গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, পানিবন্দি দুই লক্ষাধিক মানুষ

0
326

সংবাদদাতা,গাইবান্ধা: নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গাইবান্ধার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা,গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।  ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি ৯৩ সেন্টিমিটার ও করতোয়া নদীর পানি ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, পানির চাপ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ফুলছড়ি উপজেলার ভাষারপাড়া ও মাঝিপাড়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং গাইবান্ধা সদর উপজেলার দক্ষিণ ঘাগোয়া ও কিশামত বালুয়া এলাকায় ঘাঘট নদীর বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। ভাষারপাড়া এলাকায় বাঁধে ছিদ্র হওয়ায় যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। তবে ভাঙ্গন ঠেকাতে বালির বস্তা ফেলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। মাঝিপাড়া ও দক্ষিণ ঘাগোয়াসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোয়ও বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। গাইবান্ধা-সাঘাটা সড়কে উল্যা ভরতখালী এলাকায় বিভিন্ন স্থানে বাঁধের ওপর দিয়ে পানি যাচ্ছে। সড়কের ১০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে এবং হুমকিতে রয়েছে কয়েকটি সুইসগেট। ফলে যেকোনো সময় ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে স্থানীয়রা বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করছে। সাঘাটার ভরতখালীহাট এলাকার কৃষক জাকির হোসেন বলেন, ভরতখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেট সংলগ্ন পশ্চিমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি হুমকির মুখে রয়েছে। বস্তা দিয়ে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় সম্মিলিত চেষ্টা অব্যাহত আছে। গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, গিদারী, মোল্লারচর ও কুপতলা ইউনিয়ন,সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ও জুমারবাড়ী ইউনিয়ন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর, কাপাসিয়া, তারাপুর, বেলকা, হরিপুর,কঞ্চিবাড়ী ও শ্রীপুর ইউনিয়ন,ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া, খাটিয়ামারী ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। বন্যা কবলিত মানুষ গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ওই এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, বিচ্ছিন্ন রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা, হুমকিতে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বন্যা কবলিত এলাকায় গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা একেএম ইদ্রিস আলী বলেন গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের  বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এ পর্যন্ত ৩২০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১৫ লক্ষ টাকা, শিশু খাদ্য চার লক্ষ, গোখাদ্য দুই লক্ষ ও ১৮ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। এছাড়া বন্যা কবলিত মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।

 

আলোকিত প্রতিদিন/১৭ জুলাই’২০/এসএএইচ

 

 

এস,এম শাহাদৎ হোসাইন

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

০১৭২৩০৫৬১৯৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here