সকাল ১০:০৭ | রবিবার | ১৪ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জিলকদ ১৪৪৪ হিজরি

সকাল ১০:০৭ | রবিবার | ১৪ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জিলকদ ১৪৪৪ হিজরি

তার চলে যাওয়া যে দেখেছে সে চোখ ফেরাতে পারেনি ।। খান রিফাত

-Advertisement-

আরো খবর

- Advertisement -
- Advertisement -

আলোকিত সাহিত্য:

তার চলে যাওয়া যে দেখেছে সে চোখ ফেরাতে পারেনি

খান রিফাত

 

- Advertisement -

অবচেতন অবস্থায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে বাসেদ। প্রেমিকার হাতে হাত রাখার পিপাসায় ছটফট করছিল।বাসেদের প্রেমিকা তা জেনেও ছুটে যায়নি। তবে তার প্রেমিকা ছুটে গিয়েছিল। উৎসবে মেতে উঠেছিল, চমৎকার হাসতেছিল, ছুটোছুটি করতেছিল। তাকে দেখতে এমন বোধ হচ্ছিল, মনে হচ্ছিল যেন তার মনে কখনও বাসেদ নাহি ছিল। সে উড়ে উড়ে, ঘুরে ঘুরে; নীড়ে ফিরলো। তখন হাসপাতালের বেডে শুয়া, বাসেদেরও জ্ঞান ফিরলো আর দেখলো; তাকে যে সবসময় পাশে থাকবে বলে কথা দিয়েছে সে তার পাশে নেই। তাকে যে ভীষণ ভালোবাসি বলেছিল সে তার সাথে নেই, তাকে খোজ ও নিতে দেখা যায়নি। একটু উঠে বসবার শক্তি পেয়ে বাসেদ পিঠে বালিস ভর করে বসলো। তার মাকে প্রশ্ন করলো –

বাসেদ : মা.। শ্রাবন্তী কী ফোন করেছিল?

তার মা : না ফোন করে নাই..

বাসেদ : আমার মোবাইল কোথায়?

তার মা : তোর ফোন বাসায় ফেলে আসা হয়ছে..

বাসেদ : আমার ফোনে ফোন করো ফোনটা নিয়ে আসতে বলো আমি দেখবো শ্রাবন্তী আমার খোজ         নিয়েছে কিনা।

তার মা : তোর ফোন বন্ধ বাবা।

বাসেদ : আমার কি হয়েছিল , আমাকে শুয়িয়ে কোনোলা কোনো লাগিয়ে রাখা হয়েছে কোনো?

তার মা : তুই শ্রাবন্তীর সাথে ফোনে কথা বলার পর মোবাইলটা ছুরে মেরে উত্তেজিত হয়ে জ্ঞানহারীয়ে ফেলছিলি, আমরা অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তারপর তোর বাবা তোকে নিয়ে এসেছে।

বাসেদ : মা, তুমি শ্রাবন্তীকে ফোন করো না , আমার ওর গলার আওয়াজ শুনতে ইচ্ছে করছে

তার মা : কেন ফোন করবো , তোর ছো্ট ভাইয়ের থেকে ও জানতে পারছে তারপরও খোজ নেই নি ও তোকে সেত্যি বলতে ভালোবাসে না ও চায় তুই মরে যা ।

 

এই বলে নার্সকে ঢাকতে গেলো বাসেদের মা তার জ্ঞান ফিরেছে তা জানাতে। নার্স এবং ডাক্তার দুজন এসে বাসেদের টেষ্ট রির্পোট দেখে তাকে একটুক চেকআপ করে বললো সুস্থ আছে। সেলাইনটা দেয়া শেষ হলে নিয়ে যেতে পারেন। বাসেদকে নিয়ে বাসায় যাওয়া হলো বাসেদকে অনেকগুলো ইনজেকশন দেয়াতে তার শরীর দুর্বল তিনি শুয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছে।

সন্ধ্যা পার হয়ে রাত হলো তখন শ্রাবন্তি ফোন করলো বাসেদের মায়ের ফোনে , ফোন দিয়ে ফরমালিটি পালন করছে বুঝা গিয়েছে। কেটে গেলো সেদিন।

বাসেদকে ডাক্তার নির্দেশনা দিয়েছিল উত্তেজিত হওয়া যাবে না, উচ্চ স্বরে কথা বা চিৎকার করা যাবে না সবসময় নরম প্রকৃতির হয়ে থাকতে।

