শ্রীপুরের ২নং সিএন্ডবি বাজার থেকে কেওয়া বাজার পর্যন্ত রাস্তার বেহালদশা, ভোগান্তিতে ৫ গ্রামের মানুষ

-Advertisement-

আরো খবর

- Advertisement -
- Advertisement -

আলমগীর হোসেন,শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধি: একটি গ্রামীণ রাস্তা, সংযোগ করেছে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ককে। একদিকে জেলা সদর ও রাজধানী ঢাকা যাতায়াতের জন্য ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। অন্যদিকে, উপজেলা সদরে যাতায়াতের জন্য শ্রীপুর-মাওনা সড়ক। প্রতিদিন যাতায়াত করেন ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশত শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমকি ও স্থানীয় বাসিন্দা।এছাড়াও চলে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। ওই রাস্তা পাকা ও সংস্কার করার জন্য এলাকার বাসিন্দারা অনেকদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকটে। আজও তাদের দাবি পূরণ হয়নি। এ সড়কে চলাচলকারী পথচারী ও ভোগান্তিতে পড়া যাত্রীদের প্রশ্ন সড়কটি কবে সংস্কার করা হবে? বেহাল এই সড়কের ইট উঠে বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দে পানি জমে পুকুরর-জলাশয়ের রূপ নিয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ২নং সিএন্ডবি বাজারের গ্রামীণ এ সড়কের এক কিলো মিটার বেহাল দশায় ৫ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দার ভোগান্তি এখন চরম আকার ধারণ করেছে। এ সড়কে চলাচলকারী স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সড়কটি সংস্কারের কোনো ছোঁয়া লাগেনি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির ইট উঠে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সিএনজি, ইজিবাইক, নসিমন, ভটভটি, অটোবাইক ও ভ্যান চলাচল করছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়তই। স্থানীয় কৃষক ফজলুল হক ও তাইজুদ্দিন মোড়ল বলেন, তাঁদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য উপজেলা সদরের হাটবাজারে নিতে হয়। কিন্তু এই ভাঙ্গাচোরা সড়কের কারণে ভ্যানচালকেরা যেতে চান না। ভ্যানচালকেরা গেলেও এ জন্য অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাঁদের। দ্রুত এ সড়কটি সংস্কার করা দরকার। ২নং সিএন্ডবি বাজারের ব্যবসায়ী তাইজ উদ্দিন অভিযোগ করেন, বেহাল এই রাস্তার কারণে মার খাচ্ছে তাঁদের ব্যবসা। বর্ষাকালে রাস্তায় যাতায়াত করাটাই বিপদজনক। আশপাশের অনেক রাস্তা পাকা করা হলেও এরকম গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তাকে পাকা করার ব্যাপারে টালবাহনা করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও গাজীপুর আদালতের আইনজীবি নজরুল ইসলাম জানান, গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে পোহাতে এলাকার বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। সংস্কারের নামে কয়েকবার সড়কটির মাপামাপি করা হলেও কাজের কোনো খবর নেই। সরেজমিনে দেখে ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সড়কটির তিন কিলো মিটারের মধ্যে শ্রীপুর-মাওনা সড়কের কেওয়া বাজার থেকে দুই কিলো মিটার কার্পেটিং করে। বাকি এক কিলো মিটার শ্রীপুর পৌর কর্তৃপক্ষ ইট দিয়ে চলাচল উপযোগী করে। দীর্ঘদিন যাবত উন্নয়ন না করায় ইট উঠে মাটি বের হয়ে গেছে। ২নং সিএনডবি বাজারের এক কিলোমিটার অংশ গর্ত হয়ে ছোট খালে পরিণত হয়েছে। ভ্যানচালক আব্দুর রশীদ বলেন, ভাঙ্গাচোরা রাস্তার জন্য বেশি মাল নেওয়া যায় না। এ ছাড়া ভ্যানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। শ্রীপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত স্থানীয় শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান শান্ত, জাকারিয়া মারি মম ও সানজিদা আক্তার বলেন, সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য তাঁদের অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। প্রায়’ই পা ফসকে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে পড়ে গিয়ে জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। তখন ওই দিনের জন্য স্কুল-কলেজ কামাই (অনুপস্থিত) দিতে হয়। যানবাহনে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করলে কষ্ট হয়, সময়ও বেশি লাগে। ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন জানান, সড়কটি দিয়ে যাতায়াতে প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে গাড়ি। স্থায়ীভাবে কোনও উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না সড়কটিতে। আমাদের দাবি, সড়কটি যেন দ্রুত সংস্কার করা হয়। শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারী কলেজের প্রভাষক ও স্থানীয় বাসিন্দা শাহিদুল ইসলাম সুজন অভিযোগ করেন, গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তা পাকা করার জন্য শ্রীপুর পৌর মেয়রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। স্থানীয় কাউন্সিলরের (৭নং ওয়ার্ড) কাছে আবেদন জানালে তিনি বলেন এ রাস্তা উন্নয়নে বাজেট না থাকায় সংস্কার করা হচ্ছে না। তরুণ সমাজ সেবক স্থানীয় বাসিন্দা নূরুল ইসলাম মিষ্টার বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও স্থানীয় কাউন্সিলরের গাফিলতির কারনে জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্থ হয়ে আছে। শ্রীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী তবিবুর রহমান বলেন, এ মুহুর্তে বরাদ্দ না থাকা ও অর্থ সংকট থাকায় রাস্তার উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ এলে প্রস্তাব অনুযায়ী সড়কটিতে উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।  শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান জানান, ২নং সিএন্ডবি বাজার থেকে কেওয়া বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি যত দ্রুত সম্ভব উন্নয়ন ও সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

 

আলোকিত প্রতিদিন/২১ জুন’২০/এসএএইচ

- Advertisement -
- Advertisement -