প্রতিনিধি,মুন্সীগঞ্জ :
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার উত্তর রাঙ্গামালিয়া গ্রামের মাদবর বাড়ি ঘেঁষে ইছামতি শাখা খালে শত বছরেও নির্মিত হয়নি সেতু। ফলে হাজার হাজার মানুষ বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। জন্মের পর থেকে পারাপারে বাঁশের সাঁকোর ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। ভোগান্তির শেষ কবে হবে তা জানিনা। তবে মৃত্যুর পূর্বে সমাধান দেখে গেলে শান্তি পেতাম। কথাগুলো আক্ষেপ করে বলেন সিরাজদিখান উপজেলার উত্তর রাঙ্গামালিয়া গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধ মোঃ ইদ্রিস মাদবর। গুরুত্বপূর্ণ এ সাঁকোটি মাদবর পাড়া সহ আশেপাশের এলাকার মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা। বাঁশের সাঁকোটি প্রায় ২শত ফুট লম্বা। প্রতিদিন ওই এলাকার লোকজনের হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, কৃষি কাজ ও জেলা,উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়ের যেকোন কাজের জন্য এ সাঁকোটি পার হয়ে যেতে হয়। এলাকাবাসী জানান, শুরু থেকেই সাঁকোটির দুরবস্থা। সাঁকো থেকে পরে এ পর্যন্ত দুজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে, কয়েকজন পঙ্গু হয়েছে। অনেকের মূল্যবান মালামাল পানিতে পরে তলিয়ে গেছে। সাকোঁটির নীচ দিয়ে প্রতিদিন বালুবাহিত ট্রলার (বাল্কহেড), যাত্রী ও মালবাহি বিভিন্ন ধরনের নৌকা চলাচল করে। তাই প্রায় সময়ই ট্রলার ও নৌকার ধাক্কায় সাঁকো ভেঙ্গে কিংবা নড়বড়ে হয়ে যায়। তখন ঠিক না করা পর্যন্ত সাঁকো উপর মানুষ চলাচল বন্ধ থাকে। ওই সময়টাত নদী সাতরীয়ে পার হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এ নিয়ে চলাচলকারী ট্রলার/নৌকার চালকের সাথে এলাকাবাসীর প্রায়ই মনোমালিন্য, ঝগড়া-মারামারির সৃষ্টি হয়। রাতের অন্ধকার কিংবা বৃষ্টির সময় শিশু, বৃদ্ব কিংবা যে কোন লোকের পক্ষে পারাপার কঠিন হয়ে পরে। মাদবর বাড়ির মোঃ গিয়াসউদ্দিন জানায় যে, প্রতিবছর সাঁকোটি তাদের বাড়ির সকলের টাকায় মেরামত করতে হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে অবহিত করেও কোন কাজ হয়নি। এছাড়া সাঁকোটির দুরবস্থার চিত্র বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমেও প্রচারিত হয়েছে। তবে প্রতিটি নির্বাচনের পূর্বে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা সাঁকোটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচিত হওয়ার পর মনে রাখেনা। তাই এলাকাবাসী উক্ত সাঁকোটির স্থলে একটি পাকা ব্রীজ নির্মাণের জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘুরে বেরাচ্ছেন। সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, আমরা সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জনগণের স্বার্থে যদি ওখানে পাকা ব্রীজ নির্মাণ করার প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা অবশ্যই পাকা ব্রিজ নির্মাণ করার ব্যবস্থা করবো।
আলোকিত প্রতিদিন/ ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১/ আর এম