::প্রতিনিধি, যশোর::
যশোরে শিক্ষার্থীদের মেসভাড়া ৬০ শতাংশ মওকুফ করতে মেসের মালিকদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন। তবে শিক্ষার্থী ব্যতীত বাসাবাড়ির ভাড়ার বিষয়ে কোন নির্দেশনা আসেনি। আজ সোমবার (৪ মে) বেলা ১২টায় যশোর সার্কিট হাউজে এক জরুরী সভায় মেসমালিক, শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময়ের পর এই সিদ্ধান্ত জানায় জেলা প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে, তাদের বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ এই জরুরী সভা থেকে এমন সিদ্ধান্ত এলো।
এদিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ প্রসঙ্গে মেসমালিকদের সতর্ক করে দিয়ে সভার সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান বলেন, ‘কোন মালিক যদি এই সিদ্ধান্ত না মেনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেন, তবে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ প্রশাসন। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীদের দরকারি জিনিসপত্র ঘরের বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এটা কোনভাবেই করা যাবে না।’ এ সময় তিনি ও সহকারী পুলিশ সুপার গোলাম রাব্বানী তাদের মুঠোফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে মেস মালিক কিংবা শিক্ষার্থীদের কোন অসুবিধা হলে জানানো জন্য বলেন।
অন্যান্যের মধ্যে প্রেসক্লাব যশোর সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সরকারি এমএম কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক, সন্দীপন যশোরের সভাপতি সুলতান আহমেদ, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হারুন অর রশীদসহ শহরতলীর মেসমালিকদের একাংশ উপস্থিতি ছিলেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান বলেন,‘সভায় মেস মালিকদের প্রস্তাবনার ভিত্তিতেই ৬০ শতাংশ ভাড়া মওকুফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ রফিকুল বলেন, ‘কোন বাড়ির মালিক যদি মানবিক বিবেচনায় পুরো ভাড়া মওকুফ করেন, তাহলে তাকে ধন্যবাদ।’ তিনি জানান, গত ৩০ এপ্রিল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন দেশজুড়ে করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া শিক্ষার্থীদের মানবিক দিক বিবেচনা করে বাসা বাড়ির মালিকদেরকে মেসের সিট ভাড়া মওকুফের আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসককে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফের নির্দেশনায় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মেসের ভাড়া ৬০ শতাংশ মওকুফে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা জেলাপ্রশাসন ও মেস মালিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। যশোর এমএম কলেজের শিক্ষার্থী ও এই সভায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হারুন অর রশীদ বলেন, ‘বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি এই মানবিক সিদ্ধান্ত ইতিহাস হয়ে থাকবে। যশোর সব সময় সব সঠিক সিদ্ধান্ত শুরুতেই গ্রহণ করে, এটা তার আরেকটি নজির। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমরা জেলা প্রশাসন ও মেসমালিকদের সাদুবাদ জানাই।’
তবে সভা শেষে ৬০ শতাংশ মওকুফের তথ্য ছড়িয়ে পড়লে অনেক মেসমালিক মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যশোর শহরতলীতের শতাধিক মেস রয়েছে। যা বাসা বাড়ি হিসাবে তৈরি হলেও ব্যবসায়িকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেখানে কোনটিতেই ব্যবসায়িক কোন আইন মানা হয়নি। এমনকি এদের কেউই ‘বাড়ী ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১’ মেনে চলেন না বলে রয়েছে অভিযোগ।