আজ মঙ্গলবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা নিয়ে কী বলছেন বিশ্ব নেতারা

-Advertisement-

আরো খবর

- Advertisement -
- Advertisement -

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনায় সমর্থন জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। পরিকল্পনাটি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস পর্যালোচনা করে দেখছে। তবে এই শান্তি পরিকল্পনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি গোষ্ঠীটি।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‌‌‌‘‘আমি গাজায় যুদ্ধ শেষ করার আপনার পরিকল্পনায় সমর্থন জানাই; যা আমাদের যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জন করবে। এই পরিকল্পনা আমাদের সব জিম্মিকে ইসরায়েলে ফিরিয়ে আনবে, হামাসের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করবে, তাদের রাজনৈতিক শাসনের অবসান ঘটাবে এবং নিশ্চিত করবে গাজা আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি হবে না।’’

• ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিবৃতি বলা হয়েছে, ‘‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে ট্রাম্পের গাজায় যুদ্ধ শেষ করার আন্তরিক ও দৃঢ় প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানায় ফিলিস্তিন রাষ্ট্র। একই সঙ্গে শান্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার সক্ষমতার ওপর আস্থা পুনর্ব্যক্ত করছে ফিলিস্তিন।’’

- Advertisement -

• ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ বলেছেন, ‘‘এটি ঐতিহাসিক এক সুযোগ… এবং আমার ধারণা, এটি শেষ পর্যন্ত চোখের জলে শেষ হবে। আমাদের সন্তানদের আবার গাজায় লড়াই করতে বাধ্য হতে হবে। আমরা পরামর্শ ও বিবেচনা করবো এবং সিদ্ধান্ত নেব। কিন্তু গতকাল থেকে যে উদযাপন চলছে, তা একেবারেই হাস্যকর।

• গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের প্রধান জিয়াদ আল-নাখালা বলেছেন, ‘‘ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে এমন কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা সে যুদ্ধে অর্জন করতে পারেনি। তাই আমরা এই মার্কিন-ইসরায়েলি ঘোষণাকে গাজা উপত্যকাকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার রসদ হিসেবে বিবেচনা করি।’’

• ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া ক্যালাস বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা একটি স্থায়ী শান্তির সুযোগ। এটি যুদ্ধ শেষ করার সর্বোত্তম সুযোগ এনে দিয়েছে। ইইউ এই পরিকল্পনার সাফল্যে সহায়তা করতে প্রস্তুত। ইসরায়েল ইতোমধ্যে পরিকল্পনায় সই করেছে। এখন হামাসকে দেরি না করে এটি মেনে নিতে হবে। জিম্মিদের তাৎক্ষণিক মুক্তির মাধ্যমে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে।’’

• সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, মিসর, জর্ডান, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যুক্তরাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে ইতিবাচক এবং গঠনমূলক কাজ করার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। যাতে চুক্তি চূড়ান্ত করা যায় এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত হয়। এর মাধ্যমে ওই অঞ্চলের জনগণের জন্য শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

• জাতিসংঘের মুখপাত্র  আলেসান্দ্রা ভেলুচ্চি বলেছেন, আমরা শান্তি প্রচেষ্টার বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা সব ধরনের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। আমরা মানবিক সহায়তা প্রদানসহ যেকোনো ধরনের শান্তি পরিকল্পনায় সমর্থন জানাতে প্রস্তুত রয়েছি।

• তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, ‘‘আমি গাজায় রক্তপাত বন্ধ এবং যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বের প্রশংসা করি। তুরস্ক ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই প্রক্রিয়ায় অবদান রাখবে, যা সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।’’

• ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘‘রাশিয়া সব সময়ই ট্রাম্পের এমন প্রচেষ্টায় সমর্থন ও স্বাগত জানায়; যা চলমান মর্মান্তিক ঘটনার অবসান ঘটাতে চায়। আমরা এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও মধ্যপ্রাচ্যের সব সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাপ্তি চাই।’’

• জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ বলেছেন, ‘‘আমরা গতকাল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রকাশিত গাজা শান্তি পরিকল্পনায় স্বাগত জানাই। এই পরিকল্পনাই যুদ্ধ শেষ করার সর্বোত্তম উপায়। ইসরায়েলের এই পরিকল্পনায় সমর্থন জানানো গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এখন হামাসকে রাজি এবং শান্তির জন্য পথ পরিষ্কার করতে হবে।

• ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘‘আমি গাজার যুদ্ধের অবসান এবং সব জিম্মি মুক্তির জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানাই। আশা করছি, ইসরায়েল এই প্রক্রিয়ায় দৃঢ়ভাবে অংশ নেবে। হামাসের কোনো বিকল্প নেই—তাদের এখনই সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে এবং এই পরিকল্পনা মেনে চলতে হবে।

• যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘‘গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন উদ্যোগ অত্যন্ত সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য এবং আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বের জন্য কৃতজ্ঞ। আমরা দৃঢ়ভাবে তার প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানাই। যাতে যুদ্ধ বন্ধ, জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজার জনগণের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা যায়। এটিই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং তাৎক্ষণিকভাবে এই চুক্তির বাস্তবায়ন দরকার।’’

সূত্র: রয়টার্স।

আলোকিত প্রতিদিন/৩০সেপ্টেম্বর ২০২৫/মওম

– Advertisement –
- Advertisement -
- Advertisement -