সৈয়দ এনামুল হুদাঃ মানিকগঞ্জে বন্যায় বিপুল পরিমাণ মৎস চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার মাছ চাষি আমিনুল ইসলাম। চলতি বছর ধারদেনা করে উপজেলার পার তিল্লিতে ১ একর জমিতে দেশীয় জাতের মাছ চাষ করেছিলেন তিনি। সেখানে প্রায় ৫ লাখ টাকার পোনাসহ বিক্রির উপযোগী মাছ ছিল। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও বন্যার পানি বৃদ্ধিতে পুকুরগুলো ডুবে গিয়ে সব মাছ ভেসে গেছে। এখন সংসার চালানোতো দূরের কথা, ধারদেনা কীভাবে শোধ করবেন এই নিয়ে চিন্তিত তিনি। শুধু আমিনুল ইসলাম নয়, বন্যার পানিতে মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানের অসহায় মাছ চাষীদের মাছ ভেসে গেছে। আমিনুল ইসলাম জানান, আমরা কয়েকজন বন্ধুরা অনেক টাকা সুদে ধার করে পুকুরে মাছ চাষ করেছিলাম। এছাড়া মাছের খাবারের দোকানেও বাকি আছে আরও অনেক টাকা। হঠাৎ বন্যায় পুরো এলাকায় পানি উঠে যাওয়ায় পুকুরের সব মাছ ভেসে গেছে। এখন সংসার কীভাবে চলবে আর ঋণের টাকাসহ দোকানের বাকি টাকা পরিশোধ কীভাবে হবে এই নিয়ে চিন্তিত তিনি। মানিকগঞ্জে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মাষ চাষীদের সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা মৎস অফিসার ড. মোঃ মনিরুজ্জামান আলোকিত প্রতিদিনকে বলেন, বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাসে যখন মানুষ দিশেহারা ঠিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হচ্ছে। মানিকগঞ্জ জেলার ৭ উপজেলার মাঝে শিবালয়, দৌলতপুর, হরিরামপুর এবং সাটুরিয়ার মৎস চাষীরা সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে ঘিওর এবং সিংগাইরে তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতি হয়েছে। তিনি বন্যায় জেলার মৎস চাষীদের ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থা তুলেধরে জানান, রবিবার (১৯ জুলাই) পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে জেলায় এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পুকুরের সংখ্যা হলো ২১০৭ টি, খামার মালিকের সংখ্যা ১৫৪৬ টি, ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ ৬৩৮ মেট্রিকটন এবং বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া পোনার পরিমাণ ১১২ লক্ষ। সর্বমোট ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে তিনি জানান, বন্যায় ভেসে যাওয়া মাছ, পোনা এবং অবকাঠামোসহ ক্ষতির পরিমাণ ৯ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা। জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের অবস্থা মন্ত্রণালয়ে প্রতিদিন পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।
আলোকিত প্রতিদিন/১৯ জুলাই’২০/এসএএইচ