জিলেপির প্যাঁচ
– মেহেজাবিন নেছা
—————————————————————————————–
ইফতারের পর এক কাপ চা করতে কিচেনে গেলো মৃত্তিকা। সন্ধ্যায় কড়া লিকারের রং চা নেশার মতোন।
পড়ালেখার সুবাদে এটা তার একার সংসার। গরম থেকে বাচঁতে দরজা খোলাই রাখে আজকাল। চা করে রুমে ফিরতেই দরজার কাছে এক টুকরো জিলাপি। বেশ কষ্ট করে দুপুরে আঁটসাঁট বেঁধে প্রথমবারের মতন জিলাপি করেছিল। চেষ্টা করেছিল- যেমনই হোক জিলাপির প্যাচটা যেন ঠিক থাকে। সে যা-ই হোক, ‘জিলাপি এখানে এলো কিভাবে?’
সঙ্গে সঙ্গেই জবাব এলো ‘মিউ, মিউ মিউ।’
সাদা বিড়ালছানা। মৃত্তিকার সঙ্গে প্রথমবারের মতো মতবিনিময় হলো। মত বিনিময় ঠিক তা নয়, প্রশ্নোত্তর পর্ব বলা যেতে পারে। মৃত্তিকার উত্তর দিয়ে চলেও গেলো।
ফোন বাজছে। ছোট ভাইয়ের কল।
– হ্যাঁ দাদাভাই। যা বলবি বল।
– তোর জিলাপির প্যাচ কেমন হলো?
– বড়োই সৌন্দর্য। এতোটাই সৌন্দর্য যে একটা কিউটি হালুমের ছানা এলো একটু আগে। নিশ্চিৎ তুই পাঠিয়েছিস। তুই খেতে পারিসনি বলে শেষ পর্যন্ত বিড়াল পাঠালি?
– আস্তাগফিরুল্লাহ্। আমাকে কি তোর হিংসুটে মনে হয়? বিড়ালটাকে আচ্ছা করে ধোলাই করতে পারিসনি?
– না। শুধু বলেছি তুই পুরো আমার দাদাভাইয়ের মতো। ওর হক মারছিস। যাহ! ওর কাছেই যা। কান্নাকাটি করে ক্ষমা চাস। নইলে আবার ওর বদদোয়াতে তোর পেট দিয়েও জিলাপির প্যাঁচ বের হবে।
– হা হা হা। ভালো করেছিস। নামাজে যাই। থাক তুই।
ঘণ্টাখানেক পর মৃত্তিকার ফোন বেজে উঠলো আবার। ফের দাদাভাইয়ের কল।
– আহা রে! আমি এসে জিলাপি করে খাওয়াবো। প্রমিজ করেছি তো।
– চুপ থাক। মান সম্মানের ফালুদা বাজিয়ে এখন আবার মলম লাগানো হচ্ছে!
– যাহ। আমি আবার কি করলাম ভাই। নামাজের মধ্যে হুট করে তোর বিড়ালের কথা মনে হতেই হো হো করে হেসে উঠেছি। নামায শেষে ইমাম সাহেব জিজ্ঞেস করে ঘটনা কী? কে হাসলো? কী বলবো তুই-ই বল!
– হিহি। ভালো তো। এবার ঘুমে যা। বিড়ালের সাক্ষাৎকার নিয়ে তারপর কাল হুজুরকে ডিটেইলে বলিস। যাহ। টাটা।