তারপরের দিন থেকে বাসেদ তা অনুসরণ করতে লাগলো , হঠাৎ তার শ্রাবন্তির ফোন আসলো তার শ্রাবন্তির সাথে যখনই সে ফোনে আলাপ করত তখনই তার শ্রাবন্তি উত্তেজিত করে তুলতো অকারণে ভুল বুঝত জাগড়া করত মেয়েটি। তাই বাসেদ ফোন ধরেই আগে বল্ল ডাক্তার আমাকে নিরব থাকতে বলছে উত্তেজিত হতে মানা করেছে তুমি আমার সাথে দয়া করে এমনভাবে আচরণ করো না যাতে আমি উত্তেজিত হই। একথা বলার পর তার শ্রাবন্তি তাকে আরো বেশি উত্তেজিত করে তুলল। বাসেদ ফোন রেখে দিল। তারপরের দিন ভোর সকালে বাসায় কাউকে না জানিয়ে ছুটে গেল গ্রামে তার শ্রাবন্তির কাছে বেচারা ভেবেছিল সামনা সামনি দেখা হলে হয়ত তাদের ঝামেরা গুলো হবে না সবঠিক হয়ে যাবে।

তো বাসেদ শ্রাবন্তিকে দেখে লুকিয়ে লূকিয়ে পেছন থেকে তার চোখ আটকিয়ে ধরলো শ্রাবন্তি বুঝতে পেরে ছরে গিয়ে বলল ‘তুমি আমাকে ছোয়ার সাহস কিভাবে পেলে’ বাসেদ একথা শুনে মন খারাপ তেমন করেনি । বেচারা বাসেদ ভালোবেসে শ্রাবন্তির টানে ছুটে গেছে আর শ্রাবন্তি তাকে অবহেলা করে দূরে দূরে রাখতেছে । হঠাৎ বাসেদ তার শ্রাবন্তির মুখের মাস্ক টান দিলো কারণ সে তার চেহারা বহুদিন দেখেনি। তারপর শ্রাবন্তি রাগারাগি করে সেখান থেকে চলে গেল। বাসেদ আর পিছু নিলো না , এক নজরে তাকিয়েছিল শ্রাবন্তির চলে যাওয়ার দিকে। সে ভেবেছিল শ্রাবন্তি তার দিকে পিছন ফিরে তাকাবে কিন্তু তাকালো না চলে গেল। বেচারা বাসেদ অপলক দৃষ্টিতে তার শ্রাবন্তির চলে যাওয়ার দিকেই তাকিয়ে রইল তবুও আশাহত হননি যদি পিছু ফিরে চায় তবে শেষমেষ আশাহত হলো সে।

 

তারপর সে সিগারেট জ্বালিয়ে বসে বসে ভাবতে লাগলো কেন সে এমন করলো ঠিক তখনই শ্রাবন্তি কল দিয়ে বল্ল আমার কানের দুল হারিয়ে গিয়েছে তুমি যখন আমার মাস্ক টান দিয়েছিলে তখন খুলে পড়ে গিয়েছে যেভাবেই হোক খুজে এনে দাও আমার মা আমাকে বানিয়ে দিয়েছে নাহলে খবর আছে ।

 

বাসেদ দেরি না করে খুজতে শুরু করলো অনেক সময় খুজে খুজে পেয়ে গেলো। তারপর সে তার শ্রাবন্তিকে কল করে বল্ল খুজে পেয়েছি শ্রাবন্তি তাকে বল্ল সাহা পাড়ার রাস্তায় এসো। বাসেদ বুক ভরা আশা নিয়ে ছুটে গেল যদি সে ফিরে আসে । শ্রাবন্তি এলো বাসেদ তার পায়ে পরে হাও মাও করে কাদতে লাগলো শ্রাবন্তি লাথি মেরে পা থেকে তাকে ছুটালো বাসেদ তারপর তার হাত ধরে কেদে কেদে বুঝাতে লাগলো শ্রাবন্তি হাত টান দিয়ে সড়িয়ে নিলো বাসেদ না পেড়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো জড়িয়ে ধরে তার কপালে চুমু খেলো তাকে তাদের ছয় বছরের স্মৃতি মনে করালো তখন শ্রাবন্তি বল্ল সেসব কবেই ভুলে গেছি বাসেদ দেয়ালে তার নিজের মাথায় আঘাত করতে থাকলো অজস্র।

 

অসহ্য হয়ে বাসেদ শ্রাবন্তিকে বল্ল দয়া করে এমন করো না চলো সব ভুলে তোমার মত করে শুরু করি ।

শ্রাবন্তি কিছু না শুনে চলে যেতে লাগলো তার চলে যাওয়া দেখে বাসেদের বুকে চিলিক মেরে উঠলো বুকের ব্যাথায় বাসেদ মাটিতে বসে পরলো তাকিয়ে রইলো শ্রাবন্তির চলে যাওয়ার দিকে শ্রাবন্তি একবারও ফিরে তাকালো না……….

.

.

এম.এইচ

 

- Advertisement -
- Advertisement -

সর্বশেষ