প্রেস ক্লাবে হাজারো ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক,ভোগান্তিতে যাত্রীরা

0
36
প্রেস ক্লাবে হাজারো ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক,ভোগান্তিতে যাত্রীরা
প্রেস ক্লাবে হাজারো ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক,ভোগান্তিতে যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহার করাসহ ১১ দফা দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় জড়ো হয়েছেন হাজারো ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক। ফলে পল্টন-প্রেস ক্লাব এবং হাইকোর্ট এলাকার সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই পথে বাসে আটকে থাকা যাত্রীরা। ২৪ নভেম্বর রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে তারা এখানে আসেন। চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা কামরাঙ্গীরচর, সেকশন, হাজারিবাগ ও সেকশন এলাকা থেকে এসেছেন। টিটাগাং রোড এলাকা থেকেও আরও রিকশাচালক আসছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বিশাল একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট মাজার মোড়  এবং কদম ফোয়ারা হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আসেন। এ সময় তারা ‘ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন। পরে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে রাস্তায় বসে পড়েন।

প্রেস ক্লাবের সামনে একটি পিকাপ ভ্যানে লাল ব্যানারে সমাবেশ মঞ্চের আয়োজন করেছে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন। মঞ্চে ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখছেন।

dhakapost

গত ২৩ নভেম্বর শনিবার পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস ১১ দফা দাবি জানান। ইউনিয়নের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— দেশের সড়ক উপযোগী নকশায় আধুনিকায়নসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের বিআরটিএ লাইসেন্স ও যৌক্তিক রুট পারমিট দিতে হবে; চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করতে হবে; ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে; শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সড়ক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা কমিটি গঠন করতে হবে; সড়কের লেন পদ্ধতি সচল ও সার্ভিস লেন নির্মাণ করতে হবে; আন্দোলনে আটক এবং গ্রেপ্তারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে; ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে গণপরিবহন ও শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে; জব্দ করা সব ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও ব্যাটারি মালিকের কাছে হস্তান্তর ও নিলামকৃত ব্যাটারির মালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে; চার্জিং স্টেশন নির্মাণ করতে হবে; মানবিক বিবেচনায় ব্যাটারিচালিত যানবাহনের পুঁজিকে নিরাপদ করে পর্যায়ক্রমে প্যাডেলচালিত বাহনের শ্রম থেকে মানুষকে মুক্ত করতে হবে এবং শ্রমিকদের ওপর সব জুলুম-নির্যাতন-চাঁদাবাজি-হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলন আব্দুল কুদ্দুস বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে সৃষ্ট যানজটের দায় নগর পরিকল্পনাকারীদের না দিয়ে সব সময় দায় এড়াতে এ দেশের গরিব-মেহনতি মানুষের ঘাড়ে চাপানো হয়। একটি আদর্শ নগরে ২৫ শতাংশ সড়ক থাকতে হয়, কিন্তু ঢাকা মহানগরীতে আছে মাত্র ৮ শতাংশ। যার ৭৫ শতাংশই দখল করে আছে ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ি। ফলে নগরীর যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও ব্যক্তিগত গাড়ি। সরকার যানজট নিরসনে পরিকল্পিত নগরায়ণ এবং ব্যক্তিগত গাড়ি অনুৎসাহিত না করে উপরন্তু গরিবের বাহন বন্ধের মধ্য দিয়ে জনগণের আইওয়াশ করছে, যা সমস্যার সমাধান না করে আরও নতুন নতুন সমস্যার জন্ম দিয়ে চলেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম করে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। তারা একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করতে চায়। দেশের সব থেকে নিপীড়িত ও বৈষম্যের শিকার শ্রমজীবী মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের অবসান না ঘটিয়ে দেশকে বৈষম্যমুক্ত করা সম্ভব নয়।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৪ নভেম্বর-২৪/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here