৫ হাজার রোহিঙ্গা লকডাউনে

0
409

::সংবাদদাতা, টেকনাফ::
করোনার সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে বৃহত্তম রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির কুতুপালং। গত দুই দিনে এই ক্যাম্পের বসবাসকারী তিন রোহিঙ্গার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গাকে লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে গাদাগাদি করে থাকা লাখো রোহিঙ্গার মধ্যে বৃহস্পতিবারই প্রথম একজন কোভিড-১৯ রোগী ধরা পড়ে।

শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, ‘ক্যাম্পের একজন রোহিঙ্গার করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারের ৬ জনকে মেডিসিন স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ) হাসপাতাল আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আক্রান্ত পরিবার ওই ক্যাম্পের এফ ব্লকের বাসিন্দা। এফ ব্লকের ১ হাজার ২৭৫টি ঘর রেড মার্ক করে লাল পতাকা টানিয়ে লকডাউন করা হয়েছে। এসব ঘরে প্রায় ৫ হাজার মানুষ রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টা মাঝি এবং কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ওই এলাকা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যার পজেটিভ পাওয়া গেছে, তিনি যেসব জায়গায় গিয়েছেন সেগুলোও লকডাউন করা হবে।’ কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, গত দুই দিনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে আক্রান্তসহ তাদের পরিবারকে আইনসোলেশনে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ক্যাম্পে যাতে করোনা ছড়িয়ে না পড়ে সেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এরআগে আড়াইশর বেশি রোহিঙ্গার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে।’ উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহফুজার রহমান বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

কক্সবাজার স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় তিন রোহিঙ্গাসহ ১৫১ জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। করোনায় এখন পর্যন্ত কক্সবাজারে মারা গেছেন একজন। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার কথা জানিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের নেতা সৈয়দ উল্লাহ বলেন, ‘ক্যাম্পে করোনা আক্রান্তের খবরে লোকজন ভয়ে আছে। ঘিঞ্জি বসতি হওয়ায় ঝুঁকিটাও বেশি। আর এই ভাইরাস থেকে নিজেকে কিভাবে রক্ষা করা যায়, সেটি অনেকে জানে না।’

কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘করোনা রোধে ক্যাম্পে সামাজিক দূরত্ব, লকডাউন নিশ্চিতে পুলিশ টহল বৃদ্ধি করা হবে। ইতোমধ্যে করেনা আক্রান্ত রোহিঙ্গাদের সংস্পর্শে আসা পরিবার ও অন্য ব্যক্তিদের কোয়ারান্টাইন নিশ্চিতসহ জায়গাগুলো লকডাউন করা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এরআগেও বিভিন্ন সময়ে আশ্রয় নিয়েছিল ৪ লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয় শিবিরে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখের বেশি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here