প্রতিনিধি,টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল জেলা আ্যাডভোকেট বার সমিতির নিয়ন্ত্রণাধীন আইনজীবী সহকারী (অ্যাডভোকেট ক্লার্ক) সমিতির ৭৭৫ জন সদস্য বেকার হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। ভার্চুয়াল আদালতে মামলার কার্যক্রম চলার কারণে অ্যাডভোকেট ক্লার্করা কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ফলে বেকার হয়ে পড়া ক্লার্কদের কেউ কেউ পেশা ছেড়ে ভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হচ্ছে। জানা যায়, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গত মার্চ মাস থেকে আদালত বন্ধ হলে মূলত অ্যাডভোকেট ক্লার্করা বেকার হয়ে পড়ে। পরে ভার্চুয়াল আদালত চালু হলেও অ্যাডভোকেটদের কাছে ক্লার্কদের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়। নিয়মিত আদালত চালুর অপেক্ষায় বসে থেকে শেষ পর্যন্ত তাদের বড় একটি অংশ হাল ছেড়ে দিয়ে ভিন্ন পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়। তাদের কেউ কেউ অটোরিকশা, রাজমিস্ত্রি, কাঁচামাল ব্যবসায়ী হয়ে রোজগারের পথ বেছে নিয়েছে। সূত্রমতে, টাঙ্গাইল আইনজীবী সহাকারী(অ্যাডভোকেট ক্লার্ক) সমিতির সদস্য সংখ্যা ৭৭৫ জন। তারা প্রত্যেকেই বার সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেটদের অধীনে ক্লার্ক হিসেবে কাজ করে দৈনন্দিন জীবিকা নির্বাহ করত। তাদের অনেকেই টাঙ্গাইল শহরে ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করত। করোনায় আদালত বন্ধ হওয়ায় তারা সবাই বেকার হয়ে পড়ায় ভাড়াবাসা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আইনজীবী সহকারী (অ্যাডভোকেট ক্লার্ক) বেনী আমিন, সুলতান, রিপন, ফরহাদ, শিশির, আফছার, মোতালেব, তোফাজ্জল, জয়নাল, ইদ্রিস, আজমত, জাহাঙ্গীর, গোলাম সহ অনেকেই জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন নিয়মিত আদালত বন্ধ থাকায় তারা বেকার জীবন কাটাচ্ছেন। সঞ্চিত অর্থ অনেক আগেই ফুরিয়ে গেছে। পরিবারের খরচ চালাতে বাধ্য হয়ে অনেকে শহরে রাতের আঁধারে অটোরিকশা চালিয়ে, রাজমিস্ত্রির কাজ করে, আবার কেউ কেউ কাঁচামাল বিক্রি করছেন। কেউ কেউ সংসারের খরচ চালাতে ব্যর্থ হয়ে ভাড়াবাসা ছেড়ে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সহকারী (অ্যাডভোকেট ক্লার্ক) সমিতির সভাপতি মো. শাজাহান মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ হোসাইন জানান, করোনায় আদালত বন্ধ থাকায় তারা কার্যত বেকার হয়ে পড়েছেন। করোনায় দীর্ঘদিন যাবত বেকার থাকলেও তাদের কোন সদস্য এ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোন আর্থিক সহযোগিতা পান নি। কেন্দ্রীয় আইনজীবী সহকারী সমিতির (অ্যাডভোকেট ক্লার্ক) সহ-সভাপতি ও টাঙ্গাইল আইনজীবী সহকারী সমিতির সাবেক সভাপতি মোঃ ফরহাদ আলী জানান, আইনজীবী সহকারীরা সমাজের নিম্নআয়ের মানুষ। আইনজীবীদের ফাইলপত্র আনা-নেওয়া করে যা পাওয়া যায় তাই দিয়েই জীবন চালিয়ে থাকেন। করোনা মহামারির সময়ে বেকার হয়ে পড়া আইনজীবী সহকারীদের আর্থিক প্রণোদনার দাবি জানান তিনি। টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম নাছিমুল আক্তার নাছিম জানান, করোনার কারণে বার বন্ধ থাকায় অ্যাডভোকেট ক্লার্করা প্রকৃতার্থেই মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বার থেকে তারা কোন সহযোগিতা করতে পারেন নাই। সেজন্য প্রত্যেক অ্যাডভোকেটকে তার ক্লার্ককে আর্থিক সহযোগিতা করার জন্য বলা হয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন/১২ জুলাই’২০/এসএএইচ