আজ বুধবার, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ৬ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গয়াল পালন হচ্ছে, বাড়ছে আগ্রহ

-Advertisement-

আরো খবর

অনলাইন ডেস্ক

- Advertisement -
- Advertisement -

বুনো গরু ‘গয়াল’ দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে সুপরিচিত নাম হলেও সমতলে এ গরুটি অনেকটা অপরিচিত মনে করেন। গরুটি পাহাড়ি গরু বা বুনো গরু নামে অধিক পরিচিত। দেশের পাহাড়ি গ্রামগুলোর বাসিন্দারা বহুদিন আগে থেকে গভীর বন থেকে এই গরু ধরে লালন-পালন করছেন তারা। দেশের পার্বত্য বনাঞ্চলের গহীন অরণ্যের এই প্রাণীটির লালন-পালন এখন সমতল ভূমিতেও শুরু হয়েছে। পোষা গবাদি পশু হিসেবে চা বাগান এলাকা ও বাসা-বাড়িতে গয়ালের কদর বাড়ছে।  গয়াল বন্য গরুর একটি প্রজাতি বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র। তবে পুরোপুরি বুনো নয়। কিছুটা ভিন্ন প্রজাতির। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেট অঞ্চলের মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সমতলে রয়েছে ছয়টি গয়াল। এগুলো আনা হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শহরতলীর সোনাপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আলহাজ্ব দেলোয়ার হোসেন (বাচ্চু) বাড়িতে  দুটি গয়াল এবং মৌলভী চা বাগানের কম্পানি বাংলোতে চারটি গয়াল রয়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের মৌলভী চা বাগানে গত কয়েক বছর ধরে গয়াল লালন-পালন করা হচ্ছে। বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজমত মঈন শখের বশে এসব গয়াল লালন-পালন করছেন। গয়ালগুলোর দেখাশোনা করছেন বাগানের শ্রমিক মঙ্গল বাউরি ও আলফু মিয়া। চা বাগানের ভেতরে পান পুঞ্জিতে এলাকায় ঘাস খেয়ে বেড়ায় তারা। চা শ্রমিক মঙ্গল বাউরি বলেন, গত তিন-চর বছর ধরে আমি গয়ালগুলোকে দেখাশোনা করছি। বাগানে তিনটি গয়াল নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে একটি বাচ্চা দিয়েছে। এখন চারটি গয়াল আছে। আমি ও আলফু এসব গয়াল ভোরে বাগানের প্লান্টেশন বা নম্বর এলাকায় নিয়ে যাই। এসব এলাকায় গয়ালগুলো ঘুরেফিরে বনের পরিবেশই পাচ্ছে। পরে সন্ধ্যায় এদের তাদের থাকার জায়গায় নিয়ে আসি। চা বাগানের শ্রমিক জীবন কাহার বলেন, শখের বশে পালনের জন্য গয়াল থেকে চট্রগ্রাম থেকে আনা হয়েছে। গয়াল দেখতে অনেক কৌতূহলী মানুষ ভিড় করছেন। প্রতিদিন গয়াল দেখতে আসা উৎসাহীরা বাগানে ভিড় করেন। বিশেষ করে চা বাগানের শিশুদের আগ্রহ বেশি। মৌলভী চা বাগানের ফ্যাক্টরি ইনচার্জ বাসুদেব পাল বলেন, আমাদের বাগানের মালিক অত্যন্ত শৌখিন মানুষ। তিনি প্রাণীদের পরম মমতায় লালন-পালন করেন। গয়াল গরু ও ঘোড়া পালন তার শখ। আমাদের বাগানের এ চারটি ছাড়া সিলেট বিভাগের আর কোথাও গয়াল নেই। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অধিকাংশ বাড়িতেই গয়াল পালন করা হয়ে থাকে। মৌলভীবাজার জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস ছামাদ জানান, এই প্রাণীটি একেবারে বন্যও না, আবার গৃহপালিতও না।  বনেও থাকে, আবার ঘরেও থাকে। গয়াল অনেকে শখ করে পার্বত্য  চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে আসেন। আমাদের জানামতে, মৌলভী চা বাগানে চারটি ও সোনাপুর গ্রামে দুটিসহ মোট ছয়টি গয়াল পালন করা হচ্ছে। তবে আমরা খোঁজ নিচ্ছি, আর কোনো উপজেলায় গয়াল পালন হচ্ছে  কিনা। তিনি আরো বলেন, গরু-মহিষের চেয়ে গয়ালে মাংস পাওয়া যায় অনেক বেশি। হাড়ের পরিমাণ কম। চর্বি ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ অবিশ্বাস্যভাবে কম। স্বাদও চমৎকার। বান্দারবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বুনো গয়াল নিয়ে গবেষণা চলছে। আশা করি, শিগগিরই বাণিজ্যিকভাবে গয়াল পালনের উদ্বুদ্ধ করা হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/এপি

 

- Advertisement -
- Advertisement -