রিপন সারওয়ার (মুক্তাগাছা)
মুক্তাগাছার সত্রাশিয়ার কুচিয়া যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এ কুচিয়া মাছ ধরে উপজেলার আদিবাসী, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনসহ বিভিন্ন ধর্মের শতাধিক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন। কুচিয়া দেখতে অনেকটাই সাপের মতো । এর রয়েছে বিভিন্ন নাম, কুঁচে মাছ, কুচিয়া, কুইচ্চা বা কুচে বাইম । এটি একটি ইল-প্রজাতির মাছ। বিশেষ করে কুচিয়া মাছ মানুষ বিভিন্ন রোগের প্রতিকারের জন্যও খেয়ে থাকেন।জানা গেছে, প্রায় প্রতিদিনই কুচিয়া মাছ ধরা হলেও বছরের নভেম্বর থেকে জুন মাস পর্যন্ত কুচিয়া মাছ ধরার উপযুক্ত মৌসুম । প্রতিদিন একজন শিকারি গড়ে ৩ কেজি থেকে ৬ কেজি পর্যন্ত কুচিয়া মাছ ধরতে পারে।কুচিয়া মাছ ব্যবসায়ী সুমন দাস দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার এ প্রতিনিধিকে বলেন, পুকুর অথবা জলাশয়ের ধারে ছোট ছোট গর্ত চিহ্নিত করে মোটা সুতার সঙ্গে বড়শি বেঁধে তার সঙ্গে কেঁচো অথবা ছোট ব্যাঙ লাগিয়ে গর্তের মধ্যে ফেলে একটু নাড়া দিলেই কুচিয়া মাছ বড়শিতে আটকে যায়। স্থানীয়ভাবে প্রতিকেজি কুচিয়া মাছ বিক্রি করি ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। ঢাকায় বিক্রি করি ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা মন। আমরা এসব ঢাকার নলভোগ খালপার এলাকার পাইকার দের কাছে এসব কুচিয়া মাছ বিক্রি করি। আমি সহ শেরপুরের নন্দ (৪০), ফুলপুরের লিটন (৩৫), হালুয়াঘাটের সুকাস (৪২), গাবতলীল রিদয় (৬০), সত্রাশিয়ার রাম যনত (৪০) ও রতন (৪৫) আমরা আট জন মিলে একটি গ্রুপ করে প্রতিদিন সকাল হলে কুচিয়া শিকার করতে বের হই। এছাড়াও হালুয়াঘাট, ভুইয়াপাড়া, দূর্গাপুর, নেত্রকোনা থেকেও আরও ১৫-২০ জন আসে এখানে। এখন সিজেন বিধায় আমার গ্রুপের লোক বিভিন্ন জায়গায় চলেগেছে কুচিয়া মাছ ধরার জন্য। তারমধ্যে সিলেট এবং নওগাতে বেশি। তবে আমরা সারাদিনে গড়ে ৩ থেকে ৬ কেজি কুচিয়া শিকার করতে পারি। সংগ্রহকৃত কুচিয়া মাছ এক সপ্তাহ পর যখন পরিমাণ ৬০-৭০ কেজি হয় সেগুলো আমরা ঢাকায় পাঠাই এছাড়াও হালুয়াঘাট থানার সূর্যপুর বাজারেও বিক্রির জন্য নিয়ে যাই। এভাবে কুচিয়া মাছ বিক্রি করে আমাদের পরিবার সংসার চলে।তিনি আরও বলেন, আমাদের সংগ্রহকৃত এ কুচিয়া মাছ প্রায় ছয় থেকে সাত বার হাত বদলের পর বিদেশে যে রপ্তানি করে তার কাছে যায়। এক সময় আমাদের গ্রুপে প্রায় ৬০-৭০ জন ছিল। কিন্তু করোনার কারনে কুচিয়া মাছ বিক্রি করতে না পারায় অনেকে এ কাজ ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন কাজে চলে গেছে। আমরা যদি কিছু সহযোগিতা পাই তাহলে অনেকেই এ কাজ করে সানন্দে সংসার চালাতে পারতো। তাই তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট সহযোগিতার আবেদন জানান।