অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে নতুন প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভা নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। জাতীয় ঐক্যের সরকার নামে গঠিত হবে এই মন্ত্রিসভা। ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টে এই সরকার একাধিক দলের সমর্থন পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, নতুন সরকারের প্রধান হিসেবে এগিয়ে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী এএফপিকে বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে কোনও বিঘ্ন না ঘটলে আজকেই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হতে পারে।’ বুধবার রাতে টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানান। বিরোধীদের আস্থা অর্জন করতে প্রেসিডেন্ট নিজের নির্বাহী ক্ষমতার বেশিরভাগই ছেড়ে দেওয়া ও এই সপ্তাহেই নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন। গোটাবায়া রাজাপাকসে বলেন, ‘আমি এমন একজন প্রধানমন্ত্রীর নাম দেবো যিনি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং জনগণের আস্থা অর্জন করবেন।’ গত সোমবার মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যান। তার সমর্থকেরা সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের চড়াও হওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি।এরপরও শ্রীলঙ্কায় সহিংস বিক্ষোভ অব্যাহত আছে। সরকারি দলের নেতাদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। কয়েক দিনের সহিংসতায় অন্তত নয় জন নিহত এবং আরও দুই শতাধিক আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জারি করা হয় কারফিউ। নিরাপত্তা বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে দাঙ্গাকারীদের দেখামাত্র গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ছয় ঘণ্টার জন্য কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়। প্রাথমিকভাবে প্রধান বিরোধী দল এসজেবি পার্টিকে নতুন সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। দলটির নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা জোর দিয়ে দাবি করেন প্রথমে প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগ করতে হবে। তবে এসজেবি পার্টি এবং আরও বেশ কয়েকজন পার্লামেন্ট সদস্য বিক্রমাসিংহেকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রনিল বিক্রমাসিংহে ১৯৯৩ সাল থেকে পাঁচ বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। তাকে পশ্চিমাপন্থী মুক্ত বাজার সংস্কারক হিসেবে দেখা হয়। রনিল বিক্রমাসিংহে তার দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির একমাত্র আইনপ্রণেতা। ২০২০ সালের আগস্টের নির্বাচনে দলটি শোচনীয়ভাবে পরাজিত হলে রাজাপাকসে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় বসেন।