বিনোদন ডেস্ক-
ক্যালেন্ডার বলছে আর মাত্র কয়েকদিন পূজা এসে গিয়েছে। তারপরই শুরু সনাতন ধর্মালম্বীদের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা হবে। জন্মাষ্টমীর দিন থেকে প্রত্যেক বছরই মল্লিক বাড়িতে ঠাকুর গড়া শুরু হয়ে যায়। এই বছরও তার অন্যথা হয়নি এখনো। তবে এ বছর কলকাতার পূজার পরিবেশ যেন বাকি বছরগুলোর তুলনায় আলাদা হচ্ছে।
পূজার চেনা গন্ধটা নেই ওপার বাংলার বাতাসে। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছে রাজ্য। সেই প্রতিবাদের ঢেউ গিয়ে পৌঁছেছে সমগ্র ভারতে। গোটা কলকাতায় এখন একটা দাবিতে সরব, তরুণী চিকিৎসকের হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবী।
আর এই পরিস্থিতির মধ্যেই ১০০ বছরে পা রাখছে মল্লিক বাড়ির দুর্গাপূজা। এই পূজোর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত রঞ্জিত মল্লিক ও কোয়েল মল্লিক। প্রতিবছর মহাসমারোহে ধুমধাম করে এই দুর্গাপূজা উদ্যাপন করে মল্লিক বাড়ির সদস্যরা। ভবানীপুরের আদি পূজা সর্বজনবিদিত৷ সকলেই আসে এই পূজা দেখতে এখানে।
তবে এ বছর সেই মল্লিক বাড়িতে পূজার রেশ নেই এবার। আরজি কর কাণ্ডের আবহে অত্যন্ত মন খারাপ মল্লিক বাড়ির প্রতিটা সদস্যের। তাই চিরাচরিত প্রথা ও নিয়ম-উপাচার মেনে পূজা হলেও , তবে থাকছে না বড় কোনো আয়োজন।
রঞ্জিত মল্লিক বলছেন, “১০০ বছরে এই প্রথম আমাদের বাড়ির পূজা জনসাধারণের জন্য হবে না এবার। তার প্রথম কারণ অবশ্যই আরজি কর আবহ। এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে পূজো হবে বটে, কিন্তু উৎসব নয়। প্রত্যেক বছর মল্লিক বাড়ির ঠাকুর দালানের দ্বার অবারিত থাকে। এই বছরে সেটা আমরা রাখতে পারছি না। ফলে সাধারণ মানুষদের মল্লিকবাড়ির ঠাকুর দেখতে একটু সমস্যা হতে পারে।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা নিজেরাই বিব্রত রয়েছি। পূজা মানেই যে অনাবিল আনন্দ, শিশুরা যেন পাখির মতো উড়ে বেড়ায়.. সেই আনন্দের আবহে এই বছর ভাটা পড়েছে। দ্বিতীয় কারণ হলো, এবার পূজা ১০০ বছরে পা দিলো। ফলে আমাদের অনেক আত্মীয় এবার আসছেন। বাড়িতেই অনেক মানুষ থাকবেন, সেই কারণে আর সাধারণ মানুষদের জন্য এই বছর বাড়ির দরজা খোলা রাখা হবে না এবার। তবে মানুষের এতে অসুবিধা হলে আমরা দুঃখিত তার জন্য।
প্রতি বছর মল্লিক বাড়ির দুর্গাপূজা দেখতে বহু মানুষের ঢল নামে। তেমনই প্রতিমা দর্শনের পাশাপাশি তারকাদের দর্শন পাওয়া থাকে বাড়তি পাওনা। তবে এবার আনন্দের আড়ালেই মনের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে একরাশ দুঃখ।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি