এমএইচ চৌধুরীঃ
২০২৫ শিক্ষাবর্ষের নবম ও দশম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ পাঠপুস্তকে “আদিবাসী” শব্দ বাতিল ও এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অপসারণ পরবর্তী শাস্তির দাবিতে “জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
১২ জানুয়ারি রবিবার সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীরা এনসিটিবির সামনে ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ সংগঠনের ব্যানারে এই বিক্ষোভ শুরু করেন।
সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহম্মদ ইয়াকুব মজুমদার বলেন, “আমরা বিক্ষোভ করছি, বিচ্ছিন্নতাবাদী ও রাষ্ট্রদ্রোহী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী’কে ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যারা পাঠ্যবইয়ে আদিবাসী শব্দ যুক্ত করেছেন তাদের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে এই মানববন্ধন বলে মন্তব্য করেন, যুগ্ম আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহম্মদ মুহিউদ্দিন রাহাত। তিনি বলেন, একাধিকবার আল্টিমেটাম দেওয়া সত্ত্বেও ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ৯ম-১০ম শ্রেণির “বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি” বই থেকে বিতর্কিত এবং রাষ্ট্রদ্রোহী “আদিবাসী” শব্দ প্রত্যাহার না করায় এনসিটিবি ঘেরাও করে বিক্ষোভ কর্মসূচি করতে বাধ্য হয়ছি। স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এই সংগঠন “স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি”।
আন্দোলনকারীরা বলেন, পরিমার্জন কমিটিতে থাকা রাখাল রাহা ওরফে সাজ্জাদকে এখনই অপসারণের ঘোষণা এবং পাঠ্যপুস্তকে “আদিবাসী” শব্দ অন্তর্ভুক্তি অনুমোদন করায় এনসিটিবি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগসাজশ থাকা কর্মকর্তাদের পদত্যাগসহ আন্দোলনকারীদের দেওয়া পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারি ঘোষণা না এলে ঘেরাও কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান। এসময় তদন্ত কমিটি গঠন ও জড়িতদের অপসারণসহ শাস্তি দাবি করেন আন্দোলনকারীরা।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক জিয়া বলেন, “গত ৮ জানুয়ারি আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে লিখিত অভিযোগে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঠ্যপুস্তক থেকে বিতর্কিত ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী ‘আদিবাসী’ শব্দটি প্রত্যাহারের ঘোষণা চেয়েছিলাম। কিন্তু মন্ত্রণালয় আমাদের হতাশ করেছে। তাই দেশের স্বার্থে, দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার স্বার্থে এনসিটিবি ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “বইতে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংযোজন খুবই আপত্তিকর, অনাকাঙ্ক্ষিত, সংবিধানবিরাধী ও রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ, যা বিচ্ছিন্নতাবাদের পথ সহজ করবে। কারণ বাংলাদেশে একমাত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং তাদের দেশি-বিদেশি পৃষ্ঠপোষকতার- দোসররাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ‘আদিবাসী’ বলে প্রচার চালায় ও স্বীকৃতি চায়। তাদের এই প্রচার ও স্বীকৃতি চাওয়ার পেছনে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। ছলে-বলে-কৌশলে তাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের দেশে ‘আদিবাসী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে পার্বত্য চট্টগ্রাম’কে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নতুন একটি তথাকথিত স্বাধীন রাষ্ট্র ‘জুম্মল্যান্ড’ তৈরি করার পথ সহজ হবে। এনসিটিবিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সেই পৃষ্ঠপোষক ও দোসররাই ‘আদিবাসী’ শব্দটি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সরকারকে একটি তদন্ত কমিটি করে অতিদ্রুত এদের চিহ্নিত ও অপসারণ করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এরা দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেন।
আলোকিত প্রতিদিন/১২জানুয়ারি-২৫/মওম