জমি জবর দখলের চেষ্টায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আশঙ্কা, থানায় অভিযোগ

0
440

::প্রতিনিধি, দিনাজপুর::
দিনাজপুরে ভুয়া মালিক সেজে জমি জবর দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয় গড়িছে থানা অবধি। জেলার বিরল উপজেলার দক্ষিণ বিষ্ণপুর গ্রামে ভূমিদস্যুরা ঘর নির্মাণের মাধ্যমে এমন সব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বলে চৌধুরী পরিবারের সন্তান আলহাজ্ব ডা. চৌধুরী মোসাদ্দেকুল ইজদানী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। এদিকে সম্পত্তির মালিক মনোরোমা দেবী বা দেবোত্তর কিনা তা নিয়েও জল ঘোলা করা হচ্ছে বলে অনেকের দাবি। এমন ঘটনায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
জানা গেছে, দিনাজপুর বিরলে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর গ্রামে দুধ কুমার নিরঞ্জন, নিরঞ্জন ও প্রমথসহ ৬/৭ জনের একটি চক্র ভূয়া মালিক সেজে ঘুঘুডাঙ্গা চৌধুরী পরিবারের সম্পত্তি জবর দখলের উদ্দেশ্যে ইটের পাকা ভবন নির্মাণের জন্য ঠিকাদারের মাধ্যমে ভিত্তি প্রস্তরের কাজ শুরু করে। এই খবর পেয়ে চৌধুরী পরিবারের সন্তান আলহাজ্ব ডা. চৌধুরী মোসাদ্দেকুল ইজদানী গত ১৩ মে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসআই নজরুল ইসলাম উভয়পক্ষকে নিয়ে রোববার (১৭ মে) সকালে শালিশী বৈঠক করেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক উভয়পক্ষকে নিয়ে এসআই নজরুল ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেন। পরে তিনি সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ভবন নির্মাণ কাজ করা থেকে বিরত থাকার জন্য ঠিকাদারকে অনুরোধ করেন।
এ ব্যাপারে অত্র ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মনোরোমা দেবী উক্ত সম্পত্তির মালিক। সে-হিসাবে তার লোকজন ঘর নির্মাণ করতেই পারে এবং এ ব্যাপারে পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে বলে তাদেরকে তিনি কথা দিয়েছেন।’ জমির মালিকানা কাগজ দেখেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি সদূত্তর দিতে পারেননি।
দুধ কুমার নিরঞ্জন, তিরেশ, রাজকুমার, প্রমোথ ও শ্রীমান্ত দ্বয়রা নামের কয়েকজনের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, সম্পত্তির মালিক মনোরোমা দেবী বা দেবোত্তর সম্পত্তি নয়। উক্ত সম্পত্তির মালিক ঘুঘুডাঙ্গা চৌধুরী পরিবার।
তারা বলেন, আমরা চৌধুরী পরিবারের কাছে ১২ শতক জমি চকের দিঘী সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের নামে অনুদান চেয়েছি, কিন্তু চৌধুরী পরিবার আমাদের অনুরোধে মৌখিকভাবে ৬ শতক জমি দান করেছেন। কিন্তু দলিল করে দেননি। বিগত আমলে সরকারিভাবে কিছু টাকা বরাদ্দ নিয়ে দান করা জমিতে দুইকক্ষ বিশিষ্ট বারান্দা সম্বলিত একটি মন্দির নির্মাণ করে আমরা পূজা অর্চনা করে আসছি। আমাদের মধ্যে কতিপয় ব্যক্তি গোপাল জিঁও ঠাকুর দেবোত্তর সম্পত্তি পূর্ব সেবাইত-মনোরোমা দেবী, বর্তমান সেবাইত-শ্রী প্রমোথ চন্দ্র দাস, দিনাজপুর জেলার বিরল থানার দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মৌজা জে, এল নং-২৩১, দাগ নং-৩২৮-পুকুরপাড়, দেবোত্তর সেবাইত মনোরোমা দেবী লিখা একটি সাইনবোর্ড মন্দিরের কেচি গেটের দরজার উপর টাঙ্গিয়ে রাখে। এই সম্পত্তি দেবোত্তর সম্পত্তি হিসাবে তারা অপপ্রচার চালাতে থাকে। এই অপপ্রচার ভিন্নরূপ ধারণ করে।
এলাকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানায়, ঐ চক্রের লোকজন ৬/১২ শতক তো দূরের কথা দেবোত্তর সম্পত্তি হিসাবে পুকুরসহ পুরো সম্পত্তি গ্রাস করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এই নিয়ে যে কোন সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি হতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here