আজ বুধবার, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ৬ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মধ্যনগরে চোখ উঠা রোগের প্রাদুর্ভাব 

-Advertisement-

আরো খবর

এ,এম স্বপন জাহান
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায়  হঠাৎ করে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে । চোখ উঠা রোগের প্রকোপ থাকে সাধারণত   গ্রীষ্মকালে। তবে এবার শরৎকালে এ রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা দেশের মত মধ্যনগর উপজেলার  প্রতিটা ঘরে ঘরে চোখ উঠা রোগের মহামারি দেখা দিয়েছি।পূর্ণ বয়স্ক থেকে মধ্য বয়স্ক ও শিশুরাও এ রোগ থেকে রেহাই পাচ্ছে না।কারও কারও এক চোখ উঠলেও বেশির ভাগ মানুষের দু-চোখ একসাথে সংক্রমণ হচ্ছে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়-এ রোগকে কনজাংটিভাইটিস বলে।এ রোগের লক্ষন সমূহ হচ্ছে হঠাৎ করেই চোখ লাল হয়ে পানি পরা সহ চুলকানো। আবার অনেকেরই প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব হয়। চোখ উঠা রোগটি ছোঁয়াচে। আর এ কারনেই দ্রুত  একজনের কাছ থেকে অন্যজনের কাছে  ছড়াচ্ছে।
অনেকেই এ রোগ থেকে বাঁচতে কালো চশমা ব্যবহার করছে । সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার অধিকাংশ মানুষ এই ভাইরাস জনিত ছোয়াছে রোগে ভুগছে।গত কয়েকদিন ধরে উপজেলা হাসপাতাল, ফার্মেসি এবং পল্লী চিকিৎসকের কাছে চোখ ওঠা রোগীর উপচেপড়া  ভিড় লক্ষ করা গিয়েছে।এই ভাইরাস ছোঁয়াচে  রোগটি সাধারণনত ৬/৭দিনের মধ্যে ভাল হয়ে যাচ্ছে বলে রোগীরা সাধারণত চোখে কালো চশমা ও চোখের ড্রপ দিয়েই শান্ত থাকতে হচ্ছে।
এই ভাইরাস জনিত ছোঁয়াচে রোগের কারনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পরছে নিম্ন আয়ের মানুষ।যারা দিন মজুর চোখ উঠার করনে তারা কাজ করতে পারছে না ফলে জৈবিক চাহিদা পূরনের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।পাশাপাশি স্কুল, কলেজেও এ রোগের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ছে।
গড়াকাটা মডেল উচ্চ  বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল বলেন চোখ উঠা রোগ প্রকোপ হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ছাত্র ছাত্রী নিয়মিত স্কুলে আসতে পারছে না।এমন কি স্কুলের অনেকে শিক্ষকের মধ্যেও এ চোখ উঠা রোগ লক্ষ করা গেছে।
ইমাম হোসেন নামে একজন শিক্ষার্থী বলেন চোখ উঠা রোগ টি ছোঁয়াচে হওয়ায় পরিবারের একজনের হলে আরেকজনের মধ্যে  ছড়িয়ে পরছে।এমনকি যার হয়েছে তার দিকে তাকালেও সংক্রমণ হচ্ছে।এই রোগের কারনে আমার পড়াশুনার ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে।এমনকি আমি স্কুলেও যেতে পারছি না।সবসময় শুধু চোখ দিয়ে পানি ঝরে।মাঝে মাঝে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব  হয়।
উপজেলার বংশীকুন্ডা দঃ ইউনিয়নের পল্লি চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক বলেন  গত কয়েকদিন ধরে শুধু  চোখ উঠা রোগী লক্ষ করছি।প্রাথমিক অবস্থায় চোখের ড্রপ দিয়ে দিচ্ছি।বেশির ভাগ রুগী সেরে উঠলেও যাদের ভাল হচ্ছে  না তাদের কে  চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য আহবান করছি।
ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়,প্রতিদিন চোখ ওঠা রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মকর্তারা বলেন- কমিউনিটি ক্লিনিকে ইদানীং প্রচুর চোখ ওঠার রোগী আসছেন। আমরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে  ড্রপ এবং পরামর্শ দিচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্মপাশা  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মুসতানসির বিল্লাহ বলেন- চোখ উঠা সাধারণত একটি সিজনাল ভাইরাস জনিত ছোঁয়াচে রোগ।এতে আতংকিত হওয়ার কারন নেই। সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে এই রোগ সেরে যায়। সাবধানতা অবলম্বন করলে সহজেই এ ভাইরাস জনিত ছোঁয়াচে রোগ হতে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি
- Advertisement -
- Advertisement -