জামি রহমান রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিশ্বরোড সংলগ্ন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয় সুইড বাংলাদেশ মোহনপুর শাখার প্রধান শিক্ষক মোছা. শারমীন আক্তার। নিয়োগ পান গত চার বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ। নিয়োগ দেন ততকালীন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো. ওবাইদুল কবির। সম্পর্কের দিকদিয়ে ভগ্নিপতি অর্থাৎ শারমীন আক্তারের স্বামীর ছোট বোনের জামাই। আর ছোট বোন মোহনপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সানজিদা রহমান রিক্তা। তিনিও বিদ্যালয়টির সাবেক নির্বাহী সচিব ছিলেন এবং বর্তমানেও সেই সক্ষমতা ধরে রেখেছেন অনেকটা দাপটেই। যদিও পরবর্তীতে ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ১২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রধান শিক্ষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩ জানুয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানওয়ার হোসেন (সভাপতি) সাক্ষরিত নীতিমালা অনুযায়ী ১৩ সদস্য বিশিষ্ট বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনান্তে অনুমোদন দেয়া হয়। এতে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সানজীদা রহমান রিক্তাকে সদস্য পদমর্যাদা দেয়া হয়। এরপরেও সেই দাপটেই নিজের ভাই মো. মুনজুর কাদির মিঠু ও ভাবি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শারমীন আক্তারকে মিথ্যা চুরির অপবাদ দিয়ে কালেমা লেপনের চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগটি তদন্তে আমলের গ্রহনযোগ্যতা হারিয়েছে। এতেও ক্ষান্ত হননি রিক্তা। বর্তমানে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দাফতরিক বিষয় সকল কিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে কব্জা করেছেন সাবেক নির্বাহী সচিব ও বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রিক্তা।
এদিকে, নিজের ভাই ভাবিকে নিজের কব্জায় রপ্ত করতে শুরু করেছেন পারিবারিক নির্যাতনও। আরেক বোনের ছেলেদের দিয়ে বড় ভাইয়ের সম্পদ দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সেক্ষেত্রে সবই করছেন উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের ক্ষমতা ব্যবহার করে। মঙ্গলবার মোহনপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমনভাবেই সবকিছু বর্ননা করেন রিক্তার রোষানলের শিকার আপন বড়ভাই মিঠু ও তার স্ত্রী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শারমীন আক্তার।লিখিত বক্তব্যে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে গত ২৩ মে ২০২১ রবিবার এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মোহনপুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয় সুইড বাংলাদেশ মোহনপুর শাখার বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত আবেদন করেন ভুক্তভোগী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শারমীন আক্তার।লিখিত অভিযোগে শারমীন আক্তার বলেন, আমাকে নিয়োগ দেয়ার পরবর্তী নিয়োগ বোর্ড কর্তৃক যত নিয়োগ হয়েছে সে বিষয়ে আমাকে অবগত করা বা নিয়োগ পত্রের কোথাও আমার সাক্ষর নেয়া হয়নি। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের আয়ব্যয় এর রেজুলেশন ও হিসাব দেখায়নি সাক্ষরও নেয়নি। প্রতিষ্ঠানের সকল কাগজ নিজের হেফাজতে রাখে। আমি জানতে চাইলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। চলমান করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে লক ডাউনের কারনে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমি অফিস সহকারীকে নিয়ে আমার কার্যালয় থেকে আমার প্রয়োজনীয় কাগজ বাসায় নিয়ে আসি। আর একারণেই তিনি আমার ও আমার স্বামীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ আনেন। পরে বিদ্যালয়ের সকল কিছু তালাবদ্ধ করে রাখে সাবেক নির্বাহী সচিব ও বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রিক্তা ও সাবেক সহ-সভাপতি শ্রী দিলিপ কুমার সরকার। তাই বর্তমানের প্রধান শিক্ষক হিসেবে আমার সকল কার্য সম্পাদনে জটিল সমস্যা দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধানের লক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান, শিক্ষা অফিসার, সমাজসেবা অফিসার, স্থানীয় ও জেলা প্রেসক্লাবে আবেদনের অনুলিপি পাঠানো হয়। এ বিষয়ে সানজীদা রহমান রিক্তা বলেন, যার কাছে অভিযোগ হয়ে আপনি তার সাথে কথা বলেন। এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলবোনা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি মো. সানওয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিদ্যালয়ের কমিটির সদস্যদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৯ জুন, ২০২১/ এম এইচ সি