মাসুদ রানা, ধামরাই : ঢাকার ধামরাই উপজেলায় কর্মরত বেসরকারি বিজয় টেলিভিশনের সাংবাদিক জুলহাস উদ্দিন (৩৫) কে প্রকাশ্যে গলা জবাই করে খুন করা হয়েছে। স্থানীয়রা শাহীন ও মোয়াজ্জেম নামের দুই খুনিকে আটকের পর পুলিশে সোর্পদ করে। আজ বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বারবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জুলহাস উদ্দিন উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ হাতকোরা গ্রামের মৃত রইস উদ্দিনের ছেলে। তিনি ধামরাই প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্বরত ছিলেন। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাহিরচর গ্রামের বিষু ব্যাপারীর ছেলে শাহীন ও ফাঁড়িরচর গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে মোয়াজ্জেম। গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রবিউল আওয়াল হাসু বলেন, আজ দুপুর আড়াইটার দিকে সাংবাদিক জুলহাস মানিকগঞ্জ থেকে বারোবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি থেকে নামে। গাড়ি থেকে নামার পর শাহীন ও মোয়াজ্জেমসহ আরো কয়েকজন জুলহাসকে প্রকাশ্যে বুকের দুই পাশে ছুরি ঢ়ুকায় ও গলায় ছুরি দিয়ে জবাই করে। এ সময় জুলহাস মাটিতে লুটে পরে গেলে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এ সময় বাসস্ট্যান্ডের দোকানদার জুলহাসকে উদ্ধার করতে চাইলে খুনিরা বাঁধা দেয়। জুলহাস মৃত্যুর যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে এমন দৃশ্য দেখে স্থানীয়রা খুনি শাহীন ও মোয়াজ্জেমকে আটক করে। বাকি খুনরিা পালিয়ে যায়। আটকৃতদের পুলিশে সোর্পদ করে স্থানীয়রা। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় জুলহাসকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্য ডাক্তার মো: আরিফুর রহমান তাকে মৃত ঘোষনা করে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সাংবাদিকরা মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ছুটে যায়। সেখানে জুলহাসের রক্তমাখা মৃতদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে। পুরো হাসপাতালে শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহত সাংবাদিক জুলহাসের চাচা শাহিন জানান, স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা তুলা মিয়ার মেয়ে সুমা আক্তারকে গত ১২ বছর পূর্বে ভালোবেসে বিয়ে করে জুলহাস। বিয়ের পর থেকে তুলা মিয়া জুলহাসের উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন শুরু করে। জুলহাসকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলও খাটিয়েছে। তারপরও সুমা জুলহাসকে ছেড়ে যায়নি। দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে জুলহাসকে হত্যা করেছে বলে ধারণা জুলহাসের পরিবারের। তুলা মিয়া এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাকে কেউ কিছু বলতে পারেনি।
স্থানীয় সাংবাদিক জুলহাস হত্যাকারীদের অতি বিলম্ভবে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। ধামরাই প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু হাসান জানান, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি জুলহাসকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি ও দ্রুত আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। তার এ মৃত্যুতে আমরা সত্যি মর্মাহত। জুলহাসের স্ত্রী কথা বলতে পারছেন না, তবে তার স্বামী হত্যার বিচার চেয়েছেন। বাকি আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। ধামরাই থানার অফিসার ইনর্চাজ দিপক চন্দ্র সাহা বলেন, সাংবাদিক জুলহাস হত্যার সাথে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতার করা হবে। যে ছরা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে তা উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়না তদন্ত করা হবে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
আলোকিত প্রতিদিন/৩ সেপ্টেম্বর-২০২০/জেডএন