আজ রবিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ১২ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সম্মত হামাস ও ইসরায়েল

-Advertisement-

আরো খবর

- Advertisement -
- Advertisement -

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে বুধবার (৮ অক্টোবর) সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। এটি কার্যকর হলে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হতে পারে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে হামাসের হামলা এবং গাজায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরুর দুই বছর পূরণের পরদিন মিশরে পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি কাঠামোর প্রথম ধাপে ঐকমত্য গঠিত হয়। ট্রাম্প ট্রুথ সোশালে বলেন, আমি গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ইসরায়েল ও হামাস আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে স্বাক্ষর করেছে। এতে খুব শিগগিরই সব বন্দি মুক্তি পাবে এবং সম্মত সীমারেখায় ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করবে—যা এক দৃঢ় এবং স্থায়ী শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ।

চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে এটি হবে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সাফল্য। তবে ট্রাম্পের ঘোষিত চুক্তিতে অনেক বিষয় এখনও অস্পষ্ট, যা আগের শান্তি প্রচেষ্টার মতো ভেস্তেও যেতে পারে। এদিকে, আবারও ইসরায়েলি সেনারা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে সরে যাওয়ার আগে নিরস্ত্রীকরণের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। আলোচনায় সংশ্লিষ্ট দুজন জানায়, সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচি ও পদ্ধতি নিয়েই মূল জটিলতা রয়ে গেছে।

- Advertisement -

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ঈশ্বরের সাহায্যে আমরা সব বন্দিকে ফিরিয়ে আনব।

তিনি বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভা বৈঠক ডেকে চুক্তি অনুমোদনের ঘোষণা দেন। হামাসও জানায়, যুদ্ধের অবসানে তারা একমত হয়েছে, এবং এতে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও বন্দি-বিনিময় অন্তর্ভুক্ত আছে। তবে সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলিকে অনুরোধ করেছে, যেন ইসরায়েল পুরোপুরি যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করে।

ট্রাম্প জানান, তিনি সপ্তাহান্তে মিশর সফরে যেতে পারেন এবং বলেন, এটি আরব ও মুসলিম বিশ্ব, ইসরায়েল, আশপাশের দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক মহান দিন। কাতার, মিশর এবং তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের ধন্যবাদ জানাই।

মিশরের শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও তুরস্কের শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ট্রাম্প পাঠিয়েছেন তার জামাতা জ্যারেড কুশনার ও বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফকে, আর ইসরায়েলের পক্ষে অংশ নেন কৌশলবিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার।

তবে চুক্তি কার্যকর হলে, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার প্রশাসন, হামাসের ভবিষ্যৎ ও সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচি নিয়ে এখনও সমাধান হয়নি।

গাজা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৭ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের দাবি, ৭ অক্টোবরের হামলায় এক হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫১ জনকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যাদের মধ্যে ২০ জন এখনো জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হামাসের এক সূত্র জানায়, জীবিত বন্দিদের মুক্তি ইসরায়েলি সরকার চুক্তি অনুমোদনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শুরু হবে। নিহতদের দেহ উদ্ধারে আরও সময় লাগবে। ইসরায়েলি এক মুখপাত্র জানান, বন্দি মুক্তি শনিবার থেকে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প ফোনে একে অপরকে ‘ঐতিহাসিক অর্জন’-এর জন্য অভিনন্দন জানান। নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার আমন্ত্রণও জানান।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সব পক্ষকে চুক্তির শর্ত মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গাজায় মানবিক সহায়তা এবং জরুরি বাণিজ্যিক সরবরাহের নির্বিঘ্ন প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এই দুর্ভোগের অবসান হওয়া জরুরি।

ফিলিস্তিনি সূত্র জানায়, হামাস যে বন্দিদের মুক্তির তালিকা দিয়েছে, তাতে ফাতাহ নেতা মারওয়ান বারঘুতি ও পপুলার ফ্রন্টের প্রধান আহমেদ সাদাতের নাম রয়েছে—যারা ইসরায়েলে আজীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন।

ট্রাম্পের অনুরোধে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান কিছুটা শিথিল করেছে, তবে বিমান হামলা পুরোপুরি বন্ধ করেনি। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ জন নিহত হয়েছে—গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটি সবচেয়ে কম নিহতের সংখ্যা।ৎ

আলোকিত প্রতিদিন/০৯ অক্টোবর ২০২৫/মওম

- Advertisement -
- Advertisement -