আলোকিত প্রতিবেদক, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় মহালয়ার সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের ‘সন্ত্রাসী’ বলায় জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমানকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে তাকে।
ঘটনাটি ঘটে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীর তীরে।
নৌকাডুবির তিন বছর পূর্তি ও মহালয়া উপলক্ষ্যে করতোয়া নদীর ঘাটে সংবাদ সংগ্রহে যান ৬–৭ জন সাংবাদিক। সেই সময় দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমান সাংবাদিকদের নৌকায় মোটরসাইকেল নিয়ে নদী পার হতে বাঁধা দেন। অথচ একই সময়ে অন্য যাত্রীরা মোটরসাইকেলসহ নৌকায় পার হচ্ছিলেন, এমনকি ইউএনও নিজেও মোটরসাইকেল নিয়ে নৌকায় ওঠেন।
সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন তুললে ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বলেন— “আপনি আল জাজিরা, বিবিসি বাংলা বা যেই সাংবাদিকই হন না কেন, আমার কিছু যায় আসে না। যেতে পারবেন না।”
এরপর আরও উত্তেজিত হয়ে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন— “আপনারা সন্ত্রাসী।”
শতাধিক মানুষের সামনে সাংবাদিকদের এভাবে অপমান করার ঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। উপস্থিত সাংবাদিকরা ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন।
ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি নূর হাসান বলেন, “ঘাটে একেবারেই ফাঁকা ছিল, অন্যরা মোটরসাইকেলসহ পার হচ্ছিলেন। অথচ আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। এটি অযৌক্তিক ও অপমানজনক।”
বাংলাভিশন টেলিভিশনের সাংবাদিক মোশারফ হোসেন বলেন, “তিনি আমাদের সাংবাদিক পরিচয় শোনার পর আরও রেগে গিয়ে অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করেন। সাংবাদিকদের সন্ত্রাসী বলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
ঘটনার সময় বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম উপস্থিত হলে সাংবাদিকরা তাকে বিষয়টি জানান। তিনি এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলী সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটিকে অমানবিক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ হিসেবে দেখা হয়েছে। তাই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমানকে মহালয়ার সার্বিক কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি