নাজমুল হাসান:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় রাজনৈতিক অঙ্গনে সরব হয়ে উঠেছেন বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। বিশেষ করে বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলামীর একাধিক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশার ঘোষণা দিয়েছেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে মনোনয়ন চাইছেন সাবেক চারবারের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মনজুরুল আহসান মুন্সি। তিনি কুমিল্লা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হয়ে ১৯৯১, ১৯৯৬–এর ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬–এর ১২ জুন ও ২০০১ সালে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও জনপ্রিয়তা নিয়ে তিনি আবারও দলীয় মনোনয়ন পেতে চান।
একইসঙ্গে বিএনপির আরেক শীর্ষ নেতা, সাবেক দেবিদ্বার উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও হংকং বিএনপি শাখার সভাপতি এবং বর্তমান কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ এফ.এম তারেক মুন্সিও এবার দেবিদ্বার থেকে প্রার্থী হতে আগ্রহী। দীর্ঘদিন রাজনৈতিক মাঠে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দলকে গুছিয়ে রেখেছেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সভা সমাবেশ করছেন।
অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর পক্ষ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ দেবিদ্বারে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ২০২৪ সালে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার পুনর্বহালের বিরুদ্ধে যখন ছাত্রসমাজ রাস্তায় নেমে আসে, তখন হাসনাত ছিলেন “Students Against Discrimination” আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক। তার জোরালো নেতৃত্ব, নির্ভীক অবস্থান এবং ছাত্রদের স্বার্থে সরব ভূমিকা দেশব্যাপী তরুণ সমাজকে একত্রিত করে। এই আন্দোলনের ফলে সরকার ব্যাপক চাপে পড়ে এবং গণবিক্ষোভের মুখে তৎকালীন সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয়। এই ঘটনাই হাসনাত আবদুল্লাহকে জাতীয় রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে আসে।
এছাড়া জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশ থেকেও মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারী ও দেবিদ্বার উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সহিদ দেবিদ্বার আসনে প্রার্থী হতে চান। তিনিও রাজনৈতিক মাঠে আন্দোলন সংগ্রাম করে দলকে গুছিয়ে রেখেছেন। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে তিনি একাধিকবার জেলে গিয়েছেন এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেবিদ্বার সবসময়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন। এবারও একাধিক দলের শীর্ষ নেতারা সরব হওয়ায় আসনটি হাই-প্রোফাইল প্রতিদ্বন্দ্বিতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দলগুলো কাকে মনোনয়ন দেয় এবং জনগণের রায় কাদের পক্ষে যায়।
আলোকিত প্রতিদিন/১৬সেপ্টেম্বর ২০২৫/মওম