বিশেষ প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ :
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পত্নী প্রমীলার জন্মস্থান শিবালয় উপজেলার তেওতা গ্রামের পৈতৃক ভিটা বেদখল হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে এ সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত। এরই মধ্যে প্রমীলার পিতা ও কাকার নামীয় ৫৩ শতাংশ জমির মালিকানা স্বত্ব হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণ তেওতা মৌজার ১৩০ দাগে ২৫২ তৌজি, সুজাবাদ কুতুবপুর ২০নং খতিয়ান দুটি দাগে এ ভূমি বর্তমান। এ সম্পত্তি নিয়ে এমন জাল—জালিয়াতির অভিযোগে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় কবিপত্নী আশালতা সেন প্রমীলার পিতা বসন্ত কুমার সেন তেওতা জমিদারের নায়েব ছিলেন। তিনি ১৯১৮ সালে মারা যান। পিতার মৃত্যুর পর প্রমীলার তৎকালীন জমিদার ব্যারিষ্টার নরণ শংকর রায় চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত তেওতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে বিধবা মা গিরিবালা সেনকে নিয়ে কাকা ইন্দ্র সেনের কর্মস্থল কুমিল্লায় চলে যান। ইন্দ্র কুমার সেন তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্গত কুমিল্লায় কোর্ট ইন্সপেক্টর ছিলেন।
উল্লেখ্য, বিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা জমিদার কিরন শঙকর রায় কবি নজরুলের ‘বিদ্রোহী কবিতা লেখার পরের বছর ১৯২২ তাকে তেওতায় আমন্ত্রণ জানান। কবি প্রথম বার এখানে এসে বহু কবিতা—গান রচনা করেন। কুমিল্লায় থাকাকালে ইন্দ্র সেনের পুত্র বীরন্দ্র সেনের সঙ্গে নজরুলের ঘনিষ্ঠতা হয়। ১৯২৬ সালে নজরূল সস্ত্রীক তেওতায় বেড়াতে আসেন।
সাহিত্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নজরুল প্রমীলা পরিষদের কর্মকর্তা লেখক মিয়াজান কবির জানান, প্রমীলার জন্মভিটা পার্শ্ববর্তী ব্যাক্তিদের নামে এসএ এবং আরএস রেকর্ড হলেও এতে তাদের কোনো প্রকৃত দলিল—দস্তাবেজ নেই। ফলে সেন পরিবারের কন্যা জাতীয় কবিপত্নী প্রমীলা এবং তার উত্তরাধিকারীগণ এ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন।
এছাড়া, জাতীয় কবি ও প্রমীলার স্মৃতিধন্য এ ভূমিতে সরকারি স্থাপনা নির্মান ও ভূমি উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন সংগঠন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দাবি করে আসছে। তবে তাতে এ পর্যন্ত কোনো প্রতিকার মেলেনি।
আলোকিত প্রতিদিন//০৩ ডিসেম্বর– ২০২২// আর.এইস.কে