আজ বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।   ১ মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

টাঙ্গাইলে একইস্থানে আ. লীগের দুই গ্রুপের সমাবেশ আহ্বান,ককটেল বিস্ফোরণে জনমনে আতঙ্ক

-Advertisement-

আরো খবর

সবুজ সরকার:
একই জায়গায় সমাবেশ আহ্বানকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ১৭ এপ্রিল বুধবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে শহরের পৌর ভবনের সামনে দুটি, শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানের পূর্ব পাশের কোনায় একটি, শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে একটি ও টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিকট শব্দে দফায় দফায় বি‌স্ফোরণের পর সাধারণ মানুষ আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে। মুহূর্তেই নিরালা মোড়সহ পুরো শহর ফাঁকা হয়ে যায়।
পরে পুলিশের একটি দল পৌর ভবনের সামনে থেকে অবিস্ফোরিত তিনটি তাজা বিস্ফোরক উদ্ধার করে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের ডাকা মিছিল ও সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ। জানা যায়, বৃহস্পতিবার শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের একই সময়ে দুটি সমাবেশ আহবান করেছে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে আতঙ্ক তৈরি করার লক্ষ্যে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। বি‌স্ফোরণের ঘটনার পর পরই শহরে পুলিশ ও বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া শহরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে চারজন হেলমেট পরিহিত আরোহী পৌর ভবনের সামনে এসে হঠাৎ দুটি বি‌স্ফোরণ ঘটায়। এসময় মোটরসাইকেল থেকে তারা আরো দুটি বিস্ফোরক ছুড়লেও তা বিস্ফোরিত হয়নি। পরে একটি মোটরসাইকেল বিন্দুবাসিনী বালক বিদ্যালয়ের পেছনের সড়ক দিয়ে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় ঈদগাহ’র দিকে চলে যায়। অপর মোটরসাইকেলটি ক্লাব রোড হয়ে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের দিকে চলে যায়। টাঙ্গাইল সদর থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাকিব জানান, কে বা কাহারা মোটরসাইকেল যোগে এসে পৌর ভবনের সামনে দুটি বি‌স্ফোরণ ঘটিয়েছে। তিনটি অবিস্ফোরিত বিস্ফোরক উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করা জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার জানান, আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ বৃহস্পতিবার সকালে মিছিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে বি‌স্ফোরণ ঘটনার পর তাদের মিছিলের অনুমতি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। শহরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, যারা এই বি‌স্ফোরণ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের অভিযান শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ ‘পৃথক দুটি ব্যানারে’ বৃহস্পতিবার একই স্থানে একই সময়ে সমাবেশের আহ্বান করেছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে চলছে উত্তেজনা। এক পক্ষ টাঙ্গাইলের সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় শহরের শহীদ স্মৃতি উদ্যানে একটি সমাবেশ আহ্বান করেছে। ধর্ষণ মামলার আসামি শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ থেকে সদ্য অব্যাহতি প্রাপ্ত গোলাম কিবরিয়া বড় মনিকে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করছে। অপরপক্ষ জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে একই দিন একই সময় শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করে।
এর নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বালা মিয়া, ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনির এমপি ও ফেডারেশনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন। তানভীর হাসান টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া তাঁর ভাই।
টাঙ্গাইলের সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারের নেতৃত্বে রয়েছেন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এবং শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম সিরাজুল হক, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহজাহান আনছারী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহেল।
আলোকিত প্রতিদিন / ১৮ এপ্রিল-২৪ /মওম
- Advertisement -
- Advertisement -