চাঁদপুরের মতলবে কাজী মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ দখল ও অর্ধকোটি টাকার মালামাল লুটের অভিযোগ

0
641

::চাঁদপুর সংবাদদাতা ও নিজস্ব প্রতিবেদক::
চাঁদপুর মতলব উত্তরের কাজী মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অন্যের ডিসলাইন দখল ও প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালামাল লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৭ মাস ধরে মালিকনা ফিরে পেতে বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আসল মালিক। থানায় মামলা হলেও প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে দাবি অভিযোগকারী চাঁদপুরের মোহনপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. শাহীন মিয়ার। অন্যদিকে অভিযুক্তের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কোন কথা না শুনেই যা অভিযোগ আছে লিখে দিতে বলা হয়। যেন কোন মাথা ব্যথাই নেই তার। তাহলে কী ঘটেছে ঘটনা? কী শত্রুতা তাদের? আজ থাকছে অভিযোগ ও মামলার আলোকে দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনের প্রথম পর্ব। পরে আসছি অনুসন্ধানের খবরাখবর নিয়ে।
অভিযোগকারী শাহীন মিয়া বলেন, ‘ ডিস লাইনের মূল মালিক আমি। আমার কাছে ডিস ব্যবসার থেকে চাঁদা দাবি করেন কাজী মিজান। চাঁদা না দেওয়ায় ৬ মাস যাবৎ ডিস লাইন দখল করে আছেন তিনি।’ শাহীন আরও বলেন, ‘কাজী মিজানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু অজানা কারণে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
মামলাসূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে চাঁদপুরের মোহনপুর স্কুলের সামনে বেড়িবাঁধের ওপর মোহনপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো. শাহীন মিয়ার মালিকানাধীন থাকা স্বেচ্ছাসেবকলীগের অফিসে আগুন দেওয়া হয় এবং মুদাফর কো-অপারেটিভ মার্কেটে রাইয়ান চৌধুরী ক্যাবল নেটওয়ার্ক-এর অফিসে হামলা চালিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের জিনিসপত্র লুটপাট করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে, ডিস লাইনে ব্যবহৃত মডিলেটর, পে-চ্যানেল বক্স, রিসিভার, দেশি চ্যানেল বক্স, ট্রান্সমিটার, তামার তার, অপটিক্যাল ফাইভারসহ মূল্যবান বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স মালামাল।
এ ঘটনায় ওই দিনই চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন শাহীন মিয়া। পরদিন আদালতে গিয়ে কাজী মতিন, কাজী মিজান, কাজী হাবিব, কাজী মাহবুব, সাদ্দাম, হাসানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনি। কাজী মিজানের ছোটো ভাই কাজী মতিন মতলব উত্তর উপজেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী শাহীন মিয়া জানান, ২০১৭ সালের ১৫ জুন বিটিভি থেকে ক্যাবল নেটওয়ার্ক পরিচালনার জন্য রাইয়ান চৌধুরী ক্যাবল নেটওয়ার্কের নামে লাইসেন্স নিয়ে ডিস ব্যবসা শুরু করেন। যার মেয়াদ রয়েছে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ৬ মাস আগে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে কাজী মিজান তার দলবল নিয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল লুট করে এবং প্রতিষ্ঠানটি জোরপূর্বক দখল করে। অর্ধকোটি টাকার মালামাল লুট করা ছাড়াও প্রতিমাসে ডিশ ভাড়ার প্রায় ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে চলেছে কাজী মিজান।’
স্থানীয় কয়েকজন জানান, দখলবাজি ছাড়াও কাজী মিজানসহ তার দলবলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নিরীহ মানুষের টাকা ও জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। উৎকোচের মাধ্যমে বিভিন্ন মহলকে হাত করে সে এই ধরণের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে বলেও রয়েছে অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়, জানান শাহীন মিয়া।
এক অভিযোগে শাহীন মিয়া বলেন, ‘শিক্ষা, মানবিক যোগ্যতা না থাকলেও অবৈধ বালু উত্তোলনের টাকা দিয়ে বিভিন্ন জনকে ম্যানেজ করে এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা সেজে চাঁদাবাজি করেন কাজী মিজান।’ তিনি বলেন, ‘ডিশ ব্যবসার থেকে চাঁদা দাবি করার পর না দেয়ায় এই লুটপাট ও ব্যবসা দখল করেছেন মিজান।’
কাজী মিজানের অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছু না শুনে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়া মাত্রই এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভাই যা অভিযোগ আছে লিখে দেন। লিখে দেন। আমি কোন কথা বলবো না।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here