আজ শুক্রবার, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ৮ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ফেনীর ট্রাংক রোড যেন রণক্ষেত্র :  ত্রিমুখী সংঘর্ষে ওসিসহ আহত ৪০

-Advertisement-

আরো খবর

- Advertisement -
- Advertisement -

সাইফুল ইসলাম 

ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে গতকাল মুসল্লীদের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষে শহরের ট্রাংক রোড রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।এসময় ফেনী কেন্দ্রীয় বড় মসজিদের মেঝেতে মুসল্লিদের রক্ত পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বিকেল থেকে শুরু হয়ে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মুসল্লিদের সঙ্গে আ’লীগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ফেনীর সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, মডেল থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিনসহ অন্তত ৪০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানা যায়, পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর আলোকে বিকাল ৩টা থেকে শহরের ট্রাংক রোডের কালি বাড়িতে জড়ো হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। তৎসংলগ্ন ফেনী কেন্দ্রীয় বড় জামে মসজিদে আসরের নামাজ চলাকালে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ নামাজের পরে মিছিল করার অনুরোধ জানালেও তা উপেক্ষা করে মিছিলটি বের করা হয়। এর প্রতিবাদে নামাজ শেষে মুসল্লীরা মসজিদের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।এসময় মুসল্লী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মুখোমুখি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করে। একপর্যায়ে মুসল্লিদের বাধার মুখে পূজা উদযাপন পরিষদ তাদের মিছিলটি ফিরিয়ে নেয়। এর কিছুক্ষণ পরই জেলা আ’লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মিলন, ফেনী পৌর মেয়র ও স্থানীয় আ’ লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী এবং জেলা যুবলীগ সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতনের নেতৃত্বে জেলা আ’লীগ নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে মুসল্লীদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা শুরু হয়। এসময় ইটপাটকেলের আঘাতে ২০/২৫ জন মুসল্লিসহ জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ডালিম ও নবাবপুর ইউনিয়ন সভাপতি ফজলুল হকসহ ইনডিপেন্ডেন্ট টিভির ক্যামেরাম্যান রিয়াদ আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।মাগরিবের নামাজ শেষে মুসল্লীরা আবারও মসজিদের সামনে অবস্থান নিলে আ’লীগ নেতাকর্মীরা ফের হামলা চালায়।এসময় বেশ কয়েকজন মুসল্লি আহত হলেও ভয়ে সকলে পালিয়ে যাওয়ায় করো নাম-পরিচয় জানা যায়নি। চতুর্দিক থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে ফেনী মডেল থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোঁড়লে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। এদের মধ্যে জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল বাহার ফয়সাল, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহম্মদ তপু, সিনিয়র সহসভাপতি নুর করিম জাবেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নোমান হাবিব, সহসম্পাদক আমজাদ হোসেন, রবিন, জামাল, রাব্বি, হৃদয়ের নাম জানা গেছে। ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী পিপিএম,বিপিএম বলেন,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়ে ছুড়তে হয়েছে। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনার সময় ইটপাটকেলের আঘাতে ফেনী মডেল থানার ওসিসহ ১৫-১৬ জন আহত হয়েছেন।রাত সাড়ে ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে একাধিকজনকে আটক করা হয়েছে।তাদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

 

আলোকিত প্রতিদিন // আতারা

- Advertisement -
- Advertisement -