নির্বাচন নয়, পাঁচ সিটিতে জাস্ট ভোটাভুটি হয়েছে: বদিউল আলম

0
2601

বিশেষ প্রতিবেদক:

সদ্য সমাপ্ত পাঁচ সিটির নির্বাচন ভালো হয়েছে দাবি করে জাতীয় নির্বাচনে তা উৎসাহিত করবে বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এমন ভোটে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থাও বাড়বে বলে মনে করেন সিইসি। তবে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন সিটি নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের আস্থা বাড়েনি। বাড়বেও না। পাশাপাশি ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনাও দেখছেন না তিনি। বদিউল আলমের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত পাঁচ সিটি নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। এটা নির্বাচন নয়, জাস্ট ভোটাভুটি হয়েছে। এই নির্বাচনের ফল অনেকটা পূর্বনির্ধারিতও ছিল। পাঁচ সিটির ভোট নিয়ে সার্বিক মূল্যায়ন জানতে চাইলে এসব কথা বলেন সুজন সম্পাদক।গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর ১৯ দিন পর ১২ জুন বরিশাল ও খুলনা সিটির ভোট হয়। গত বুধবার (২১ জুন) সিলেট ও রাজশাহীর মধ্যে দিয়ে পাঁচ সিটির ভোটগ্রহণ শেষ হয়।রাজশাহী ও সিলেটের ভোটগ্রহণ শেষে গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাঁচ সিটি নির্বাচন ভালো হয়েছে। এই নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনকে উৎসাহিত করবে। ভোটারদের উৎসাহিত করবে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে আগ্রহবোধ করবেন। তারপরও ভবিষ্যতেরটা ভবিষ্যতে দেখব।’ সিইসির মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে সুজন সম্পাদক বলেন, ‘এখানে নির্বাচন কোথায় পেলেন? এটা তো একটা জাস্ট ভোটাভুটি হয়েছে। এখানে তো কোনো বিকল্প ছিল না। প্রধান বিরোধীদল অংশ নেয়নি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও শেষ সময়ে সরে গিয়েছে। সে হিসেবে এটাকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলা যায় না। কারণ এই নির্বাচনের ফলাফল অনেকটা পুর্ননির্ধারিত ছিল।’ ইসির প্রতি আস্থা বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে বদিউল আলম বলেন, সিইসি বলেছেন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আস্থা বাড়বে। কিন্তু অন্য কেউ তো এই ভোটেই আসেনি। কেন অন্য দল আসেনি? নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা নেই।’
বর্তমান ইসির অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কতটা আশাবাদী-এমন প্রশ্নের জবাবে সুজন সম্পাদক বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের হিসাব-নিকেশ ভিন্ন। সেই নির্বাচনে ক্ষমতা বদল হবে। আরও অনেক বিষয় থাকবে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনের যে আইনী ও সাংবিধানিক কাঠামো তা ক্ষমতাসীনদের বিজয় নিশ্চিত করে। সেখানে অন্যদের সুযোগ নেই। তাই ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে সেই আশা দুরাশা মাত্র।’ স্থানীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক নয় বলে অনেকে বলছেন। আপনিও কি তাই মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শুধু রাজনৈতিক দল নয়, ভোটারদেরও নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই। ইসি ও নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর তাদের আস্থা নেই। যে কারণে ভোটাররাও আসেনি।’ ইভিএমে ভোটে ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে। পছন্দের প্রতীক আসেনি এমন অভিযোগও করা হয়েছে। এমন বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে বদিউল আলম বলেন, ইভিএমের কল্যাণে যে ভোটার উপস্থিতি দেখানো হয়েছে সেটাও ঠিক কি না দেখতে হবে।’ তাহলে কী ইভিএমে ট্যাম্পারিংয়ের সুযোগ আছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ইভিএমে টেম্পারিংয়ের সুযোগ আছে। এটা একটা নির্দিষ্ট যন্ত্র। এটা দিয়ে ফল পরিবর্তন করা সম্ভব। এটা গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি না।’ বদিউল আলম বলেন, প্রতিবাদের মুখে নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এটি ব্যবহার ঠিক হয়নি।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৬ জুন ২৩/ এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here