -

জেলা প্রশাসন, পৌর প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। কয়েক ঘণ্টা পরই দখলদাররা ফিরে আসছে আগের জায়গায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. আতোয়ার রহমান বলেন, “ফুটপাত দখলমুক্ত না হলে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি এবং দ্রুত এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান আশা করছি।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযান শেষ হলেই দখলদাররা ফিরে আসে। কেউ কেউ রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে ‘অঘোষিত অনুমতি’ নিয়েই ব্যবসা চালায়।

শহরের সৌন্দর্য ও চলাচল নিরাপদ রাখতে নাগরিকদের দাবি—পৌরসভা, জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বিত ও স্থায়ী পদক্ষেপ।

নগর পরিকল্পনাবিদদের মতে, ফুটপাত পথচারীর, ব্যবসার নয়। দখল শুধু ভোগান্তি নয়, এটি জননিরাপত্তা ও নগর পরিবেশের ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলে। বিকল্প হকার মার্কেট ও কঠোর আইন প্রয়োগই পারে স্থায়ী সমাধান দিতে।

বগুড়াবাসীর প্রত্যাশা—ফুটপাত ফিরে পাক পথচারী, বিশৃঙ্খলা নয়—শৃঙ্খল শহর হোক আমাদের বগুড়া।

ক্যাপশনঃ বগুড়া শহরের ফতেহ আলী মাজার গেট এলাকায় ফুটপাত দখলের চিত্র।ছবি: মাজেদুর রহমান।

আলোকিত প্রতিদিন/১১অক্টোবর ২০২৫/মওম

- Advertisement -
- Advertisement -