মাইনুল হাসান মজনু:
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সাম্প্রতিক বন্যায় পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে সৃষ্ট বন্যায় যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর চরাঞ্চলে পাটের জমিতে এ ক্ষতি হয়। টাকার অংকে ক্ষতির পরিমাণ ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা। উপজেলা কৃষি দপ্তর এ সংবাদ নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় কৃষক ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পাট চাষে লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৭ হাজার ১০ হেক্টর জমি। পাট চাষের শুরুতেই খরার কারণে পাট চাষে ধাক্কা খান চাষিরা। তবে চাষিরা বসে না থেকে সেচের পানিতে পাট বীজ বপন করেন জমিতে। এরপর কাংখিত বৃষ্টিপাত হলে পাটের আবাদে ঝুঁকে পড়েন চাষিরা। বাঙ্গালি ও যমুনা নদীর উর্বর চরের জমীতে ব্যাপক হারে পাট চাষ করায় লক্ষ্য মাত্রা অর্জন করেন চাষিরা। তবে পাট গাছ যখন ৬/৭ ফুট লম্বা হওয়ার পরপরই জমিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে পাটের আবাদ আক্রান্ত হয়। ৬২০ হেক্টর পাটের জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ পরিমান জমিতে ৪/৫ ফুট পরিমাণ পানি জমে থাকে। প্রায় ৮/৯ দিন এই পানি জমে থাকায় পাট গাছের গোড়ার অংশে অসংখ্য পরিমাণ শিকড় গজায়। চাষিরা পাট গাছের গোড়ার অংশের শিকড়কে স্থানীয় চাষিরা দাঁড়ি বলে থাকেন। এ দাঁড়ি গজানোর কারণে পাটের সোনালী আঁশের মান বহু অংশে কমে যায়। এ ছাড়াও পানি জমে থাকার কারণে অপরিপক্ক পাটগাছ মরে যায়। সদর ইউনিয়নের বাটির চরের কৃষক মোখলেছ আলী বলেন, আমি এবার যমুনা চরের ১০ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। পাট ফসল পানিতে আক্রান্ত হওয়ার কারনে এবার পাটের ফসলে আমি মার খেয়েছি। যেখানে প্রতি বিঘায় ৮/৯ মণ করে ফসল হওয়ার কথা সেখানে পেয়েছি মণ প্রতি মাত্র ৫/৬ করে। এবার পাটের আবাদে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো: আব্দুল হালিম বলেন, যমুনার চরাঞ্চলের চাষীরা পাট ফসলে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বীল এলাকার চাষীরা ভালো ফলন পেয়েছেন। এছাড়াও বাজারে এবার পাটের দামও ভালো। প্রতি মণ পাট বাজারে বেচাকেনা চলছে ২৬‘শ থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত। বন্যার কারনে চরাঞ্চলের চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও ভালো দামের কারনে সবাই লাভোবান হতে পারবেন বলে আশা করা যায়।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১০আগস্ট ,২০২২/ মওম


