আজ শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জনবল সংকট ও জরাজীর্ণ ভবনে ব্যাহত ডিমলার স্বাস্থ্যসেবা

-Advertisement-

আরো খবর

- Advertisement -
- Advertisement -

প্রতিনিধ , নীলফামারী

ডিমলাবাসীর স্বাস্থ্য সেবায় দাঁড়িয়ে থাকা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একমাত্র হাসপাতালটি আজ যেন সবকিছুর সংকটের আরেক নাম। ৩,২৬,০৫৩ জন মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় ২১ জন ডাক্তারের পদসংখ্যা থাকলেও বর্তমানে কর্মরত ডাক্তার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপ কর্মকর্তা এবং একজন দন্ত চিকিৎসকসহ মাত্র ৮ জন। ১৯৮০ সালে স্থাপিত ডিমলার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট্য এ হাসপাতালটি ২০১২ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয় । প্রতিদিন গড়ে ৫৫০-৬০০ জন রোগী দেখতে হয় মাত্র ৬ জন ডাক্তারকে। করোনার নমুনা সংগ্রহ,মা ও শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে সেবা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে গড়ে ৮৫-১০০ জন রোগী প্রতিদিন ভর্তি হয়।তবুও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেবা প্রদানে অবিচল থেকে কাজ করে গেলেও জরাজীর্ণ ভবন ও ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ভবনের ভেতরেও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। এতে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ রোগীরাও আতঙ্কে রয়েছেন।হাসপাতালে ড্রেনেজ ব্যাবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং ঝোপঝাড়ে, পুকুরে ময়লার স্তুপআকারে আবাসিক এলাকাগুলো হয়ে পড়েছে বসবাসের অনুপযোগী। ওটি বিভাগটি একদশক থেকে বন্ধ পড়ে আছে জনবল সংকটের কারণে।সার্জারি কক্ষ থাকলেও হয় না কোন অপারেশন ফলে ,নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অ্যানেস্থেসিয়া মেশিনহ অন্যান্য সরঞ্জমাদিনার্সিং স্ট্যাপ ৩০ জনের পদে ২৬ জন কর্মরত থাকলেও দুইজনের মধ্যে একজন আয়া ও ৫ জন সুইপারের মধ্যে ২ জন কর্মরত আছে। তিন জন নিরাপত্তা রক্ষীর মধ্যে কর্মরত মাত্র একজন।হাসপাতালটিতে নেই কোন মালি। ৪ পদের এম.এল.এস.এস কাজ করছে ২ জন। ৩ ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানের মধ্যে ১ জন কর্মরত বিধায় এর এনালগ এক্সরে মেশিনটিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করতে না পেরে জনগণ বিভিন্ন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।সম্প্রতি একজন দন্ত চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে।স্থানীয়রা জানান, উপযুক্ত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে আউটডোর ডা., ডি.এম.পি ডা.সহ বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে বিভিন্ন প্রতারক চক্রের মাধ্যমে। এই সংকটের মধ্যেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা মহামারীকে সামলে যাচ্ছে দক্ষতার সাথে । যার ফলে ৫৪ হাজার রেজি.কৃত জনগণের মধ্যে ১২২৯৭৮ জনকে ১ম ডোজ ও ৭৩১১৮ জনকে ২য় ডোজ দেওয়া সম্পন্ন করেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. সারোয়ার আলম বলেন, এই উপজেলার মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।পুরনো ভবনের দেয়াল স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে গেছে।ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ছে। ল্যাবসহ বিভিন্ন রুমের পলেস্তারা খসে পড়েছে। পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় পুরনো ভবনে ঝুঁকি নিয়েই সেবা দিতে হচ্ছে।জনবল সংকটের ব্যাপারে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী পদটি খালি থাকায় জরুরি বিভাগে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া ৩য় এবং ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অনেক পদ শূন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চালানো হচ্ছে অনেক কাজ। শূন্য পদগুলোর ব্যাপারে চাহিদাপত্র ইতোমধ্যে মন্ত্রী পরিষদে পাঠানো হয়েছে।নীলফামারী জেলা সিভিল সার্জন ডা. ডা. মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ডিমলা হাসপাতালের ব্যাপারে আমি এখনও তেমন জানি না। তবে ভবনটির ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করব আমি। ঝুঁকিপূর্ণ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সরকারের ভর্তুকির সবচেয়ে বড় খাত স্বাস্থ্যখাত হলেও জনবল সংকটের কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা, যার ফলে সাধারণ জনগণ পড়ছে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। তাই সরকারের দৃষ্টি পড়ুক উপজেলা হাসপাতালগুলোর দিকে যেন গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষগুলো খুঁজে পায় নিশ্চিত স্বস্থ্যসেবায় আগামীর বেঁচে থাকার স্বপ্ন।

আতারা //এপি

- Advertisement -
- Advertisement -