মাদ্রাসা ছাত্রকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, অভিযোগ যৌন হয়রানির

0
427

প্রতিনিধি, দিনাজপুর
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে মিনহাজ (১৫) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। মধ্যযুগীয় কায়দায় করা নির্যাতনের সেই ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের ঘোড়াবান্দ কেরানী পাড়ার ছইদুল ইসলামের ছেলে মিনহাজ দিনাজপুর জেলা সদরের ফরিদপুর গোরস্তান মাদ্রাসার নাজেরা ক্লাসের ছাত্র। করোনার কারণে মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় সে বাড়িতে এসেছে। ছুটিতে প্রতিবেশী আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী রমেনা বেগম, মেয়ে আফরোজা খাতুন (১০) এবং ছেলে রুহান ইসলাম (৮)কে সে আরবি পড়াতো। বুধবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টায় পড়ানোর সময় আবু সিদ্দিকের পরিবার মিনহাজের বিরুদ্ধে তার মেয়েকে যৌন হয়রানির চেষ্টার অভিযোগ এনে মারধর শুরু করে। এসময় মিনহাজ পালিয়ে যায়। একইদিন দুপুরে মিনহাজকে তার নানার বাড়ি নাটুয়া পাড়া এলাকা থেকে ধরে এনে আবু বক্কর তার বাড়ির সামনে সুপারি গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। এসময় তাকে উদ্ধার করতে আসা পরিবারের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। পরে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পরিবারের লোকজন মিনহাজকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
গাছে বেঁধে নির্যাতন এ ব্যাপারে মিনহাজ বলে, ‘ছয় মাস ধরে সে ওই বাড়িতে আরবি পড়াচ্ছে। এ পর্যন্ত এক মাসের বেতন পেয়েছে। ঘটনার দিন ভুল পড়ায় আফরোজাকে মার দেই। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মার দেয় এবং তর্ক করে। পরে সে কাঁদতে কাঁদতে বিষয়টি তার মাকে গিয়ে বলার পর পরিবাবের লোকজন এসে আমাকে মারধর শুরু করে। আত্মরক্ষার্থে আমি পালিয়ে যাই। পরে দুপুরে আমাকে ধরে নিয়ে এসে গাছে বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটায়।’
এ ব্যাপারে আবু বক্করের স্ত্রী রমেনা বলেন, ‘আররি পড়ার এক পর্যায়ে আমি বাড়ির বাইরে যাই। এসময় মিনহাজ আমার মেয়েকে আরবি বই শপথ করিয়ে না বলার শর্তে টিউবল পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে সে জামা খোলার এবং ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। মেয়ের চিৎকারে আমরা ছুটে এলে সে পালিয়ে যায়। পরে তাকে আটক করে শাসন করেছি। তাকে পুলিশে না দিয়ে নিজে শাসন করা ভুল হয়েছে।’
মিহাজের বাবা ছইদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি বৃহস্পতিবার বীরগঞ্জ থানায় মামলা করেছি। এখন আসামিরা আমার ছেলে এবং আমার পরিবারসহ যারা ভিডিও করেছে তাদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করার হুমকি দিচ্ছে। মা মরা ছেলেটাকে নির্মম ভাবে মেরেছে। আমি ছেলে নির্যাতনে বিচার দাবি করছি।’
মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই আলন চন্দ্র রায় জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে আবু বক্কর ও আশরাফুল ইসলাম নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বীরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, ‘মামলার তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেফতার করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here