আজ বুধবার, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ৬ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দিনাজপুরের কাহারোলে জাল সনদে চাকুরী করছেন শিক্ষিকা জয়ন্তী রানী

-Advertisement-

আরো খবর

পিসি দাস: 
দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় পূর্ব সাদীপুর উচ্চ বিদ্যালয় আইসিটি শিক্ষক জয়ন্তি রানী রায় জাল সনদে করছেন চাকুরী। বছরের পর বছর গ্রহণ করছেন এমপিও ভুক্তির সরকারি অর্থ। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলেও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। কাহারোল উপজেলার পূর্ব সাদীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে জয়ন্তী রানী রায় ২০০২ সালে ১০ অক্টোবর কম্পিউটার সার্টিফিকেট প্রদানের শর্তসাপেক্ষে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটিকে ম্যানেজ করে আইসিটি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন,এর এক বছর পর ২০০৩ সালে বাংলাদেশ কম্পিউটার এডুকেশন (BCE) বীরগঞ্জ শাখা থেকে প্রশিক্ষণ ছাড়াই একটি সনদপত্র নিয়ে প্রতিষ্ঠানে জমা দেয়ায় ২০০৪ সালে এমপিও অন্তর্ভুক্তি হন। সেই সময় থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত সেই জাল সনদে বীর দর্পে জয়ন্তী রানী রায় আইসিটি শিক্ষক হিসেবে চাকুরী করছেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর এর অডিটের মাধ্যমে সরকার অনুমোদনহীন চাকুরী ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয় এমন সব প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ কৃত কম্পিউটার সার্টিফিকেটের বদৌলতে চাকুরীর সুবাদে অনেক শিক্ষকের চাকুরী এমপিও বাতিল সহ জরিমানা হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এখনো অনেকেই ধরা ছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে। এবং চাকুরি করছেন বহাল তবিয়তে। এ প্রসঙ্গে পূর্ব সাদীপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন রায়ের সাথে কথা হলে তিনি জানান, বারবার অডিট হচ্ছে, তারা তো এ বিষয়ে কেউ কোনদিন কোন কথা বলেনি, আপনারা কেন এ বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। আইসিটি শিক্ষক জয়ন্তী রানীর সঙ্গে কম্পিউটার সনদ প্রাপ্তির বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, বীরগঞ্জ বাংলাদেশ কম্পিউটার এডুকেশন(BCE) থেকে সার্টিফিকেট গ্রহণ করেছি, সেই সনদে এমপিও ভুক্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষকতা করে আসছি। জয়ন্তী রানীকে কম্পিউটার সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশ কম্পিউটার এডুকেশন(BCE) বীরগঞ্জ শাখার পরিচালক মোঃ ইউসুফ আলীর সাথে সনদ প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ কৃত সনদ দিয়ে কোন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারবে না। এই সার্টিফিকেট শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণের সনদপত্র। সরকারি নির্দেশনা না থাকা সত্ত্বেও BCE থেকে গ্রহণ কৃত কম্পিউটার সনদ দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত চাকুরী করছেন এবং সরকারি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন জয়ন্তী রানী রায়। একই শিক্ষানীতির আলোকে কেউ BCE কম্পিউটার সনদে চাকুরী হারাবেন, আবার কেউ একই প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ কৃত সনদে চাকুরী করে সরকারি অর্থ তস্রুপ করবেন এই বৈষম্যের নিরসন চায় সচেতন মহল। দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার মোঃ আলাউদ্দিন আল আজাদ এর সাথে মুঠোফোনে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, এরকম কোন নীতিমালা বা দৃষ্টান্ত থাকলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক ভারপ্রাপ্ত (শিক্ষা) মোছাঃ রোকসানা বেগম এর সাথে মুঠোফোনে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এনটিআরসি এর মাধ্যমে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের সনদসহ যাবতীয় তথ্য জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে ফরওয়ার্ডিং করে এনটিআরসি সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। এরপরেও কোন ব্যবস্থা না নিলে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতা তো আমার নেই। সংবাদ প্রকাশের পর সেই পত্রিকার সহ আমার বরাবর পাঠালে আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আলোকিত প্রতিদিন/০৫ আগস্ট ২০২৫/মওম
- Advertisement -
- Advertisement -