বিশেষ প্রতিনিধি : জাতীয় গৃহায়ন সিন্ডিকেটের দুর্নীতির মূলহোতা আসাদুজ্জামান হাজার কোটি টাকার মালিক। তিনি জন্মগ্রহণ করেন টাংগাইল জেলার ধনবাড়ি উপজেলায়। অভাবের টানাটানির সংসারে আত্মীয়, পাড়া-প্রতিবেশী, সমাজের বিত্তশালীদের কাছ থেকে নেওয়া সহযোগিতা দিয়ে আইন পেশায় ডিগ্রি নিয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ (জাগৃক) এর আইন কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পেয়ে হয়ে উঠেন ঘুষখোর অফিসার ।
ফ্যা*সিস্ট হাসিনা সরকারের পুরো সময়টাই বেনিফিশারি এই ল অফিসার। অত্যন্ত স্বেচ্ছাচারী দাম্ভিক এই লোকটি ধরাকে সরা জ্ঞান করে সেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছেন। আইনের শতভাগ অপব্যাখ্যা দিয়ে সাধারণ সেবা গ্রহীতাদের প্রতি পদে পদে চরম হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। প্রতিটি ফাইল আটকিয়ে আদায় করেন লক্ষ লক্ষ টাকা। ঘুষগ্রহণের জন্য আসাদুজ্জামানের নিয়োগ করা আছে একাধিক কমিশনিং এজেন্ট।
তিনি অফিস রুমে বসেই নেশা করেন। তার নেশার মধ্যে রয়েছে হার্ড ড্রিংকস, সিগারেট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। জাগৃকের কর্মকর্তা, কর্মচারী বলেন ল অফিসার আসাদুজ্জামানের অফিস রুমের ভেতরেই না শুধু সামনে দিয়ে গেলেও তার নেশার ধোঁয়ায় ভালো মানুষও অসুস্থবোধ করে। জাগৃকে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে যে, আসাদুজ্জামানের ঢাকার মিরপুরে আছে জোড়া ৫ তলা বাড়ি, মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাট ও নিজের জেলার বাড়ি, টাংগাইলের ধনবাড়িতে রাজকীয় বাড়ি ও জমি ক্রয় করেছেন। নরসিংদীতে ইন্ডাস্ট্রি ও বাড়ি এবং প্রতিবেশী দেশ ভারতেও আছে দোকান, হোটেল ও বাড়ি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পছন্দের এবং সহকারী সাইফুজ্জামান শেখরের বন্ধুবর ও আশীর্বাদপুষ্ট আসাদুজ্জামান গত ১৫ বছরের সুবিধাভোগী।
সেবাপ্রার্থী প্রত্যেকের কাছ থেকে ফাইল প্রতি টাকার চুক্তি করতেন। দুর্নীতিবাজ, ক্ষমতাবান এই আসাদুজ্জামান ৫ই আগস্ট ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থান নিয়ে কটাক্ষ করেন। মিরপুরের একাধিক স্থায়ী বাসিন্দারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান দুর্নীতিবাজ আসাদুজ্জামানের আছে মাকড়শার জালের মতো সিন্ডিকেট। তিনি নিজেকে মনে করেন জাগৃকের অলিখিত বাদশা। জাগৃকের যেকোনো শাখায় ঘুষ বনিবনা না হলেই, সে ফাইল যায় আইন শাখায়।
তারপর চলে সেই ফাইলের উপর সার্জারি। মেজর মাইনর সবই করেন আসাদুজ্জামান নিজেই। ঘুষের টাকা জায়েজ করার জন্য সখ্যতা করেছিলেন পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজিরের সাথে৷ বেনজিরের সাথে তার ব্যবসায়িক পার্টনারশিপ আছে বলে অনেকেই ধারণা করেন। আসাদ বলে বেড়ান পূর্বের নিয়মে এখনো আমার সিস্টেমে চলে অফিস।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে জাগৃকের একাধিক কর্মকর্তা আফসোস করে বলেন, এই গডফাদার আসাদুজ্জামান সিন্ডিকেট সব কাগজ ঠিক থাকলেও একটি ফাইল সাক্ষর করতে নেন লাখ টাকা, আর ডেভলপার হলে নেয় কোটি টাকা। দুর্নীতিবাজ, ক্ষমতাবান আসাদুজ্জামান ঘুষের অবৈধ টাকায় ফুলেফেঁপে উঠেন। তিনি সাধারণ মানুষের রক্ত ঘামের টাকা দিয়ে গড়ে তুলেছেন অবৈধ বিপুল সম্পদ।
অভিযোগের বিষয়ে এ প্রতিবেদক জাগৃক চেয়ারম্যান (অতি : সচিব) নুরুল বাসিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে জানান যে এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং সেগুলো নিয়ে তার অভিসংষোনের কাজ চলছে। এ বিষয়ে আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার কারণে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে দূর্বব্যহার করেছেন। এমনকি সাংবাদিকদের তিনি থুরাই কেয়ার করেন বলে জানান।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি