ঈদসংখ্যায় কবিদের পঙক্তিমালা

0
1464

ঘৃত মধু দুগ্ধ নিয়ে এই আছি বেশ জান্নাতে
খুশবু দারুণ মন ভরে দ্যায় প্রিয়ার হাতের রান্নাতে
পানশালাতে কেমনে যাব বেহেস্ত যে লকডাউন
জান্নাতি সুখ ভেস্তে গেল রুদ্ধ পথের কান্নাতে।

বৃষ্টির সাথে আমার কখনোই ভাব ছিলো না
তবুও আমাকে বারবার ভিজিয়েছে রুদ্র জলোচ্ছ্বাসে

সময়ের পিঠে হাত রেখে একবার
তাকে বলেছিলাম-
ফসলের মাঠে নৃত্য করো;
অথচ সেদিন আমাকে ভ্রুক্ষেপ না করে
নাচতে থাকলো নটবর তান্ডবে।

কথা দিয়ে মালা গাঁথার নেশা
নীলাকাশের সাথে মিশে মেঘ হয় না কখনো
তবে কি স্রষ্টার অশ্রু ঝরে পড়লো
ক’ফোঁটা
না বৈশাখি তান্ডব মেইল পাঠালো
ভেঙে গড়ার অপূর্ব নিশানা ধরে
তা হলে এসো আমরা আবারো শুরু করি
শুদ্ধ হবার প্রথম পাঠ।

আমি চোখের ভেতর কবর দেখি।

আমাদের কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে
মৃত শরীর-বনের পাশে, মাটি খুঁড়ে-

এই সব শরীর চলে যাওয়া পথ
চালকুমড়োর শাদা কুড়োর মতো
ডুবে যায়-রাখাল সন্ধ্যার দিকে-
খলবলে ব্রাহ্মান্ড, আরও ভাগ হয়
সুগন্ধি আতরে মখমলি স্লেটদাগ-

আমাদের দেখা হয়- শুষ্কজলা ঠোঁটে
ভাঙা কোলাহলের পাশে-রেলস্টেশন,
ধু ধু মাঠ-পিঁপড়ের ঢিবি, আঁশশাদা
চারাগাছের বীজ, দেখা হয়- ফের
পিঠ ছোঁয়া রাজবায়ুর উঁচু ক্ষেতখামার

চিলেকোঠায় ঠাঁই নেই চড়ুইদের,
চিমনি থেকে বের হওয়া সাদা-কালো ধোঁয়া
কেড়ে নিয়েছে প্রাণের স্পন্দন!
নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে এয়ারকন্ডিশনের কৃত্রিমতা।
আকাশে বাতাসে শুধু কালো বিষ-
এই নিয়েই দমবন্ধ বেঁচে থাকা।
এভাবে আর কত দিন?

তবে বোধোদয় হয়েছে বুঝি
করোনায় মৃত্যুভয়ে বাঁচার আকাঙ্খায়।

তুমি এখন লকডাউনে-
তাই চিরচেনা সেই রমনার উদ্যানে, সমুদ্র সৈকতে
নেই এখন প্রাণের কোলাহল।
সমুদ্র বিলাসে সমুদ্র স্নান নেই; বালুচরে নেই দৌড়ঝাঁপ
নেই ঝাঁলমুড়ি নেই আড্ডা!
নেই বিয়ার খেয়ে ছুঁড়ে ফেলা ক্যান;
অতপর-
বিষমুক্ত ধরিত্রি!

চড়ুইদের আজ স্বস্তিতে ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ
ডলফিনের জলকেলি!

মৃত্যু নয়, আজ করোনাকেই মানুষের
যতো বেশি ভয়!
যদিও মৃত্যু চিরন্তন, তবুও কে বা কারা
রাখে তার খবর?

সৃষ্টিকর্তা, ধর্ম ও কর্ম ভুলে আজ সবাই
মিথ্যে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে করি বড়াই!

অতঃপর,
যদি কোনোদিন ঘুচে যায় এ মহামারি
ফিরে আসে শিশুর প্রাণবন্ত হাসি, তবে-
মানুষের নামে মানুষ না ক’রে; পৃথিবীকে
তুমি নামানুষের বদলে সাজিয়ো বৃক্ষরাজি

আর যদি মানুষ ক’রেই সাজাও পৃথিবী, তবে
মনুষ্যত্ব দিয়ো একটুখানি।

দেশ পুড়ে যাচ্ছে জ্বরে;
তার কপালে হাত রাখবে কেউ নেই।

দেশ টলে পড়ছে মৃত্যুর কোলে;
তাকে বাঁচাবার কেউ নেই!
তাকে জীয়নকাঠি ছোঁয়াও
তাকে মৃত্যুর কোল থেকে তুলে নিয়ে আসো
জীবনের প্রারম্ভে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here